্রী নরেন্দ্র মোদির সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফরও পিছিয়ে যেতে পারে। সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শেষ হচ্ছে ২৩ ডিসেম্বর, আর কর্মদিবস মাত্র সাত দিন। রাজনৈতিক দল দুটির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোটের পর বিলবিরোধী দুই দল—বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান পাল্টেছে। তবে এই দুই দলই এখন চাইছে বিলটি বাস্তবায়নের আগে পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সব সমালোচনার রাস্তা বন্ধ করে দিতে। গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের লক্ষ্যও ছিল সেটাই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে জানায়, দিন কয়েকের মধ্যে তাদের কর্মকর্তারা গুয়াহাটি গিয়ে চুক্তি সম্পর্কে সব ধরনের ‘ভ্রান্ত ধারণার’ অবসান ঘটানোর চেষ্টা করবেন। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বইও ছাপানো হচ্ছে, যাতে চুক্তির পরে ছিটমহলবাসীর জন্য কেন্দ্র কী কী করবে, তা বিস্তারিতভাবে জানানো হবে। সব কাজ করার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। টাকাও দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের তদারকিতে রাজ্য সরকার কাজগুলো করবে। কারণ, জমির অধিকার রাজ্যের। এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সর্বসম্মত সুপারিশ পাঠানো হয়েছে দিন কয়েক আগে। কিন্তু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরের আয়োজনের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশ এখনো পুরোপুরি খতিয়ে দেখতে পারেনি। মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, ২০১৩ সালে ১১৯তম সংবিধান সংশোধন বিলটি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর রাজ্যসভায় পেশ করা হয়। সেই বিল সরকার প্রত্যাহার করেনি। তাই নতুন করে মন্ত্রিসভার অনুমোদনেরও দরকার নেই। ওই বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হলে স্থায়ী কমিটির সুপারিশগুলো সংশোধনী হিসেবে আসতে পারে। বিল কবে আলোচনার জন্য আসবে, তা ঠিক করে দুই সভার বিজনেস অ্যাডভাইজরি কমিটি (বিএসি)। রাজ্যসভা ও লোকসভার বিএসি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত যে বিলগুলো আলোচনার জন্য ঠিক করেছে, তাতে সীমান্ত বিল নেই। চলতি অধিবেশনে বিলটি পাস না হলে বাংলাদেশ একটু আশাহত হবে ঠিকই, কিন্তু বিলটি যে পাস হবেই, সে বিষয়ে দুই পক্ষই নিশ্চিত। বাংলাদেশের কূটনৈতিক মহল মনে করছে, একটু দেরি হলেও তাতে যদি জটিলতা কাটে, সেটাই ভালো। সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কী ধরনের কাজ হবে, তা বৃহস্পতিবারের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গকে জানানো হয়েছে। কাজ প্রধানত দুটি। প্রথমত, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ১১১টি ভারতীয় ছিটমহলের বাসিন্দাদের মধ্যে যাঁরা ভারতে চলে আসতে চান, তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। চার বছর আগে এই সংখ্যাটা ছিল সাড়ে তিন হাজারের মতো। এখন কিছু বাড়তে-কমতে পারে। এই লোকজনকে কোথায় থাকতে দেওয়া হবে, সেই জায়গা ঠিক করতে হবে রাজ্য সরকারকে। যাঁরা চাষযোগ্য জমি ছেড়ে আসবেন, তাঁদের জন্য জমির ব্যবস্থা করতে হবে। জমির এই ব্যবস্থা করাও রাজ্যের দায়িত্ব। যদিও টাকাটা দেবে কেন্দ্র। দ্বিতীয় কাজ, ভারতের মধ্যে অবস্থিত বাংলাদেশের যে ৫১টি ছিটমহলের ভারতভুক্তি হচ্ছে, সেই অঞ্চলগুলোর সার্বিক উন্নয়ন। উন্নয়ন বলতে প্রধানত অবকাঠামো নির্মাণ। রাস্তা, বিদ্যুৎ, স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পানীয় জলের ব্যবস্থা ইত্যাদি। এ কাজগুলো শুরু হবে চুক্তি বাস্তবায়নের পর। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রকল্পগুলোর রূপরেখা শুরুতেই নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে কোনো জটিলতা সৃষ্টি না হয় এবং রাজনৈতিক প্রচারে শাসক দলকে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে না হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজ্য সরকারের মতে পুনর্বাসনসহ অবকাঠামো নির্মাণের সম্ভাব্য খরচ তিন হাজার কোটি টাকার মতো। তবে অত টাকা লাগবে বলে আমাদের মনে হয় না। অবশ্য যে টাকাই লাগুক, সবটাই কেন্দ্র দেবে।’ এসব কাজের রূপরেখা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত করা সম্ভব নয়।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Sunday, December 14, 2014
সীমান্ত বিল চলতি অধিবেশনেই পাস হওয়া নিয়ে সংশয়:প্রথম অালো
্রী নরেন্দ্র মোদির সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফরও পিছিয়ে যেতে পারে। সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শেষ হচ্ছে ২৩ ডিসেম্বর, আর কর্মদিবস মাত্র সাত দিন। রাজনৈতিক দল দুটির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোটের পর বিলবিরোধী দুই দল—বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান পাল্টেছে। তবে এই দুই দলই এখন চাইছে বিলটি বাস্তবায়নের আগে পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সব সমালোচনার রাস্তা বন্ধ করে দিতে। গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের লক্ষ্যও ছিল সেটাই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে জানায়, দিন কয়েকের মধ্যে তাদের কর্মকর্তারা গুয়াহাটি গিয়ে চুক্তি সম্পর্কে সব ধরনের ‘ভ্রান্ত ধারণার’ অবসান ঘটানোর চেষ্টা করবেন। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বইও ছাপানো হচ্ছে, যাতে চুক্তির পরে ছিটমহলবাসীর জন্য কেন্দ্র কী কী করবে, তা বিস্তারিতভাবে জানানো হবে। সব কাজ করার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। টাকাও দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের তদারকিতে রাজ্য সরকার কাজগুলো করবে। কারণ, জমির অধিকার রাজ্যের। এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সর্বসম্মত সুপারিশ পাঠানো হয়েছে দিন কয়েক আগে। কিন্তু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরের আয়োজনের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশ এখনো পুরোপুরি খতিয়ে দেখতে পারেনি। মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, ২০১৩ সালে ১১৯তম সংবিধান সংশোধন বিলটি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর রাজ্যসভায় পেশ করা হয়। সেই বিল সরকার প্রত্যাহার করেনি। তাই নতুন করে মন্ত্রিসভার অনুমোদনেরও দরকার নেই। ওই বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হলে স্থায়ী কমিটির সুপারিশগুলো সংশোধনী হিসেবে আসতে পারে। বিল কবে আলোচনার জন্য আসবে, তা ঠিক করে দুই সভার বিজনেস অ্যাডভাইজরি কমিটি (বিএসি)। রাজ্যসভা ও লোকসভার বিএসি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত যে বিলগুলো আলোচনার জন্য ঠিক করেছে, তাতে সীমান্ত বিল নেই। চলতি অধিবেশনে বিলটি পাস না হলে বাংলাদেশ একটু আশাহত হবে ঠিকই, কিন্তু বিলটি যে পাস হবেই, সে বিষয়ে দুই পক্ষই নিশ্চিত। বাংলাদেশের কূটনৈতিক মহল মনে করছে, একটু দেরি হলেও তাতে যদি জটিলতা কাটে, সেটাই ভালো। সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কী ধরনের কাজ হবে, তা বৃহস্পতিবারের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গকে জানানো হয়েছে। কাজ প্রধানত দুটি। প্রথমত, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ১১১টি ভারতীয় ছিটমহলের বাসিন্দাদের মধ্যে যাঁরা ভারতে চলে আসতে চান, তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। চার বছর আগে এই সংখ্যাটা ছিল সাড়ে তিন হাজারের মতো। এখন কিছু বাড়তে-কমতে পারে। এই লোকজনকে কোথায় থাকতে দেওয়া হবে, সেই জায়গা ঠিক করতে হবে রাজ্য সরকারকে। যাঁরা চাষযোগ্য জমি ছেড়ে আসবেন, তাঁদের জন্য জমির ব্যবস্থা করতে হবে। জমির এই ব্যবস্থা করাও রাজ্যের দায়িত্ব। যদিও টাকাটা দেবে কেন্দ্র। দ্বিতীয় কাজ, ভারতের মধ্যে অবস্থিত বাংলাদেশের যে ৫১টি ছিটমহলের ভারতভুক্তি হচ্ছে, সেই অঞ্চলগুলোর সার্বিক উন্নয়ন। উন্নয়ন বলতে প্রধানত অবকাঠামো নির্মাণ। রাস্তা, বিদ্যুৎ, স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পানীয় জলের ব্যবস্থা ইত্যাদি। এ কাজগুলো শুরু হবে চুক্তি বাস্তবায়নের পর। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রকল্পগুলোর রূপরেখা শুরুতেই নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে কোনো জটিলতা সৃষ্টি না হয় এবং রাজনৈতিক প্রচারে শাসক দলকে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে না হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজ্য সরকারের মতে পুনর্বাসনসহ অবকাঠামো নির্মাণের সম্ভাব্য খরচ তিন হাজার কোটি টাকার মতো। তবে অত টাকা লাগবে বলে আমাদের মনে হয় না। অবশ্য যে টাকাই লাগুক, সবটাই কেন্দ্র দেবে।’ এসব কাজের রূপরেখা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত করা সম্ভব নয়।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment