Monday, December 15, 2014

সহিংস আন্দোলনে বিদেশিদের 'না':কালের কন্ঠ

দুই মাস আগে এক পশ্চিমা কূটনীতিক আড্ডাচ্ছলে মন্তব্য করেছিলেন, দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে বিদেশিদের চাপে কোনো কাজ হবে না। আর সরকারের প্রতিপক্ষও আন্দোলনের সুফল ঘরে
তুলতে ব্যর্থ হবে। আর গত সপ্তাহে ওই কূটনীতিকই বর্তমান প্রেক্ষাপট মূল্যায়ন করে বলেন, পরিস্থিতি যা, তাতে সরকার যদি নিজে কোনো গোল না বাধায় বা ছাড় না দেয় তাহলে বিরোধীপক্ষের সফল হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই তাঁরা দেখছেন না। তিনি বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে আন্দোলনের পরিকল্পনা করছে বলে তাঁদের জানানো হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমারা তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে এই বলে, আন্দোলন হতে হবে শান্তিপূর্ণ। ধ্বংসাত্মক বা ৫ জানুয়ারির আগের দিনগুলোর মতো সহিংস আন্দোলনকে কোনোভাবেই তারা সমর্থন করবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সম্প্রতি সাক্ষাতের সময় পশ্চিমা এক কূটনীতিক জানতে চান- দলটি যে সরকার পতনের কথা বলছে, তার বাস্তবায়ন কিভাবে সম্ভব? এর জবাবে সেখানে উপস্থিত বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা জোরালো আন্দোলনের ইঙ্গিত দেন। সে সময় ওই পশ্চিমা কূটনীতিক বলেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি প্রত্যাশা করেন। কোনো ধরনের সহিংসতা তাঁরা চান না। ওই সাক্ষাতে সংলাপের প্রসঙ্গ উঠলে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা সংলাপে বসতে প্রস্তুত। পশ্চিমা কূটনীতিক জানতে চান, সংলাপে বিএনপি কী নিয়ে আলোচনা করতে চায়। এর জবাবে বিএনপির বক্তব্য, সংলাপে বসেই পরিস্থিতি অনুযায়ী এজেন্ডা ঠিক করা হবে। পশ্চিমা সূত্রগুলো জানায়, দলটির সংলাপের এজেন্ডাই নেই এ কথা জেনে তারা খুব হতাশ হয়েছে। বাংলাদেশে শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় পশ্চিমাদের সমর্থন বিভিন্ন সময় প্রত্যাশা করা হয়। তবে ভারত রাজি না থাকলে তাদের প্রত্যাশা বাস্তবায়ন আদৌ সম্ভব কি না তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠানে দিল্লির জোরালো সমর্থন ছিল। এ বাস্তবতায় দেশে একটি আগাম নির্বাচন করার বিষয়ে হস্তক্ষেপ বড় ধরনের বিতর্ক ও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে- এ ভাবনাও জোরালো হচ্ছে পশ্চিমাদের মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) পশ্চিমা দেশগুলো ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। নির্বাচনকে অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ অভিহিত করে যুক্তরাষ্ট্র বিবৃতি দিলেও ঢাকা ও ওয়াশিংটনের বর্তমান বক্তব্য হলো, দুই দেশের অংশীদারি অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় আরো গভীর, জোরালো ও বিস্তৃত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ড্যান ডাব্লিউ মজিনা গত শনিবারও ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারির মাত্রা প্রতিদিনই জোরালো হচ্ছে। এটি কূটনৈতিক শব্দের মারপ্যাঁচের বিষয় নয়। বাস্তব প্রেক্ষাপট বিবেচনা করেই তিনি এমনটি বলছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ও অংশীদারি নিয়ে মজিনার এমন কথা নতুন নয়। তবুও এবারের বক্তব্য আগেরগুলোর চেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়ালকে নিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সমালোচনায় বিএনপিসহ বিভিন্ন মহল যখন বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে টানাপড়েনের আশঙ্কা করছে। নিশা দেশাইকে 'দুই আনার মন্ত্রী' বলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের করা মন্তব্য বিষয়ে ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণকারীরাও এ বিষয়ে সরাসরি জবাব পাননি। তাঁদের শুধু এটুকুই বলা হয়েছে, বিষয়টি ওয়াশিংটন জানে। যিনি বলেছেন, তিনিই হয়তো এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে পারেন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে ওই বক্তব্যের সম্ভাব্য প্রভাব প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এখন অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় শক্তিশালী। যুক্তরাষ্ট্রের মতো প্রভাবশালী দেশের একজন মন্ত্রীকে নিয়ে বাংলাদেশের একজন মন্ত্রীর সমালোচনার ফল বা সম্পর্কে এর প্রভাব কী হতে পারে তা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা আছে বিভিন্ন মহলে। অনেকে মনে করেন, ওয়াশিংটন সব সময় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখায় না। আবার কারো কারো মতে, এ দেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব অনেকটাই কমে এসেছে। কাছের বা আঞ্চলিক শক্তিগুলোও এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে সৈয়দ আশরাফের ওই বক্তব্যের পর কূটনীতিকদের কাছে রাজনীতিকদের দৌড়ঝাঁপ ছিল চোখে পড়ার মতো। একাধিক বিদেশি কূটনীতিক কালের কণ্ঠকে বলেন, পরদিন সংবাদপত্রে দেখার আগেই সৈয়দ আশরাফের ওই বক্তব্য তাঁরা জেনে গিয়েছিলেন সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছ থেকে। 'ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের' পরও বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে মজিনার ইতিবাচক মন্তব্য সম্পর্কে বিএনপি নেতাদের কেউ কেউ বলেন, বিদায় বেলায় তিনি নতুন করে কোনো তিক্ততা সৃষ্টি করতে চান না। নির্বাচন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র আগের অবস্থানেই আছে। আর সেটিই যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃত অবস্থান। বিএনপি নেতারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই ইতিবাচক বক্তব্য-বিবৃতি 'প্রকৃত অবস্থান' নয়। এ সবই কূটনৈতিক শব্দের মারপ্যাঁচ বলে ধারণা তাঁদের। তবে সরকারি সূত্রগুলোর বক্তব্য এর বিপরীত। ঢাকার কূটনীতিকদের মতে, গত ৩০ অক্টোবর ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারি সংলাপের পর যৌথ ঘোষণায় 'গণতন্ত্র' এবং 'নির্বাচন' এই শব্দ দুটির উল্লেখ না থাকাটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। অংশীদারি সংলাপ হলো বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সব ইস্যু নিয়ে নিয়মিত আলোচনা করার সর্বোচ্চ ফোরাম। গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর এই ফোরামের বৈঠকটি ছিল উভয় দেশের কাছে অত্যন্ত ফলপ্রসূ। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যু তোলেনি যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া ওয়াশিংটনের চোখে 'অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ' নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা বর্তমান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিপক্ষীয় সফরটিও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকার এক কূটনীতিক বলেন, বিদেশিদের কেউ কোনো ইস্যুতে নেতিবাচক মন্তব্য করলেই যে সম্পর্ক তলানিতে নেমে গেছে এমন ভাবনা বাস্তবসম্মত নয়। অনেকে অনেক সময় বিভিন্ন ইস্যুতে নেতিবাচক মন্তব্য করেন। কারণ নিজ দেশের জনগণের কাছে তাঁদের জবাবদিহি করতে হয়। তাঁরা তাঁদের জনগণের ও জনপ্রতিনিধিদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কথা বলেন। কিন্তু তাঁরা কাজ করেন বাস্তবতা অনুযায়ী। তাঁদের প্রকাশ্য অবস্থান ও কাজের মধ্যে এমন তফাতের অনেক নজির আছে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, আধুনিক কূটনীতিতে এই রীতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। গত সপ্তাহে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতার আন্তরিক কথোপকথন-কুশল বিনিময় দেখে সে সময় পাশে থাকা বিরোধী নেতারাও রীতিমতো বিস্মিত হয়েছেন। সেখানে এমন নেতাও ছিলেন যিনি সংসদে ও সংসদের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করেছেন। বাস্তবতা হলো, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ আছে এবং সেই সঙ্গে সম্পর্কও খুব ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক পর্যায়ে নিবিড় যোগাযোগও অব্যাহত। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মজিনাই গত ১৬ জানুয়ারি বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য সরকার আয়োজিত ব্রিফিংয়ে বর্ষা অর্থাৎ মে-জুন মাসের আগেই নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছিলেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ওই ব্রিফিংয়েই যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রত্যাশাকে 'বাড়াবাড়ি রকমের আশা' (টু অ্যামবিশাস) বলে মন্তব্য করেছিলেন। বর্ষা পেরিয়ে এখন শীত চলছে। সরকারও তার ক্ষমতার বর্ষপূর্তি পালনের কাছাকাছি। গত নির্বাচনের ১০ দিন পর ১৬ জানুয়ারি ইউরোপীয় পার্লামেন্টে গৃহীত এক প্রস্তাবে বৈধ সব দল রাজি থাকলে আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানানো হয়। ওই প্রস্তাব তোলার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ইউরোপীয় পার্লামেন্টের দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান জিন ল্যাম্বার্টের। এর দুই মাস পর গত মার্চে ল্যাম্বার্ট ঢাকা