Monday, August 25, 2014

ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষ, ককটেল ও পেট্রলবোমা উদ্ধার:প্রথম অালো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল রোববার সন্ধ্যা ছয়টায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মুখোমুখি সংঘর্ষে গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকায় থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যায়। এ ছাড়া রাত ১০টায় শুরু হওয়া তল্লাশি অভিযানে সোহরাওয়ার্দী ছাত্রাবাসের মসজিদ থেকে বস্তাভর্তি পেট্রলবোমা ও ককটেল উদ্ধার করা হয়।  চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক
্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। সোহরাওয়ার্দী ছাত্রাবাসে তল্লাশি চালিয়ে মসজিদ থেকে বস্তাভর্তি পেট্রলবোমা ও ককটেল উদ্ধার করা হয়। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিরাজ উদ দৌল্লাহ জানান, তুচ্ছ ঘটনায় দুটি ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ছাত্রাবাসের আসন বরাদ্দ বাতিলের দাবিতে শহীদ মিনার চত্বরে মানববন্ধন করে ছাত্রলীগ। এ সময় ছবি তুলতে যান কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র শওকত হোসেন। শিবির সন্দেহে তাঁকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সন্ধ্যা ছয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী ছাত্রাবাসের পাশের কাঁঠালতলায় একটি দোকানে নাশতা করছিলেন শিবিরের পাঁচ-ছয়জন কর্মী। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সেখানে উপস্থিত হলে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ সময় পার্শ্ববর্তী মাঠে ফুটবল খেলতে থাকা ছাত্রশিবিরের কর্মীরা এগিয়ে এলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ঘটনা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে শিবিরের কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী ছাত্রাবাস থেকে বের হয়ে ছাত্রলীগকে ধাওয়া দিয়ে একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। অপরদিকে পার্শ্ববর্তী শাহজালাল ছাত্রাবাসের পাশ থেকে ফাঁকা গুলি ছোড়ে ছাত্রলীগ। প্রায় ১০ মিনিট ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে ককটেল ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সোহরাওয়ার্দী ছাত্রাবাসের সামনে অবস্থান নিয়ে টিয়ার গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় সোহরাওয়ার্দী ছাত্রাবাস মোড়ে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ এবং ছাত্রাবাসের ভেতরে অবস্থান নেয় শিবির। থেমে থেমে চলতে থাকে উভয় পক্ষের গুলি আর ককটেল বিস্ফোরণ। এদিকে সন্ধ্যা নেমে এলে শিবিরের কর্মীরা শহীদ মিনার, আবদুর রব ছাত্রাবাস, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, নিরাপত্তা দপ্তরের সামনে এবং ছাত্রলীগ গোল চত্বর, শাহ শাহজালাল, শাহ আমানত এবং ক্যাম্পাসের ২ নম্বর ফটক এলাকায় অবস্থান নেয়। রাত আটটায় সোহরাওয়ার্দী ছাত্রাবাসের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান করছেন। তাঁরা সোহরাওয়ার্দী ছাত্রাবাসে পুলিশকে তল্লাশি চালানোর দাবিসহ শিবিরের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এদিকে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর ফটকে ছাত্রশিবির তালা লাগিয়ে দিলেও রাত নয়টায় ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন মামুনের অনুসারীরা স্লোগান দিয়ে তালা ভেঙে ফেলেন। ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর টিপু প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা শাহ আমানত ছাত্রাবাসের মাঠে খেলার সময় ছাত্রশিবিরের কর্মীরা অতর্কিতে হামলা চালায়।’ শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রশাসনের মদদে ছাত্রলীগ সোহরাওয়ার্দী ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এমন কর্মকাণ্ড বন্ধ না করলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় অবরোধের ডাক দেব।’

No comments:

Post a Comment