ইসরায়েলি দখলদারি অবসানের জন্য ফিলিস্তিনের আলোচিত প্রস্তাবটি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে নাকচ হয়ে গেছে। গত মঙ্গলবার এ নিয়ে ভোটাভুটি হয়। ফিলিস্তিনিদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েল ব্যাপারটিকে নিজেদের বিজয় হিসেবে স্বাগত জানিয়ে গতকাল বুধবার ‘সন্তোষ’ প্রকাশ করেছে। খবর এএফপির। নাকচ হওয়া প্রস্তাবটিতে এক বছরের মধ্যে ফিলিস্তিনের সঙ্গে চূড়ান্ত শান্তি চুক্তি করা এবং ২০১
৭ সালের শেষ নাগাদ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নিতে বলা হয়েছিল। ফিলিস্তিনের পক্ষে জর্ডান ওই প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল। চীন, ফ্রান্স, রাশিয়াসহ নিরাপত্তা পরিষদের আটটি সদস্যদেশ প্রস্তাবের পক্ষে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া বিপক্ষে ভোট দেয়। যুক্তরাজ্যসহ পাঁচটি দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে। প্রস্তাবটি পাস হওয়ার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে কমপক্ষে নয়টির সমর্থন প্রয়োজন ছিল। তবে ওই সমর্থন পেলেও যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করে তা বানচাল করে দিতে পারত। জাতিসংঘে এ প্রত্যাখ্যানের প্রতিক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) যোগ দেওয়ার জন্য গতকালই রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করার কথা। নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবটি ব্যর্থ হলে আইসিসিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করবে বলে ফিলিস্তিন আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। আইসিসির সদস্য হলে ফিলিস্তিন অধিকৃত ভূখণ্ডে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে। তবে ইসরায়েল মন্তব্য করেছে, আইসিসিতে গেলে ফিলিস্তিনিরাও বিচারের ঝুঁকিতে পড়বে। প্রস্তাবটির ব্যর্থতার জন্য ফিলিস্তিনি দূত রিয়াদ মনসুর ভোটের পর নিরাপত্তা পরিষদকে দায়ী করেন। আর ‘ব্যর্থতার’ জন্য প্রেসিডেন্ট আব্বাসের নিন্দা করে কট্টরপন্থী সংগঠন হামাস তাঁকে অঙ্গীকারমতো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। ভোটের পর ইসরায়েল বলেছে, জাতিসংঘে ‘একতরফা’ পদক্ষেপের বদলে ফিলিস্তিনিদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমেই কেবল নিজস্ব রাষ্ট্র অর্জনের পথে এগিয়ে যেতে হবে। রাশিয়া দুঃখ প্রকাশ করে মন্তব্য করেছে, কৌশলগত ভুলের কারণেই প্রস্তাবটি নাকচ হয়েছে। জাতিসংঘে মার্কিন দূত সামান্থা পাওয়ার বলেন, এটা কেবল এক পক্ষের উদ্বেগ তুলে ধরেছে। তবে তিনি ইসরায়েলেরও সমালোচনা করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলেছে, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের যে জরুরি ভিত্তিতে শান্তি আলোচনা আবার শুরু করা প্রয়োজন, মঙ্গলবারের ভোটের ফল সে দাবিই জোরালো করেছে।
No comments:
Post a Comment