সফরকালে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, নির্বাচন কার অধীনে হবে সে বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল সমঝোতায় পৌঁছলেই কেবল আগাম নির্বাচন হতে পারে। আর সর্বশেষ গত ১০ ডিসেম্বর তিনি ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্টই বলেছেন, তাঁরা নতুন বা আগাম নির্বাচনের কথা বলছেন না। বরং ভবিষ্যতের নির্বাচন পদ্ধতি ঠিক করতে আলোচনা শুরুর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে উৎসাহিত করছেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের গত ১৬ জানুয়ারির প্রস্তাবে যুদ্ধাপরাধের বিচারের গুরুত্ব স্থান পাওয়া এবং জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলাম থেকে বিএনপিকে দূরে থাকার আহ্বান জানানোকে 'ইতিবাচক' ও 'ভারসাম্যপূর্ণ' হিসেবে দেখছে সরকার। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (্ইইউ) তৎকালীন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম হানা বলেছিলেন, নির্বাচনের পর নতুন এক পেক্ষাপট সৃষ্টি হতে পারে। এরপর ১৬ জানুয়ারি বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য সরকারের ব্রিফিংয়ে নতুন করে রাজনৈতিক সংঘাত সৃষ্টির আশঙ্কা করেছিলেন হানাসহ একাধিক রাষ্ট্রদূত। ১৯ জানুয়ারি উইলিয়াম হানা নতুন সরকারের সঙ্গে ইইউর কাজ করা না করা বিষয়ক প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেন, দুপক্ষের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এরপর ১৫ জুলাই তিনি সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের প্রতি অব্যাহত অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে আগামী সাত বছরে ইইউর মঞ্জুরি প্রায় ৪০০ শতাংশ বাড়ছে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, নিরাপত্তা পরিস্থিতিকেই কূটনীতিকরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন। আর গত ৫ জানুয়ারির আগের দিনগুলোর তুলনায় পরের দিনগুলোতে নিরাপত্তা পরিস্থিতির দৃশ্যমান অগ্রগতিতে ইইউ সন্তুষ্ট। বাস্তবতা হলো, আগামী নির্বাচন কার অধীনে হবে তা নির্ধারণে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ শুরু হয়নি। এ ক্ষেত্রে সরকারের স্পষ্ট অবস্থান- সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। কূটনৈতিক সূত্রগুলোর মতে, বিদেশিরা সংলাপে বসতে উৎসাহিত করতে পারে বা চাপ দিতে পারে। কিন্তু আলোচনা বা সমঝোতায় পৌঁছতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকেই। আলোচনার ইস্যুও বিদেশিরা ঠিক করে দেবে না। রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত থাকায় দৃশ্যত সংলাপের আহ্বানও তেমন জোরালো নয়। আর রাজনীতিকরাও তাতে সাড়া দিচ্ছেন না। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে দিতে পারে সরকারের কিছু ভুল বা নেতিবাচক সিদ্ধান্ত। এ ক্ষেত্রে তারা গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এর প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের ওপর। যাঁরা ৫ জানুয়ারির পর স্থিতিশীলতায় নিরাপদ বোধ করছেন তাঁরাও বিক্ষুব্ধ হয়ে সরকারের কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন করবেন। এতে সরকারের প্রতি অসন্তোষ দৃশ্যমান হতে পারে। আর বিরোধীপক্ষও এ ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে গণবান্ধব কর্মসূচি শুরু করতে পারে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো আরো জানায়, বিদেশিরা এ দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে চান। এজন্য তাঁদের প্রত্যাশা স্থিতিশীল ও নিরাপদ পরিবেশ। যতক্ষণ তাঁদের বিনিয়োগ ও স্বার্থ অক্ষুণ্ন আছে ততক্ষণ তাঁরা মুখে যত বিরূপ মন্তব্যই করুন না কেন ব্যবহারিক দিক দিয়ে তার তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। সরকারের বড় ধরনের ব্যর্থতা ও ব্যতিক্রমী কিছু ঘটনা ছাড়া বাস্তব পরিস্থিতি অনেকটা অভিন্ন। যাঁরা গণতন্ত্রের কথা বলেন, একনায়ক, রাজতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্রের সঙ্গেও তাঁদের নিবিড় ও অংশীদারির সম্পর্ক কম নয়। বাংলাদেশের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে অবৈধ বলার কোনো সুযোগ নেই। কৌশলগত দিক দিয়ে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র তথা পশ্চিমা বিশ্বের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেউই এ দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করতে চায় না। গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের বর্জন করা কতটা যৌক্তিক ছিল সেটা এখনো বিদেশিদের কাছে বড় প্রশ্ন হয়ে আছে।      

No comments:

Post a Comment