গ্রেপ্তার ছয় আসামিকেই এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন (ফাইনাল রিপোর্ট) দাখিল করেন। কিন্তু ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে সম্মতি না দিয়ে অধিকতর তদন্ত করার জন্য র্যাব সদর দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে র্যাবের নিয়ন্ত্রণাধীন আধুনিক পরীক্ষাগারে আটক আলামতের পুনরায় রাসায়নিক পরীক্ষার নির্দেশ দেন। তবে এরই মধ্যে মামলায় গ্রেপ্তার আসামিরা হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে গেছে। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ২৩ জানুয়ারি দুপুরে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) চোরাচালান ও জালিয়াতি প্রতিরোধ টিমের সদস্যরা সহকারী পুলিশ কমিশনার মঞ্জুর মোরশেদের নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করার সময় গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারেন, খিলক্ষেত এলাকার নিকুঞ্জ-২-এর ৫ নম্বর রোডের মাথায় সীমা ফার্মেসিতে মাদক কেনাবেচা হচ্ছে। ডিবির দল সেখানে পৌঁছে ফার্মেসির মধ্যে ঢুকে দেখতে পায়, একটি কক্ষে ছয়জন লোক আলাপ-আলোচনা করছে। ডিবি পরিচয় পেয়ে দুজন দুটি কার্টন লুকানোর চেষ্টা করে। পরে কার্টন দুটি ডিবি পুলিশ আটক করে খুলে ভেতরে বিশেষ ধরনের প্লাস্টিক প্যাকেটে সাদা পাউডার দানা দেখতে পায়, যার ওজন ছয় পাউন্ড। এই পাউডার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে ছয় আসামিই স্বীকার করে, এগুলো মাদকদ্রব্য কোকেন। এই ছয় পাউন্ড কোকেনের আনুমানিক মূল্য সাড়ে চার কোটি টাকা। পরে ছয়জনকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিরা হলো মো. কামরুল আলম, তাহের মণ্ডল ওরফে জবা, মোশাররফ হোসেন, কাজী খলিলুল্লাহ মাহমুদ, মামুন হাওলাদার ও মোশাররফ হোসেন ওরফে রানা। আটক ব্যক্তিরা পুলিশকে জানায়, মাদক সম্রাট হারুন অর রশীদ বিদেশ থেকে এসব কোকেন ও নাম না জানা মাদকদ্রব্য এনে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় বেচাকেনা করে আসছে। তারাও ওই কাজে সহযোগিতা করে থাকে। ডিবির দলের সদস্য এসআই মো. শহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে জব্দ তালিকা তৈরি করেন। পরে খিলক্ষেত থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯(১)-এর ১(খ), ২১ ও ২৫ ধারায় সাত আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আসামি মাদক সম্রাট হারুন অর রশীদকেও গ্রেপ্তার করেন। মামলা দায়েরের পর ঘটনাটি তদন্ত করেন ডিবির চোরাচালান ও জালিয়াতি প্রতিরোধ টিমের সদস্য শাহজাহান মিয়া। তিনি আসামিদের কয়েক দফায় রিমান্ডে নেন। প্রতিটি রিমান্ড প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আসামিরা আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সদস্য। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। কোকেন ব্যবসা সম্পর্কেও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে আসামিরা। এদিকে উদ্ধার করা কোকেন থেকে কিছু আলামত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠান তদন্ত কর্মকর্তা। কোকেন নয়, মাদকদ্রব্যও নয় : মামলার তদন্তভার নেওয়ার পর তদন্ত কর্মকর্তা আটক কোকেন থেকে নমুনা সংগ্রহ করে গত ৯ ফেব্রুয়ারি তা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাসায়নিক পরীক্ষাগারে প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক বরাবর পাঠান। নমুনা পরীক্ষা করেন অধিদপ্তরের সহকারী রাসায়নিক পরীক্ষক মো. আবু হাসান। ১৯ মার্চ তিনি একটি প্রতিবেদন দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তাকে জানান, পরীক্ষাকৃত আলামত বর্ণহীন দানাদার পদার্থ, কোকেন নয়। এতে কোকেন বা অন্য কোনো মাদক পাওয়া যায়নি। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা আদালতের অনুমতি নিয়ে আবারও একই পরীক্ষাগারে নমুনা পাঠান। একই ফলাফল জানিয়ে দেয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। আটক পাউডার কী, তাও বলা হয়নি : তদন্ত কর্মকর্তা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আসামিদের অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করলে তার ওপর শুনানি গ্রহণ করে গত ২ জুন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তসরুজ্জামান অধিকতর তদন্ত করতে র্যাবকে নির্দেশ দেন। আদেশে তিনি বলেন, ‘রাসায়নিক পরীক্ষক এই মামলার আলামতের মধ্যে কোকেন বা মাদক নেই উল্লেখ করেছেন। কিন্তু আটক সাদা পাউডার কী ধরনের পদার্থ, তার উল্লেখ নেই। তদন্ত কর্মকর্তার চূড়ান্ত প্রতিবেদনেও এটা স্পষ্ট নয়। প্রকৃতপক্ষে মামলা নিষ্পত্তির স্বার্থে এটা স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। এ কারণে র্যাবকে নির্দেশ দেওয়া হলো এবং র্যাবের আধুনিক পরীক্ষাগারে তা পরীক্ষা করা হোক।’ টাকার বিনিময়ে হয়ে যায় পাউডার! : এর আগেও পুলিশের হাতে আটক হেরোইন বা কোকেন বিরাট অঙ্কের টাকার লেনদেনের মাধ্যমে সাদা পাউডার হয়ে গেছে বলে শোনা গেছে। এই ঘটনার আগে বিমানবন্দরে আটক ২৬ কেজি হেরোইন মামলার ঘটনাও প্রায় একই রকম হয়েছে। ওই ২৬ কেজি হেরোইন নিয়ে পত্রপত্রিকায় ব্যাপক আলোচনা হলেও রাসায়নিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, সেগুলো হেরোইন নয়, যদিও প্রাথমিকভাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সেগুলো হেরোইন বলেই শনাক্ত করেছিলেন। জানা গেছে, ওই মামলায় আটক ২৬ কেজি ‘হেরোইন সদৃশ বস্তু’ বলে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু মামলা দুর্বল হওয়ায় আসামিরা ওই মামলা থেকে রেহাই পেয়ে যাবে বলেই আইনজীবীরা মনে করেন। আইনজীবীরা বলেন, এভাবে টাকার বিনিময়ে রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদনে মাদকের উপস্থিতি ধরা না পড়ার ঘটনা অনেক ঘটেছে। ঢাকার আদালতে ফৌজদারি মামলা পরিচালনাকারী অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান তপন কালের কণ্ঠকে বলেন, মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেনের ফলে পরীক্ষায় ‘মাদকের উপস্থিতি নেই’ হতেই পারে। ‘এটা কি বিশ্বাসযোগ্য?’ : ছয় পাউন্ড কোকেন আটকের ঘটনায় আসামিরাও পুলিশের কাছে সেগুলো কোকেন বলে স্বীকার করার পর তা রাসায়নিক পরীক্ষায় কোকেন না হওয়া রীতিমতো বিস্ময়কর বলে মনে করেন আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান বলেন, আসামিরা কি তাহলে নিজেরা মামলায় জড়াতে সাদা পাউডারকে কোকেন বলেছে? এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? তিনি বলেন, মামলা থেকে আসামিদের বাঁচানোর জন্যই এমন পরীক্ষার প্রতিবেদন দেওয়া হতে পারে। আসামিরা জামিনে মুক্ত : তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করার পর এ মামলায় গ্রেপ্তার আসামি মামুন হাওলাদার, হারুন অর রশীদ, কামরুল আলম, মোশাররফ হোসেন ও কাজী খলিলুল্লাহ মাহমুদ হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে গেছে বলে মামলার নথি থেকে জানা যায়।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Friday, August 8, 2014
