ারে অভিযুক্ত ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থাও নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। এমনকি ২১.৭৭ শতাংশ বেশি দরে ঠিকাদারকে কাজ দেয়া হয়। চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিভুক্ত (এডিপি) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের পর্যালোচনায় এসব বেরিয়ে এসেছে বলে সূত্র জানিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঠিকাদারদের কাজ দেয়ার পর আর কোনো ধরনের তদারকি করা হয় না। সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পগুলো কখনোই নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারছে না সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ)। ফলে যাত্রীসাধারণকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ঢিলেমির কারণে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কাজ চলছে বছরের পর বছর। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি ১ জানুয়ারি ২০০৬ সালে নেয়া হয়। সংশোধনীর মাধ্যমে এটির মেয়াদ ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর করা হয়েছে। ব্যয় ৩১৯০ কোটি টাকা। গত আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পের আওতায় রোড প্যাকেজের সার্বিক অগ্রগতি ৫০.৩ শতাংশ। আর দু’টি ব্রিজ প্যাকেজের সার্বিক অগ্রগতি ৫০ শতাংশ। রোড প্যাকেজ-২.৩ ও ৫-এর অগ্রগতি একেবারেই কম। রোড প্যাকেজ-২ এর অগ্রগতি ২০.৫ শতাংশ, রোড প্যাকেজ-৩ এর অগ্রগতি ২৪.৫ শতাংশ এবং ৫ এর অগ্রগতি ২০ শতাংশ। আজ থেকে প্রায় সাড়ে চার বছর আগে ১০ জানুয়ারি ২০১০ সালে এই তিনটি প্যাকেজের চুক্তি হয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট উইংয়ের বিশ্লেষকরা জানান, ব্রিজ প্যাকেজের দু’টি চুক্তি ২০১২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি দুই বছর মেয়াদের করা হলেও এখন পর্যন্ত অগ্রগতি মাত্র ৪১.৮ শতাংশ এবং ৬৭ শতাংশ। অগ্রগতি কম হওয়ার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে পারে না। কারণ প্যাকেজের প্রাক্কলিত মূল্যের ২১.৭৭ শতাংশ বেশি দরে ঠিকাদারকে কাজ দেয়া হয়। অথচ কোনো কারণ ছাড়াই ১০ মাস ৯ দিন মেয়াদ বাড়ানো হয়। মেয়াদ বাড়ানো অতিরিক্ত সময়েও তারা কাজ শেষ করতে পারবে না। এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক পর্যালোচনা সভায় কোনো জবাব দিতে পারেননি। পরিকল্পনা কমিশন থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর-আজমতপুর-ইটাখোলা সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ ২০০০ সালের ১ জুলাই শুরু হয়। সংশোধনের মাধ্যমে মেয়াদ ২০১৪ সালের ৩০ জুন করা হয়। ব্যয় ২১৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এ ছাড়া ১৯৯৯ সালে নেয়া হয় ১২০ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি। আজো চলছে। সংশোধনের মাধ্যমে মেয়াদ বাড়িয়ে এটি ২০১৪ সালের জুনে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু এখনো তা শেষ হয়নি। ২০০৩ সালে নেয়া ডেমরা-আমুলিয়া-রামপুরা সড়ক নির্মাণ এবং ডেমরা-সায়েদাবাদ সংযোগ সড়ক উন্নয়ন সংশোধন প্রকল্পটি ১০৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে অনুমোদন পায়। সংশোধিত এই প্রকল্পটি এ বছর ডিসেম্বরে শেষ করার কথা। অন্য দিকে কক্সবাজার টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ দ্বিতীয়পর্যায়ের প্রকল্পটি ১৬৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০০৮ সালের জুলাইতে শুরু করা হয়। চলতি বছরের জুনে এটা শেষ করার কথা। সেটাও শেষ হয়নি। ১২৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি জাতীয় মহাসড়কের চট্টগ্রাম হাটহাজারী ডিভাইডারসহ প্রশস্তকরণ প্রকল্পটি ২০০৯ সালের জুলাই মাসে শুরু করা হলেও এখনও তা শেষ হয়নি। চলতি বছর ৩০ জুন এটা সমাপ্ত করার কথা ছিল। সেটাও অসমাপ্ত বলে পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়। এ দিকে এক পর্যালোচনা সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সড়ক প্রকল্পের আওতায় যেসব প্যাকেজের ঠিকাদার ঠিকভাবে কাজ করছে না এবং শৈথিল্য প্রদর্শন করছেÑ সরেজমিনে পরিদর্শন করে চুক্তি মোতাবেক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জানান, যুক্তিহীনভাবে সময় বাড়ানোর মাধ্যমে সরকারি অর্থের অপচয়ের দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ওপর স্বাভাবিকভাবে বর্তাবে। ঠিকাদারের অবহেলার জন্য যথাযথ তদারকি না করা এবং কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ার কারণেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণের অগ্রগতি হতাশাজনক। পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ সূত্র বলছে, বার বার সময় বৃদ্ধির মধ্যে রড, সিমেন্ট, ইট, বালুরও মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে অর্থেরও অপচয় হয়েছে। এখন বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। যথাসময়ে কাজ শেষ করা হলে বাড়তি অর্থের প্রয়োজন হতো না। তাদের বক্তব্য, প্রতিটি প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হলে অর্থের অপচয় হয় না। কিন্তু বিভিন্ন কারণে অনেক সময় সময় ও অর্থ বৃদ্ধি করতে হয়।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Monday, October 13, 2014
সড়ক প্রকল্পে তদারকি নেই:নয়াদিগন্ত
ারে অভিযুক্ত ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থাও নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। এমনকি ২১.৭৭ শতাংশ বেশি দরে ঠিকাদারকে কাজ দেয়া হয়। চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিভুক্ত (এডিপি) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের পর্যালোচনায় এসব বেরিয়ে এসেছে বলে সূত্র জানিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঠিকাদারদের কাজ দেয়ার পর আর কোনো ধরনের তদারকি করা হয় না। সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পগুলো কখনোই নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারছে না সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ)। ফলে যাত্রীসাধারণকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ঢিলেমির কারণে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কাজ চলছে বছরের পর বছর। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি ১ জানুয়ারি ২০০৬ সালে নেয়া হয়। সংশোধনীর মাধ্যমে এটির মেয়াদ ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর করা হয়েছে। ব্যয় ৩১৯০ কোটি টাকা। গত আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পের আওতায় রোড প্যাকেজের সার্বিক অগ্রগতি ৫০.৩ শতাংশ। আর দু’টি ব্রিজ প্যাকেজের সার্বিক অগ্রগতি ৫০ শতাংশ। রোড প্যাকেজ-২.৩ ও ৫-এর অগ্রগতি একেবারেই কম। রোড প্যাকেজ-২ এর অগ্রগতি ২০.৫ শতাংশ, রোড প্যাকেজ-৩ এর অগ্রগতি ২৪.৫ শতাংশ এবং ৫ এর অগ্রগতি ২০ শতাংশ। আজ থেকে প্রায় সাড়ে চার বছর আগে ১০ জানুয়ারি ২০১০ সালে এই তিনটি প্যাকেজের চুক্তি হয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট উইংয়ের বিশ্লেষকরা জানান, ব্রিজ প্যাকেজের দু’টি চুক্তি ২০১২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি দুই বছর মেয়াদের করা হলেও এখন পর্যন্ত অগ্রগতি মাত্র ৪১.৮ শতাংশ এবং ৬৭ শতাংশ। অগ্রগতি কম হওয়ার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে পারে না। কারণ প্যাকেজের প্রাক্কলিত মূল্যের ২১.৭৭ শতাংশ বেশি দরে ঠিকাদারকে কাজ দেয়া হয়। অথচ কোনো কারণ ছাড়াই ১০ মাস ৯ দিন মেয়াদ বাড়ানো হয়। মেয়াদ বাড়ানো অতিরিক্ত সময়েও তারা কাজ শেষ করতে পারবে না। এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক পর্যালোচনা সভায় কোনো জবাব দিতে পারেননি। পরিকল্পনা কমিশন থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর-আজমতপুর-ইটাখোলা সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ ২০০০ সালের ১ জুলাই শুরু হয়। সংশোধনের মাধ্যমে মেয়াদ ২০১৪ সালের ৩০ জুন করা হয়। ব্যয় ২১৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এ ছাড়া ১৯৯৯ সালে নেয়া হয় ১২০ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি। আজো চলছে। সংশোধনের মাধ্যমে মেয়াদ বাড়িয়ে এটি ২০১৪ সালের জুনে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু এখনো তা শেষ হয়নি। ২০০৩ সালে নেয়া ডেমরা-আমুলিয়া-রামপুরা সড়ক নির্মাণ এবং ডেমরা-সায়েদাবাদ সংযোগ সড়ক উন্নয়ন সংশোধন প্রকল্পটি ১০৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে অনুমোদন পায়। সংশোধিত এই প্রকল্পটি এ বছর ডিসেম্বরে শেষ করার কথা। অন্য দিকে কক্সবাজার টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ দ্বিতীয়পর্যায়ের প্রকল্পটি ১৬৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০০৮ সালের জুলাইতে শুরু করা হয়। চলতি বছরের জুনে এটা শেষ করার কথা। সেটাও শেষ হয়নি। ১২৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি জাতীয় মহাসড়কের চট্টগ্রাম হাটহাজারী ডিভাইডারসহ প্রশস্তকরণ প্রকল্পটি ২০০৯ সালের জুলাই মাসে শুরু করা হলেও এখনও তা শেষ হয়নি। চলতি বছর ৩০ জুন এটা সমাপ্ত করার কথা ছিল। সেটাও অসমাপ্ত বলে পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়। এ দিকে এক পর্যালোচনা সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সড়ক প্রকল্পের আওতায় যেসব প্যাকেজের ঠিকাদার ঠিকভাবে কাজ করছে না এবং শৈথিল্য প্রদর্শন করছেÑ সরেজমিনে পরিদর্শন করে চুক্তি মোতাবেক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জানান, যুক্তিহীনভাবে সময় বাড়ানোর মাধ্যমে সরকারি অর্থের অপচয়ের দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ওপর স্বাভাবিকভাবে বর্তাবে। ঠিকাদারের অবহেলার জন্য যথাযথ তদারকি না করা এবং কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ার কারণেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণের অগ্রগতি হতাশাজনক। পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ সূত্র বলছে, বার বার সময় বৃদ্ধির মধ্যে রড, সিমেন্ট, ইট, বালুরও মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে অর্থেরও অপচয় হয়েছে। এখন বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। যথাসময়ে কাজ শেষ করা হলে বাড়তি অর্থের প্রয়োজন হতো না। তাদের বক্তব্য, প্রতিটি প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হলে অর্থের অপচয় হয় না। কিন্তু বিভিন্ন কারণে অনেক সময় সময় ও অর্থ বৃদ্ধি করতে হয়।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment