পিনাক-৬ লঞ্চ উদ্ধারে টানা সাত দিনের অভিযান কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। পদ্মায় লঞ্চডুবির পর থেকে গতকাল পর্যন্ত ১৭টি অনুসন্ধান ও উদ্ধার জাহাজ এবং ৭৫০ কর্মীর চেষ্টা সফল হয়নি। সন্ধান পাওয়া যায়নি এবং উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি লঞ্চ পিনাক-৬। ৪ আগস্ট পদ্মার লৌহজং চ্যানেলে লঞ্চটি প্রায় তিনশ’ যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। লঞ্চডুবির দিন থেকেই চলছে উদ্ধার অভিযান। শনিবার অভিযানের এক পর্যায়ে পদ্মার গভীরে সাইড স্ক্যান সোনার ইমেজে
লঞ্চ জাতীয় ধাবত বস্তুর অস্তিত্ব পাওয়ার পর লঞ্চ উদ্ধার আশার আলো দেখা দিয়েছিল। কিন্তু রোববার সেটিও ফিকে হয়ে গেছে। এ অবস্থায় উদ্ধার তৎপরতা কার্যত পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাণ্ডারি-২ ও জরিপ-১০ নামের জাহাজ দুটি উদ্ধারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য বিআইডব্লিউটিএ’র রুস্তম ও নির্ভীক স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। এছাড়া অন্য জাহাজগুলোর অভিযান পরিত্যক্ত ঘোষণা দিয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক বলছেন, উদ্ধার অভিযান পরিত্যক্ত নয়। তারা এর পরিধি সীমিত করে এনেছেন। প্রশাসনের ব্যর্থতায় লৌহজংয়ের কয়েকজন উদ্যমী যুবক ‘চেইন কোপ্পা’ পদ্ধতিতে দড়িতে ইট বেঁধে লঞ্চটি খোঁজার চেষ্টা করছেন। এতে তারা লঞ্চটি খুঁজে পাওয়ার বিষয়েও আশাবাদী বলে জানিয়েছেন ওই দলের প্রধান মোঃ হাসান পাঠান। রোববার দুপুরে মাওয়াঘাটে পদ্মা রেস্ট হাউসে অভিযান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক সাইফুল হাসান বাদল। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, শনিবার দুপুরে যে ধাতব বস্তুটির ইমেজ ধরা পড়েছে তা পিনাক-৬ লঞ্চের কিনা তা শতভাগ নিশ্চিত হতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের জাহাজ কাণ্ডারি-২ ও জরিপ-১০ ওই ধাতব বস্তুটি উদ্ধারের চেষ্টা করে যাচ্ছে। ভেসে ওঠা মৃতদেহ উদ্ধার কাজ ও ধাতব বস্তুর ইমেজ যাচাই-বাছাই কাজ অব্যাহত রেখে অনুসন্ধান কাজ সীমিত পরিসরে করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, তল্লাশি কার্যক্রম বন্ধ রাখলেও নৌবাহিনী, বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল মাওয়াতেই অবস্থান করবে। ধাতব বস্তুটি যদি পিনাক-৬ হয়ে থাকে তাহলে তা উদ্ধার করতে ডুবুরির প্রয়োজন হবে। এছাড়া উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম ও নির্ভীক মাওয়ায় অবস্থান করবে। অন্য সব জাহাজ চলে যাবে। বর্তমানে নদীতে সে াতের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬ নটিক্যাল মাইলের বেশি। সাধারণত এক থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল গতিবেগের সে াতে ডুবুরিরা পানিতে নেমে সফলতা পান। কিন্তু সে াত বেশি থাকায় ডুবুরিরা সফল হতে পারছেন না। ওই সময় নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন নজরুল ইসলাম, কাণ্ডারি-২ এর কমান্ডার ও চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান হাইড্রোগ্রাফার মঞ্জুরুল করিম চৌধুরীসহ সমন্বিত উদ্ধারকারী দলের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, নৌবাহিনী, বিআইডব্লিউটিএসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা মাওয়া ত্যাগ করেন। বৈঠক শেষে এক সপ্তাহ ধরে উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযানের সমন্বয়ক ক্যাপ্টেন নজরুল মাওয়া ত্যাগের আগে যুগান্তরকে বলেন, উদ্ধার অভিযান গুটিয়ে নেয়ায় তিনি চলে যাচ্ছেন। কাণ্ডারি-২ জাহাজের কমান্ডার মঞ্জুরুল করিম চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, রোববার সকাল ৮টা থেকে ৪ ঘণ্টা সময় ধরে তারা অ্যাংকর বেঁধে চেষ্টা চালান। তারা রাতে আবার অ্যাঙ্কর দিয়ে ওই ধাতব বস্তুটি তোলার চেষ্টা করবেন। কিন্তু বারবারই অ্যাংকর ছুটে আসায় তারা সফল হতে পারছেন না। কাণ্ডারি জাহাজের একজন হাইড্রোগ্রাফার বলেন, মাওয়াঘাট থেকে এক কিলোমিটার ভাটিতে ওই ধাতব বস্তুটির অবস্থান ২৩ ডিগ্রি ২৭ উত্তর অক্ষাংশ ও ৯০ ডিগ্রি ১৬ দ্রাঘিমাংশ। ওই স্থানে সে াতের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬ নটিক্যাল মাইল বা ১১ দশমিক ২৬২ কিলোমিটারের কিছু বেশি। গভীরতা প্রায় ২০ মিটার। পূর্ণিমা এবং সুপার মুনজনিত কারণে সে াত বাড়বে কিনা এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাধারণ যেসব নদীতে জোয়ার-ভাটা হয় সেখানে পূর্ণিমা ও সুপার মুনের সময়ে জোয়ার-ভাটা বাড়ে। এখানেও পানির উচ্চতা কিছুটা বাড়বে। মেঘনার নিচু অংশে জোয়ার বেশি হলে এই এলাকায় সে াত কিছুটা কম হওয়ার কথা। ১৭ জাহাজেও সফলতা মেলেনি : নৌবাহিনী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ছোট-বড় ১৭টি জাহাজ ও এক ডজনের বেশি স্পিডবোট প্রায় ৭৫০ জন উদ্ধারকর্মী কাজ করেন। তারা আধুনিক প্রযুক্তি ও সনাতন পদ্ধতি ব্যবহার করেন। কিন্তু কিছুতেই সফলতা পাননি। শনিবার বিকালে বন্দর কর্তৃপক্ষের কাণ্ডারি-২ জাহাজের সাইড স্ক্যান সোনার মেশিনে লঞ্চজাতীয় একটি ধাতব বস্তুর অস্তিত্ব ধরা পড়ে। কিন্তু সেটিও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। নৌবাহিনীর উদ্ধার দলের ক্যাপ্টেন নজরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, সাববটম প্রোফাইল, সাইড স্ক্যানার, সোনারইকো সাউন্ডার, ইকোগ্রাফি প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন। পাশাপাশি বিআইডব্লিউটিএর ৩টি, নৌবাহিনীর ২টি ও বন্দর কর্তৃপক্ষের দুই সাইড স্ক্যানার ও সাববটম প্রোফাইল দিয়ে লঞ্চটি খুঁজছেন পাশাপাশি সনাতন পদ্ধতি বা কনভেনশনাল মেথড প্রয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু সাফল্য আসেনি। তিনি আরও জানান, তারা অত্যাধুনিক রিমোট অপারেটর ভেহিক্যাল (আরওভি) নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ঘোলা পানির কারণে সেটি ব্যবহার করা যায়নি। স্থানীয় সূত্র জানায়, মোট ১৭টি জাহাজ উদ্ধার ও অনুসন্ধান কাজে নিয়োজিত করা হয়। এর মধ্যে সোমবার থেকে কাজ করছে বিআইডব্লিউটিএর ৯টি জাহাজ। সেগুলো হল- রুস্তম, নির্ভীক, সন্ধানী, তিস্তা, টাগবোট ৮-৩৯৭, আইটি-৩৯৪, ব-দ্বীপ, তুরাগ। এছাড়া নৌবাহিনীর ২টি জাহাজ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের জরিপ-১০ ও কাণ্ডারি-২ নামে ২টি জাহাজ, কোস্টগার্ডের ১, ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিশাসক, অগ্নিবিনাশ ও রেসকিউ-২ নামে তিনটি ছোট-বড় জাহাজ উদ্ধারে কাজ করে। রোববারের পর বিআইডব্লিউটিএর রুস্তম ও নির্ভীক এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাণ্ডারি-২ ও জরিপ-১০ নামের মাওয়া অবস্থান করছে। অন্য জাহাজগুলো সরিয়ে নেয়া হয়েছে। চেইন কপ্পা পদ্ধতির উদ্ধার কাজ : মাওয়াঘাটে লৌহজং এলাকার কয়েকজন যুবক নিজ উদ্যোগে দড়িতে ইট বেঁধে রোববার সকাল থেকে স্থানীয়ভাবে ‘চেইন কপ্পা’ নামে পরিচিত পদ্ধতিতে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছেন। স্থানীয়ভাবে কেউ কেউ এই পদ্ধতিকে ‘টোটকা পদ্ধতি’ও বলেন। দড়িতে কয়েক গজ পরপর ইট বেঁধে সেটি ফেলা হয় নদীতে। বড় জাল ফেলার মতো ওই দড়ি টেনে প্যাঁচ লাগানোর চেষ্টা করেন। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাওয়াঘাটের কান্দিপাড়া রোডের মেঘনা চেইন কপ্পা অ্যান্ড সাইকেল মার্টের প্রোপ্রাইটর মোঃ হাসান পাঠান। তার সঙ্গে রোমেল, কামাল, জামাল, স্বপন, রশীদ খান, মিঠু ও রফিকুলসহ ১৫ জন। হাসানের দাবি তারা তাদের দড়িতে ভারি কিছুর অস্তিত্ব পেয়েছেন। তারা ৫০ শতাংশ নিশ্চিত যে সেই ভারি বস্তুটি পিনাক-৬। তারা দুটি ট্রলার নিয়ে কাজ করছেন। দড়িতে ভারি বস্তু আটকানোর পর সেখানে ডুবুরি হাসান ও কামাল নামেন। কিন্তু তারা সেই পর্যন্ত যেতে পারেননি। হাসান পাঠানের দাবি তিনি ইতিপূর্বে ঘাটে পড়ে যাওয়া বাস, ট্রাক, ডুবে যাওয়া ট্রলার, লঞ্চ-ট্রলার, বলগেট, বালুর ট্রলার উদ্ধার করেছেন। এবারও সফল হওয়ার আশা করছেন। ক্ষোভে-দীর্ঘশ্বাসে বাড়ি ফেরা : সাত দিন আগে ডুবে যাওয়া পিনাক-৬ লঞ্চের নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের দেখা মেলিনি মাওয়াঘাটে। তাদের কয়েকজনের মোবাইল ফোনে কল দিলে তারা জানান, ‘আর কত। সাত দিন ধরে তারা মাওয়া, শিবচরে ঘুরে বেড়িয়েছেন লাশের সন্ধানে। কিন্তু পাননি। এখন আর লাশ পাওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই দীর্ঘশ্বাস নিয়েই বাড়ি ফিরে গেছেন অনেকেই। কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার পেড্ডা গ্রামের কামরুল ইসলাম জানান, তার আÍীয় শিমুল পারভীন ও ফাতেমা নিখোঁজ। সাত দিনেও লাশ না পাওয়ায় আশা ছেড়ে দিয়েছেন। শুধু হতাশা আর দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান, পরিবারের ৩ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এর মধ্যে খালাতো বোন মেরির লাশ পেয়েছেন শুক্রবার। ৭ দিন ধরে মাওয়া আর শিবচরে থেকে লাশ খুঁজে বেড়িয়েছেন। কিন্তু না পেয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ভাই এক সপ্তাহ হয়ে গেছে। এখন লাশ পেলেও বা কি করব। সরকার আমাদের লাশটাও একটু তাড়াতাড়ি খুঁজে দিতে পারেনি। নিখোঁজের আত্মীয়রা ক্ষতিপূরণও পাবেন না : যাদের লাশ শনাক্ত হচ্ছে তারা বিআইডব্লিউটিএর কাছ থেকে ১ লাখ ৫ হাজার ও জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে ২০ হাজার মোট এক লাখ ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন। কিন্তু যাদের লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি বা শনাক্ত হয়নি তাদের ক্ষেত্রে কি হবে। স্বজনহারা শোকাতুর এসব মানুষ সামান্য ক্ষতিপূরণ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সাইফুল হাসান বাদল জানান, নিখোঁজদের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত নেই। কারণ এতে অনেক ভুয়া ব্যক্তি তাদেও লোক মারা গেছে বলে ক্ষতিপূরণ নেয়ার চেষ্টা করবেন। কিন্তু যারা পরিচয়পত্র দিয়েছে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাদের পরিবারের সদস্য নিখোঁজ হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি নৌপরিবহনমন্ত্রীকে জানাবেন। তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটিই করা হবে। তবে কোনো নিখোঁজ ব্যক্তি ১২ বছর পর প্রমাণসহ ক্ষতিপূরণ দাবি করলে তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নিয়ম রয়েছে। ৬১ জন নিখোঁজ : নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনরা মোট ১৩৯ জনের নাম