আটক কোকেন পরীক্ষাগারে হয়ে গেল 'সাদা পাউডার':কালের কন্ঠ
গ্রেপ্তার ছয় আসামিকেই এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন (ফাইনাল রিপোর্ট) দাখিল করেন। কিন্তু ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে সম্মতি না দিয়ে অধিকতর তদন্ত করার জন্য র্যাব সদর দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে র্যাবের নিয়ন্ত্রণাধীন আধুনিক পরীক্ষাগারে আটক আলামতের পুনরায় রাসায়নিক পরীক্ষার নির্দেশ দেন। তবে এরই মধ্যে মামলায় গ্রেপ্তার আসামিরা হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে গেছে। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ২৩ জানুয়ারি দুপুরে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) চোরাচালান ও জালিয়াতি প্রতিরোধ টিমের সদস্যরা সহকারী পুলিশ কমিশনার মঞ্জুর মোরশেদের নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করার সময় গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারেন, খিলক্ষেত এলাকার নিকুঞ্জ-২-এর ৫ নম্বর রোডের মাথায় সীমা ফার্মেসিতে মাদক কেনাবেচা হচ্ছে। ডিবির দল সেখানে পৌঁছে ফার্মেসির মধ্যে ঢুকে দেখতে পায়, একটি কক্ষে ছয়জন লোক আলাপ-আলোচনা করছে। ডিবি পরিচয় পেয়ে দুজন দুটি কার্টন লুকানোর চেষ্টা করে। পরে কার্টন দুটি ডিবি পুলিশ আটক করে খুলে ভেতরে বিশেষ ধরনের প্লাস্টিক প্যাকেটে সাদা পাউডার দানা দেখতে পায়, যার ওজন ছয় পাউন্ড। এই পাউডার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে ছয় আসামিই স্বীকার করে, এগুলো মাদকদ্রব্য কোকেন। এই ছয় পাউন্ড কোকেনের আনুমানিক মূল্য সাড়ে চার কোটি টাকা। পরে ছয়জনকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিরা হলো মো. কামরুল আলম, তাহের মণ্ডল ওরফে জবা, মোশাররফ হোসেন, কাজী খলিলুল্লাহ মাহমুদ, মামুন হাওলাদার ও মোশাররফ হোসেন ওরফে রানা। আটক ব্যক্তিরা পুলিশকে জানায়, মাদক সম্রাট হারুন অর রশীদ বিদেশ থেকে এসব কোকেন ও নাম না জানা মাদকদ্রব্য এনে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় বেচাকেনা করে আসছে। তারাও ওই কাজে সহযোগিতা করে থাকে। ডিবির দলের সদস্য এসআই মো. শহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে জব্দ তালিকা তৈরি করেন। পরে খিলক্ষেত থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯(১)-এর ১(খ), ২১ ও ২৫ ধারায় সাত আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আসামি মাদক সম্রাট হারুন অর রশীদকেও গ্রেপ্তার করেন। মামলা দায়েরের পর ঘটনাটি তদন্ত করেন ডিবির চোরাচালান ও জালিয়াতি প্রতিরোধ টিমের সদস্য শাহজাহান মিয়া। তিনি আসামিদের কয়েক দফায় রিমান্ডে নেন। প্রতিটি রিমান্ড প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আসামিরা আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সদস্য। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। কোকেন ব্যবসা সম্পর্কেও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে আসামিরা। এদিকে উদ্ধার করা কোকেন থেকে কিছু আলামত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠান তদন্ত কর্মকর্তা। কোকেন নয়, মাদকদ্রব্যও নয় : মামলার তদন্তভার নেওয়ার পর তদন্ত কর্মকর্তা আটক কোকেন থেকে নমুনা সংগ্রহ করে গত ৯ ফেব্রুয়ারি তা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাসায়নিক পরীক্ষাগারে প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক বরাবর পাঠান। নমুনা পরীক্ষা করেন অধিদপ্তরের সহকারী রাসায়নিক পরীক্ষক মো. আবু হাসান। ১৯ মার্চ তিনি একটি প্রতিবেদন দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তাকে জানান, পরীক্ষাকৃত আলামত বর্ণহীন দানাদার পদার্থ, কোকেন নয়। এতে কোকেন বা অন্য কোনো মাদক পাওয়া যায়নি। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা আদালতের অনুমতি নিয়ে আবারও একই পরীক্ষাগারে নমুনা পাঠান। একই ফলাফল জানিয়ে দেয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। আটক পাউডার কী, তাও বলা হয়নি : তদন্ত কর্মকর্তা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আসামিদের অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করলে তার ওপর শুনানি গ্রহণ করে গত ২ জুন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তসরুজ্জামান অধিকতর তদন্ত করতে র্যাবকে নির্দেশ দেন। আদেশে তিনি বলেন, ‘রাসায়নিক পরীক্ষক এই মামলার আলামতের মধ্যে কোকেন বা মাদক নেই উল্লেখ করেছেন। কিন্তু আটক সাদা পাউডার কী ধরনের পদার্থ, তার উল্লেখ নেই। তদন্ত কর্মকর্তার চূড়ান্ত প্রতিবেদনেও এটা স্পষ্ট নয়। প্রকৃতপক্ষে মামলা নিষ্পত্তির স্বার্থে এটা স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। এ কারণে র্যাবকে নির্দেশ দেওয়া হলো এবং র্যাবের আধুনিক পরীক্ষাগারে তা পরীক্ষা করা হোক।’ টাকার বিনিময়ে হয়ে যায় পাউডার! : এর আগেও পুলিশের হাতে আটক হেরোইন বা কোকেন বিরাট অঙ্কের টাকার লেনদেনের মাধ্যমে সাদা পাউডার হয়ে গেছে বলে শোনা গেছে। এই ঘটনার আগে বিমানবন্দরে আটক ২৬ কেজি হেরোইন মামলার ঘটনাও প্রায় একই রকম হয়েছে। ওই ২৬ কেজি হেরোইন নিয়ে পত্রপত্রিকায় ব্যাপক আলোচনা হলেও রাসায়নিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, সেগুলো হেরোইন নয়, যদিও প্রাথমিকভাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সেগুলো হেরোইন বলেই শনাক্ত করেছিলেন। জানা গেছে, ওই মামলায় আটক ২৬ কেজি ‘হেরোইন সদৃশ বস্তু’ বলে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু মামলা দুর্বল হওয়ায় আসামিরা ওই মামলা থেকে রেহাই পেয়ে যাবে বলেই আইনজীবীরা মনে করেন। আইনজীবীরা বলেন, এভাবে টাকার বিনিময়ে রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদনে মাদকের উপস্থিতি ধরা না পড়ার ঘটনা অনেক ঘটেছে। ঢাকার আদালতে ফৌজদারি মামলা পরিচালনাকারী অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান তপন কালের কণ্ঠকে বলেন, মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেনের ফলে পরীক্ষায় ‘মাদকের উপস্থিতি নেই’ হতেই পারে। ‘এটা কি বিশ্বাসযোগ্য?’ : ছয় পাউন্ড কোকেন আটকের ঘটনায় আসামিরাও পুলিশের কাছে সেগুলো কোকেন বলে স্বীকার করার পর তা রাসায়নিক পরীক্ষায় কোকেন না হওয়া রীতিমতো বিস্ময়কর বলে মনে করেন আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান বলেন, আসামিরা কি তাহলে নিজেরা মামলায় জড়াতে সাদা পাউডারকে কোকেন বলেছে? এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? তিনি বলেন, মামলা থেকে আসামিদের বাঁচানোর জন্যই এমন পরীক্ষার প্রতিবেদন দেওয়া হতে পারে। আসামিরা জামিনে মুক্ত : তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করার পর এ মামলায় গ্রেপ্তার আসামি মামুন হাওলাদার, হারুন অর রশীদ, কামরুল আলম, মোশাররফ হোসেন ও কাজী খলিলুল্লাহ মাহমুদ হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে গেছে বলে মামলার নথি থেকে জানা যায়।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment