আবদুল লতিফসহ ধর্মদ্রোহীদের সর্বোচ্চ শাস্তির আইন প্রণয়নের দাবিতে ইসলামী আন্দোলনের দুই দিনব্যাপী ঢাকা-রংপুর রোডমার্চ শেষ হয়েছে। গতকাল দ্বিতীয় দিনে প্রথমে সকাল ৯টায় বগুড়া আলতাফুন্নেসা মাঠে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে রোডমার্চ কাফেলা রংপুরের উদ্দেশে রওনা দেয় এবং পথে ১০টায় গোবিন্দগঞ্জ, সাড়ে ১১টায় পলাশবাড়ী, ১২টায় পীরগঞ্জ, ১টায় মিঠাপুকুরে পথসভা এবং বেলা ২টায় রংপুর ঈদগাহ ময়দানে সমাপনী মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মহাসমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, মুরতাদদের শাস্তির দাবি কোনো রাজনৈতিক দাবি নয়। এ দাবি সব মুসলমান ও সব ধর্মের মানুষের। বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশ এমন কি অমুসলিম দেশেও ধর্মদ্রোহীদের শাস্তির বিধান রয়েছে। নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে গুরুত্ব না দিলে আমরা বাধ্য হয়েই কঠোর কর্মসূচি দেবো। যেকোনো পরিস্থিতির জন্য বর্তমান সরকারকেই দায়ভার নিতে হবে। রংপুর মহানগর সভাপতি মাওলানা খায়রুল ইসলামের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা দেন মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, দলের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম ও সাংগঠনিক সম্পদক প্রকৌশলী আশরাফুল আলম। উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে রোডমার্চের এ কাফেলা যাত্রা শুরু করে। কর্মসূচি : আজ বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী থানায় থানায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা মহানগরী আগামীকাল শুক্রবার ৪৯ থানায় মিছিল বের করবে। রংপুর অফিস জানায়, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর রেজাউল করিম বলেছেন, বর্তমান সরকার নাস্তিক লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে লোক দেখানো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কিন্তু আমরা চাই নাস্তিকদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির আইন করে তাদের মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। এ ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত আমরা আর ঘরে ফিরে যাবো না। গতকাল সন্ধ্যায় রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে রোডমার্চের সমাপনী বিশাল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রংপুর মহানগর সভাপতি মাওলানা খায়রুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন নায়েবে আমির আব্দুল হক আজাদ, মহাসচিব অধ্য ইউনুছ আহাম্মেদসহ অন্য নেতারা। এর আগে দুপুরে ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রোডমার্চে অংশ নেয়া প্রায় ৩০০ গাড়িবহর রংপুরে এসে পৌঁছায়। বগুড়া অফিস জানায়, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মাওলানা মুফতি রেজাউল করিম বলেছেন, নাস্তিক ও মুরতাদদের বিরুদ্ধে কথা বলা কোনো ব্যক্তি বা দলের একার দায়িত্ব নয়, এটি মুসলমানের দায়িত্ব। আওয়ামী লীগ নেতা ও মন্ত্রী হিসেবে হজ ও তাবলিগ জামাত সম্পর্কে যে কথা বলেছেন, তা ইসলামের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রেরই অংশ। তাই এসব ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। সবাইকে রাজপথে প্রতিবাদ করতে হবে। দল-মত নির্বিশেষে লতিফ সিদ্দিকীসহ সব নাস্তিক-মুরতাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। তিনি গতকাল বগুড়া শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে এক জনসমাবেশে এ কথা বলেন। সংগঠনের বগুড়া জেলা সভাপতি মাওলানা আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেনÑ মহাসচিব হাফেজ ইউনুছ আহমেদ, নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল হক, পীর সাহেবের রাজনৈতিক উপদেষ্টা আশরাফ আলী আকন্দ, মোলামগাড়ি পীর শামছুল আলম, যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান প্রমুখ। লতিফ সিদ্দিকীর সর্বোচ্চ শাস্তি ও ইসলামবিরোধী আইন প্রণয়নের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন ঢাকা থেকে রংপুর পর্যন্ত রোডমার্চ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বগুড়ায় যাত্রাবিরতি শেষে এ জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিঠাপুকুর (রংপুর) সংবাদদাতা জানান, চরমোনাই পীর রেজাউল করিম বলেছেন, নাস্তিক-মুরতাদদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না। নাস্তিকদের ফাঁসির ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। গতকাল দুপুরে ঢাকা থেকে রংপুরের রোডমার্চে যোগদানের উদ্দেশে যাওয়ার পথে মিঠাপুকুরে এক পথসভা তিনি সংপ্তি বক্তব্যে এ কথা বলেন। মিঠাপুকুর শাপলা মার্কেট চত্বরে পথসভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন মিঠাপুকুর শাখার সভাপতি আলহাজ আব্দুল গণি শাহ।
No comments:
Post a Comment