লেখান। তাদের মধ্যে ৪৭ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। রোববার বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ থেকে এক মহিলার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিচয় শনাক্ত ও হস্তান্তর হয়েছে ২৮ জনের। ডিএনএ নমুনা রেখে শিবচর পৌর কবরস্থানে ১৬ জনের লাশ দাফন করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের দেয়া ফোন নম্বরে ফোন করে নিশ্চিত হয়েছেন ৫০টি নাম ভুয়া লেখা হয়েছে। এ বিষয়ে লৌহজং থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন জানান, তারা প্রতিটি নম্বরে ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন। এর মধ্যে ৫০ জনের নাম লেখানো হয়েছে। যাদের জীবিত পাওয়া গেছে। রোববার বিকাল পর্যন্ত ২১ শিশুসহ ৬১ জন নিখোঁজের নাম চূড়ান্ত করেছেন। নিখোঁজরা হলেন- শিবচরের বন্দরখোলা গ্রামের মিলি (৭), দক্ষিণ কোবরার চরের মিরাজ (৮), গহরতলা গ্রামের ফাতেমা আক্তার (১৬), সন্ন্যাসীর চরের বিল্লাল (২৩), ফরহাদ (২৭), শিল্পী (২৫), ফাহিম (৯), আগ্রা পুকুর পাড় গ্রামের রাবেয়া (৮), উত্তর বাগারকান্দি গ্রামের শাহীনুর (১৭), কালকিনির মিদিখান গ্রামের ফরিদা পারভীন (৪৫), পশ্চিম কমলপুর গ্রামের তৃষা (২২), গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের সুলতান দিঘিরপাড়া গ্রামের পলি (২৮), তার মেয়ে মেঘলা (৭), বড়দিয়া গ্রামের মাকসুদা (২৮), তার ছেলে হানিফ (আড়াই বছর), আলীপুর গ্রামের তসলিমা (২৫), চরকান্দি গ্রামের সাদিয়া (৯), মানিকপুরের ফালানী (২০), কৃষ্ণপুর গ্রামের মিন্টু মোল্লা (২৬), গোবিন্দপুরের নিজাম (২০), বরিশালের উজিরপুরের ভরাকাটা গ্রামের মিজানুর (৪০), তার ছেলে ইমতিয়া (৯), গৌরনদীর বয়রাকান্দি গ্রামের অপর্ণা (২০), তৌহিদা (২), নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের জান্নাত (৬), ফতুল্লার আয়েশা (৩৪), সারা (১১), রোজিনা (১২), হালিমা (২০), তানজিমা (১৩), মাদারীপুর সদর থানার চিরাপইপাড়া গ্রামের কফিল উদ্দিন (৭০), আলী আকবর (৩৮), ফরিদপুরের ভাঙার পল্লী বেড়া গ্রামের রেজাউল (২৮), শাহীনুর (২৩), আমিনাবাগ গ্রামের শেখ আলী (৩৫), হট্টা গ্রামের রোজিনা আক্তার (২৬), সরাইনকাজি গ্রামের রবিউল মাদবর (৪০), ভাঙাপাড়া গ্রামের আল আমিন (২৭), ফরিদপুরের সাতরশির সোবহান (৩৭), ইতি বেগম (৩০), ইভান মাদবর (৮), কুমিল্লার বরুড়া থানার পেড্ডা গ্রামের শিমুল পারভীন (৩৫), ফাতেমা (২০), ঢাকার মগবাজার নয়াটোলা আমবাগানের আফরোজা (১৭), গাজীপুরের কাপাসিয়ার মিম আক্তার (১৪), ঢাকার মুগদা থানাধীন মান্ডা এলাকার শিল্পী আক্তার (২৫), ফরিদপুরের সদরপুরের আড়িয়ালখাঁ গ্রামের মাহবুবুর রহমান (৪২), নিজ গ্রামের আজিজুল হক (২৮), রূপালী বেগম (২১), আরজু (৭), নগরকান্দা উপজেলার সরমাঝি গ্রামের স্বপ্না বেগম (২৭), আবদুল্লাহ (২০), হরিনারপুর গ্রামের উনেজা (১১), লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর থানার চরমার্টিন গ্রামের মিরা (৬০), মকবুল আহমেদ (৪৫), ঝালকাঠির শিলছড়ি গ্রামের শিরচুগ গ্রামের শারমীন (২৭) ও মেরাজ (৯)। উল্লেখ্য, ৪ আগস্ট সোমবার মাওয়ার লৌহজং চ্যানেল পদ্মায় প্রায় ৩০০ যাত্রী নিয়ে এমভি পিনাক-৬ নামের লঞ্চটি ডুবে যায়। এতে কমপক্ষে ৮৯ জন প্রাণহানি হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। লাশ উদ্ধার হয়েছে ৪৭টি। এর মধ্যে পরিচয় শনাক্ত ও হস্তান্তর হয়েছে ২৮ জনের। ১৬ জনকে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment