Thursday, December 25, 2014

সংঘর্ষে রণক্ষেত্র বকশিবাজার:যুগান্তর

ছাত্রলীগ ও পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে বুধবার বকশিবাজার, চানখাঁরপুল, নাজিমউদ্দিন রোড ও পলাশী এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এতে আহত হয়েছে বিএনপির অর্ধশত নেতাকর্মী। তাদের মধ্যে ২৮ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পুলিশ ২৪ জনকে আটক করেছে। বিক্ষুব্ধ বিএনপি কর্মীরা বকশিবাজার থেকে চানখাঁরপুল ও নাজিমউদ্দিন রোডে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এ সময় পুলিশ ৫০ রাউন্
ড কাঁদানে গ্যাস শেল, রায়টকার থেকে ব্যাপক রাবার বুলেট, শটগানের ফাঁকা গুলি ও জলকামান নিক্ষেপ করে। বিক্ষুব্ধ বিএনপি কর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে নেত্রকোনা-১ আসনের এমপি ছবি বিশ্বাসের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও তার ওপর হামলা করে। তার মাথা ফেটে গেছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গাড়িতে আগুন দেয়ার অভিযোগে মোবাইল কোর্ট ছাত্রদলের এক কর্মীকে দুই বছরের সাজা দিয়েছেন। হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় শাহবাগ ও চকবাজার থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। বুধবার পুরান ঢাকার বকশিবাজার এলাকার আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে দুটি দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হাজিরা দেয়াকে কেন্দ্র করে এ পরিস্থিতির সূত্রপাত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খালেদা জিয়ার হাজিরাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীরা আদালতের বাইরে অবস্থান নেয়। চকবাজার, শাহবাগ ও লালবাগ থানা পুলিশ ছাড়াও বকশিবাজার এলাকায় এপিবিএনসহ অতিরিক্ত পুলিশ, রায়টকার, জলকামান মোতায়েন করা হয় ভোর থেকে। নগরীর অন্যান্য এলাকায়ও নেয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা। সকাল থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফজলে রাব্বী হলের সামনের চৌরাস্তায় রাস্তা বন্ধ করে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকে। দুপুর ১২টা ৪ মিনিটে ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগের নেতৃত্বে ৬০-৬৫ জন নেতাকর্মীর একটি মিছিল পলাশী মোড় হয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দিক থেকে বকশিবাজারের দিকে এগোতে থাকে। মিছিলে মুখোশ ও হেলমেট পরা কয়েকজনের হাতে পিস্তলসহ বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে। অন্যদের হাতে ছিল বাঁশের বড় লাঠি, হকিস্টিক, রড, ইটসহ দেশীয় অস্ত্র। মিছিলটি বুয়েট ক্যাম্পাস পার হয়ে বকশিবাজার চৌরাস্তায় বিএনপির নেতাকর্মীদের জমায়েতের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করতে থাকে। বিএনপি ও ছাত্রদলের কর্মীরাও পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে চরম সংঘর্ষ বেধে যায়। প্রায় ২০ মিনিট ধরে সংঘর্ষ চলতে থাকলেও পুলিশ অ্যাকশনে যায়নি। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে বকশিবাজার, চানখাঁরপুল, নাজিমউদ্দিন রোড, বুয়েট ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকায়। এ সময় উভয় পক্ষ লঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় ১০ থেকে ১২টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ১২টা ২২ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারসন আদালতের উদ্দেশে বকশিবাজার চৌরাস্তা অতিক্রম করেন। বিএনপির কর্মীরা তার গাড়ির চারপাশে বলয় সৃষ্টি করে আদালতের দিকে এগিয়ে দেয়। একই সময় বঙ্গবাজারের মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের গোড়া থেকে বকশিবাজার পর্যন্ত রাস্তার কয়েকটি স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও বিক্ষোভ করতে থাকে বিএনপির কর্মীরা। এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করতে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ টিয়ার শেল, জলকামান ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশ ও ছাত্রলীগের সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে বিএনপি নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তারা এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। এ সময় বিএনপির কর্মীরা প্রায় ২৫-৩০টি গাড়ি এবং কয়েকটি দোকান ভাংচুর করে। প্রায় ৩ ঘণ্টা বকশিবাজার, নাজিমউদ্দিন রোড ও চানখাঁরপুল এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এতে আশপাশের সড়কগুলোতে ব্যাপক যানজট দেখা দেয়। বেলা পৌনে ২টায় সংঘর্ষ বন্ধের পর বঙ্গবাজার থেকে চানখাঁরপুল হয়ে বকশিবাজার, পলাশী, বকশিবাজার আলিয়া মাদ্রাসা, বকশিবাজার থেকে জগন্নাথ হল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনের সড়কে শুধু ইট, পোড়া টায়ারসহ হামলার ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের একটি অংশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগসহ হাসপাতালের ভেতরে অবস্থান নেয়। সেখানেও নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের ঢাকা মেডিকেল ইউনিট। এ হামলায় কয়েকজন আহত হন। বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল কর্মীরা গেটের বাইরে নেত্রকোনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাসের জাতীয় সংসদের স্টিকার লাগানো গাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বুয়েটের নির্মাণাধীন একটি ভবনের শ্রমিক আতিক হোসেন জানান, ১২টার আগে থেকেই কিছু যুবক পলাশী মোড়ে অবস্থান নেয়। তাদের কয়েকজনের কাপড় দিয়ে মুখ বাঁধা ও মাথায় হেলমেট পরা ছিল। বেশ কয়েকজনের হাতে পিস্তল দেখা গেছে। তারা নির্মাণাধীন ওই ভবন থেকে বাঁশের খুঁটি ও ইট নিয়ে মিছিলে হামলা করে। তাদেরকে গুলি ছুড়তেও দেখেছেন আতিক। তিনি আরও বলেন, পুলিশকেও ছাত্রলীগের সঙ্গে এক জোট হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে দেখা গেছে। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার যুগান্তরকে বলেন, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তাদের আটকে রেখে মারধর করেছে। অনেকের টাকা-পয়সা ও ঘড়ি-মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয়েছে। ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক আ. সাত্তার পাটোয়ারী বলেন, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) হাজিরাকে কেন্দ্র করে ড. ফজলে রাব্বী হলের সামনে আমাদের ওপর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা অতর্কিতে হামলা করেছে। হামলায় আহত মিরপুর থানা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ফিরোজ আহমেদ বলেন, আমরা নেত্রীর জন্য বসেছিলাম। ছাত্রলীগ অতর্কিতে আমাদের ওপর হামলা করে। লালবাগ জোনের উপপুলিশ কমিশনার মফিজ আহম্মেদ যুগান্তরকে জানান, কারা প্রথমে হামলা করেছে সেটি তদন্তের পর বলা যাবে। তবে পুলিশ কঠোরভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। প্রায় ৫০ রাউন্ড টিয়ার শেল, ২০ রাউন্ড শটগানের গুলি ও এপিসি থেকে কিছু ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়েছে। ছবি বিশ্বাসের গাড়িতে আগুন : হামলা চলাকালে গুরুতর আহত হয়েছেন সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাস। হামলাকারীরা তার ব্যবহৃত কালো রঙের নোহা ভক্সি গাড়ি (ঢাকা-মেট্রো-চ-১৫-৬১৯৯) পুড়িয়ে দিয়েছে। লাঠির আঘাতে ছবি বিশ্বাসের মাথা ও কানে গুরুতর জখম হয়েছে। তাকে হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের ডা. রাজিউল হকের তত্ত্ব¡াবধানে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মোজাম্মেল হক যুগান্তরকে জানান, ধাওয়া খেয়ে বিএনপির কিছু নেতাকর্মী হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে পড়ে। তারাই এমপির গাড়িতে হামলা চালিয়েছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী যুগান্তরের ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রতিনিধি সোহেল রহমান জানান, ছবি বিশ্বাস একজন অসুস্থ ব্যক্তিকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা জরুরি বিভাগের ফটকের সামনে তার গাড়িতে হামলা চালায়। এমপির গাড়িচালক মোহাম্মদ হাসনাইন জানান, গাড়িতে এমপিসহ ৮ জন ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশের পর গণ্ডগোল দেখে এমপি গাড়ি ঘুরিয়ে নিতে বলেন। কিন্তু ফটক দিয়ে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জাতীয় সংসদের স্টিকার দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ৩০/৪০ জন যুবক লাঠিসোটা নিয়ে গাড়িতে হামলা করে। এমপি ছবি বিশ্বাস গাড়ি থেকে নামামাত্র তাকেও বেধড়ক পেটানো হয়েছে। এরপর হামলাকারীরা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গাড়ির আগুন নেভান। ছবি বিশ্বাস বলেন, ‘আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আরেকজন মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলাম। এখন হামলার শিকার হয়ে নিজেকেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। তিনি কোনোভাবেই এই হামলা বা সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা : চকবাজার থানার ওসি আজিজুল হক জানান, এমপির গাড়িতে হামলার ঘটনায় পুলিশ ৬ জনকে আটক করেছেন। গাড়ি পোড়ানোর দায়ে আফজাল হোসেন (২২) নামের এক যুবককে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম যুগান্তরকে জানান, গাড়িতে আগুন দেয়ার অপরাধ স্বীকার করায় অভিযুক্ত আফজালকে দুই বছরের সাজা দেয়া হয়েছে। আফজালের বাবা ফার্নিচার ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জানান, তার ছেলে যাত্রাবাড়ীর দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তার ছেলে রাজনীতিতে জড়িত নয়। বন্ধুর সঙ্গে সে ঢাকা মেডিকেলে রোগী দেখতে গিয়েছিল। হামলায় আহত ২৮ জন হাসপাতালে : হামলায় আহত হয়ে ২৮ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের মধ্যে ২০ জনের নাম জানা গেছে। তারা হল- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কর্মী আবদুল জলিল, যুবদলের মহানগর কর্মী এমএন ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, পথচারি শহীদ, কবি নজরুল কলেজের ছাত্রদল কর্মী ইমরান হোসেন, আবদুস সাত্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল কর্মী তানজিল হাসান, সোহেল রানা, গোলাম রাশেদ, হাবীব, মিলন রায়, নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির ছাত্রদল কর্মী এমএম ইমরান খান, তিতুমীর কলেজের ছাত্রদল কর্মী কাওসার, ফিরোজ কবির, জাহির হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল কর্মী শামসুল আরেফীন, মিরপুর থানা ছাত্রদলের কর্মী ফিরোজ আহমেদ, ঢাকা কলেজের ছাত্রদল কর্মী আতিক ও খোকন। দুই থানায় আটক ২৪ : সংঘর্ষ চলাকালে ২৪ জনকে আটক করে পুলিশ। এদের মধ্যে শাহবাগ থানায় ১৮ জন ও চকবাজার থানায় ৬ জন। চকবাজার থানার ওসি আজিজুর রহমান যুগান্তরকে জানান, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দু’টি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শাহবাগ থানার ওসি তদন্ত হাবিল হোসেন জানান, এ ঘটনায় একাধিক মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে। আটককৃতদের ওইসব মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে। ঢাবিতে ছাত্রলীগের সশস্ত্র মহড়া : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার জানান, হামলার আগে ও পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সশস্ত্র মহড়া দেয় ছাত্রলীগ। বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার কাছে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে। অনেকের হাতে ছিল জিআই পাইপ, রড ও লাঠি। হামলা শেষে ক্যাম্পাসে ফাঁকা গুলি ছুড়ে উল্লাস প্রকাশ করে। ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৯টা থেকে অঘোষিতভাবে নেতাকর্মীদের মধুর ক্যান্টিনে জড়ো হওয়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হন ছাত্রলীগ সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ। মিছিলটি শহীদ মিনারের কাছাকাছি গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ শেষে বেলা ১টার দিকে রাজু ভাস্কর্যে আসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তারা বিএনপি ও ছাত্রদলবিরোধী স্লোগান দিতে থাকে। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগ সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি জয়দেবন নন্দী, জিসান মাহমুদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, হাসান তারেক, সাংগঠনিক সম্পাদক শিহাবুজ্জামান শিহাব, সমাজসেবা সম্পাদক কাজী এনায়েত, পরিবেশ সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগ, ক্রীড়া সম্পাদক আবিদ আল হাসান, ছাত্র বৃত্তিবিষয়ক সম্পাদক ইমতিয়াজ বুলবুল বাপ্পি, ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ প্রমুখ। সমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও ঢাবি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা রাজু ভাস্কর্য থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রসংলগ্ন ডাস-এ অবস্থান নেয়। এ সময় ছাত্রদল সন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে আটক করে তারা। পরে ছাত্রদল করে এমন প্রমাণ না পেয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। সড়ক দ্বীপেও অবস্থান নেয় নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশ। টিএসসিতে অবস্থান নেয় মহানগর ছাত্রলীগ। আড়াইটার দিকে তারা সবাই মধুর ক্যান্টিনে যায়। পরে বেলা ৩টার দিকে প্রত্যেকটি ইউনিটকে চলে যেতে বলা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছাত্রলীগ কর্মীরা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে জড়ো হয়। মিছিলের বেশিরভাগই ছিল সশস্ত্র। বেলা ২টা সাত মিনিটে টিএসসিতে থাকা মহানগর ছাত্রলীগের অবস্থানস্থল থেকে চার রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি আনিসুর রহমান আনিস এ গুলি ছোড়েন। তার সঙ্গে থাকা কয়েকজনের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। জানতে চাইলে ছাত্রলীগ সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ যুগান্তরকে বলেন, ছাত্রদল সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন মহল্লা থেকে লোক নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে জড়ো হন। তারা ঢাকা মেডিকেলে ফজলে রাব্বি হল, ঢাবির শহীদুল্লাহ হল, একুশে হল, সুফিয়া কামাল হলে হামলা চালায়। শুনে আমরা সেখানে যাই। পরে তারা আমাদের ওপর হামলা করলে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। তিনি আরও বলেন, আমরা সংঘাত চাই না। তবে তারেক জিয়া ক্ষমা না চাইলে গাজীপুরে সমাবেশ প্রতিরোধের বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্তে আমরা অনড়। ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান যুগান্তরকে বলেন, আমরা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার স্বার্থে সমবেত হয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ-র‌্যাবের ছত্রচ্ছায়ায় ছাত্রলীগ আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে হামলা চালায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এম আমজাদ আলী যুগান্তরকে বলেন, ক্যাম্পাসে কোনোভাবেই অস্ত্র কাম্য নয়। তবে সংঘর্ষে যাদের কাছে অস্ত্র ছিল বলে শুনেছি তারা কেউ আমাদের ক্যাম্পাসের না। যদি কেউ ক্যাম্পাসে অস্ত্র নিয়ে আসে তাদের ব্যাপারে আমরা সতর্ক থাকব। পুলিশকে বলে দেয়া আছে, কারও কাছে অস্ত্র পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেফতার করার জন্য।  

No comments:

Post a Comment