াজউদ্দীন আহমদ ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এ জন্য আজ মঙ্গলবার বিএনপি-সমর্থক বা সমমনা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এমাজউদ্দীন আহমদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘শত নাগরিকদের নিয়ে একটি কমিটি করা হবে। তবে এর নাম এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। কাল বলতে পারব।’ বিএনপির নেতারা জানান, চট্টগ্রাম ও ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে গতকাল পর্যন্ত বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বা ২০-দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি। তবে জোটের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শরিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতার সঙ্গে এ বিষয়ে খালেদা জিয়াসহ বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা ফোনে যোগাযোগ করছেন। নেতারা আরও জানিয়েছেন, নির্বাচনে যাওয়া না-যাওয়া নিয়ে বিএনপির ভেতরে এবং জোটের শরিকদের মধ্যে পক্ষে-বিপক্ষে নানা মত আছে। বেশির ভাগ নেতা নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মত দিলেও মাঠে কতটা ভূমিকা রাখা যাবে, প্রার্থীরা ঠিকমতো গণসংযোগ করতে পারবেন কি না, নেতা-কর্মীদের মামলা-মোকদ্দমাগুলোর কী হবে—এসব বিষয়ে নানা প্রশ্ন ও সংশয় এখনো আছে। কমিশনে চিঠি দেবে: কয়েক দিনের হাওয়া দেখে বিএনপি নির্বাচন কমিশনে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর এবং চিঠি দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা, প্রার্থী ও নেতা-কর্মীদের নামে থাকা মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করা এবং মাঠে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি জানানো হবে। এসব বিষয়ে কমিশনের আশ্বাস পেলেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এবং নির্বাচনী মাঠে নামবে বিএনপি। অবশ্য বিএনপির কোনো পর্যায়ের নেতা এসব বিষয়ে এখনই উদ্ধৃত হয়ে কথা বলতে রাজি হননি। জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনকে আরও একটি বিষয়ে অভিযোগ করে প্রতিকার চাইবে বিএনপি। তা হচ্ছে, আগে অবিভক্ত সিটি করপোরেশন থাকায় মেয়র প্রার্থীরা যেকোনো এলাকার ভোটার হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারতেন। এবার সিটি উত্তর-দক্ষিণে ভাগ হওয়ায় মেয়র প্রার্থীরা পছন্দের এলাকায় প্রার্থী হতে পারছেন না। এই আইনটি শিথিল করা কিংবা পছন্দের এলাকায় ভোটার তালিকায় নাম স্থানান্তরের সুযোগ দেওয়ার আবেদন জানানো হতে পারে। উত্তরে মিন্টু, দক্ষিণে প্রার্থী-সংকট: বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টুর মেয়র পদপ্রার্থী হওয়া অনেকটাই নিশ্চিত। তবে নাগরিক ঐক্য ইতিমধ্যে এই এলাকা থেকে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে প্রার্থী ঘোষণা দেওয়ায় বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছেন। কারণ, বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের ভাবনায় ছিল মিন্টুকে উত্তরে, আর মান্নাকে দক্ষিণে সমর্থন করা হবে। কিন্তু দুজনেই উত্তরের ভোটার হওয়ায় তা আর সম্ভব হচ্ছে না। এই অবস্থায় কে, কাকে ছাড় দেবে এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি মিন্টুর বিষয়টি ছাড় দেবে না বলেই দলে আলোচনা আছে। বিএনপির একাধিক নেতা জানান, ঢাকা দক্ষিণে মনমতো প্রার্থী পাচ্ছে না বিএনপি। এ এলাকায় পছন্দের প্রার্থীদের মধ্যে মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরকত উল্লা, রুহুল কবির রিজভী আহমেদের নাম ছিল। এর মধ্যে মির্জা আব্বাস ছাড়া অন্যরা দক্ষিণের ভোটার নন। আর মির্জা আব্বাস একটি মামলায় দণ্ডিত। এ কারণে তাঁর প্রার্থী হওয়া নিয়ে সংশয় আছে। এ ছাড়া চলমান আন্দোলনে ঢাকায় কার্যকর কোনো ভূমিকা না রাখতে পারায় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁর ওপর কিছুটা অসন্তুষ্ট বলেও জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ পর্যায়ে পুরান ঢাকার বাসিন্দা আইনজীবী তুহিন মালিককে মেয়র পদে সমর্থন দেওয়ার কথা ভাবা হয়। কিন্তু রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা মাথায় নিয়ে তিনি বিদেশে আছেন। তাঁর বিষয়টিও প্রায় বাতিলের খাতায় চলে গেছে। অবশ্য বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব হাবিব-উন-নবী খান দক্ষিণ থেকে মেয়র পদে প্রার্থী হতে আগ্রহী। দুজনেই ওই এলাকার ভোটার। ফলে দলীয় নেতাদের মধ্যে তাঁদের নামও আলোচিত হচ্ছে। এদিকে কারাবন্দী নেতা নাসির উদ্দীন আহম্মেদ পিন্টু গতকাল তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে মনোনয়নপত্র কিনেছেন। এ ছাড়া কাউন্সিলর পদে দক্ষিণে বিএনপির ৭১ জন এবং উত্তরে ২৯ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। চট্টগ্রামে প্রার্থী নিয়ে ধূম্রজাল: চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আ জ ম নাছির। কিন্তু বিএনপি এখনো প্রার্থী ঠিক করতে পারেনি। সম্ভাব্য পছন্দের প্রার্থীদের কেউ কেউ প্রার্থী হতে চাইছেন না। আবার অনেকে নিজে আগ্রহী হলেও দল ভরসা পাচ্ছে না। বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা জানান, চট্টগ্রাম সিটিতে নির্বাচন করার জন্য নগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে দুই দফায় ফোন করেন চেয়ারপারসন। এতে তিনি মৌন সম্মতিও দেন। কিন্তু পরে দলের নীতিনির্ধারকদের তিনটি কারণ দেখিয়ে তিনি পিছু হটেন। কারণগুলো হচ্ছে প্রথমত, তিনি জাতীয় রাজনীতি করতে চান, পূর্ণ মন্ত্রীও ছিলেন। আর চট্টগ্রামের মেয়র পদটি প্রতিমন্ত্রী মর্যাদার। দ্বিতীয়ত, তাঁর ব্যবসা-বাণিজ্য সব ঢাকাকেন্দ্রিক। যে কারণে তাঁকে ঢাকায় থাকতে হয়। সর্বশেষ কারণ হচ্ছে দলে বিভক্তি। প্রার্থী হলে সবার সমর্থন পাবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তাই বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ মন্জুর আলমকে আবারও বিএনপির সমর্থন দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন তিনি। কিন্তু দলের শীর্ষ নেতৃত্বের এতে সায় নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শীর্ষ নেতৃত্বের এই মনোভাবের পর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিকল্প হিসেবে দলের সাবেক সাংসদ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম ও তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী আবদুস সালামের নাম প্রস্তাব করেন। জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে যাবে কি না, গেলে কাকে সমর্থন দেবে, এসব বিষয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষায় আছি।’ মন্জুর-শাহাদাতকে ঘিরে আলোচনা: চট্টগ্রাম থেকে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জানান, বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ মন্জুর আলমের পাশাপাশি মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেনও মেয়র প্রার্থী হতে তৎপর রয়েছেন। দলের স্থানীয় নেতারাও এ নিয়ে প্রকাশ্যে ও আড়ালে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত দিচ্ছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্জুর আলম বলেন, ‘আমি নির্বাচন করতে চাই। আশা করি, দল আমাকে সমর্থন দেবে।’ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রামে দলের সব নেতাই আমার পক্ষে। আওয়ামী লীগকে মোকাবিলা করার শক্তি ও সামর্থ্য আমি রাখি। মন্জুরের দাবি ঠিক নয়।’ বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, স্থানীয় নেতাদের বড় একটি অংশ বর্তমান মেয়র মন্জুর আলমকে আবারও প্রার্থী করার পক্ষে। এর কারণ হিসেবে তাঁরা মনে করছেন, মন্জুর আলম সিটি করপোরেশনকে দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করেননি। তাঁর বিরুদ্ধে বড় ধরনের কোনো অভিযোগও নেই। তা ছাড়া আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর গুরু-শিষ্যের সম্পর্ক। জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘অর্থবহ নির্বাচন হচ্ছে কি না, সেটা আগে দেখতে হবে। আমাদের বেশির ভাগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা-হুলিয়া রয়েছে। নির্বাচনী মাঠে সমান সুযোগ পাওয়া গেলে আমরা বর্তমান মেয়র মন্জুর আলমকে নিয়ে ভাবতে পারি। কারণ, আমি ও খসরু নির্বাচন করছি না। আমাদের দুজনের বাইরে এখন মন্জুর আলম ছাড়া আর বিকল্প নেই।’
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Tuesday, March 24, 2015
‘মঞ্চ’ করে বিএনপির নির্বাচন প্রস্তুতি:প্রথম অালো
াজউদ্দীন আহমদ ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এ জন্য আজ মঙ্গলবার বিএনপি-সমর্থক বা সমমনা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এমাজউদ্দীন আহমদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘শত নাগরিকদের নিয়ে একটি কমিটি করা হবে। তবে এর নাম এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। কাল বলতে পারব।’ বিএনপির নেতারা জানান, চট্টগ্রাম ও ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে গতকাল পর্যন্ত বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বা ২০-দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি। তবে জোটের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শরিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতার সঙ্গে এ বিষয়ে খালেদা জিয়াসহ বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা ফোনে যোগাযোগ করছেন। নেতারা আরও জানিয়েছেন, নির্বাচনে যাওয়া না-যাওয়া নিয়ে বিএনপির ভেতরে এবং জোটের শরিকদের মধ্যে পক্ষে-বিপক্ষে নানা মত আছে। বেশির ভাগ নেতা নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মত দিলেও মাঠে কতটা ভূমিকা রাখা যাবে, প্রার্থীরা ঠিকমতো গণসংযোগ করতে পারবেন কি না, নেতা-কর্মীদের মামলা-মোকদ্দমাগুলোর কী হবে—এসব বিষয়ে নানা প্রশ্ন ও সংশয় এখনো আছে। কমিশনে চিঠি দেবে: কয়েক দিনের হাওয়া দেখে বিএনপি নির্বাচন কমিশনে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর এবং চিঠি দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা, প্রার্থী ও নেতা-কর্মীদের নামে থাকা মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করা এবং মাঠে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি জানানো হবে। এসব বিষয়ে কমিশনের আশ্বাস পেলেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এবং নির্বাচনী মাঠে নামবে বিএনপি। অবশ্য বিএনপির কোনো পর্যায়ের নেতা এসব বিষয়ে এখনই উদ্ধৃত হয়ে কথা বলতে রাজি হননি। জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনকে আরও একটি বিষয়ে অভিযোগ করে প্রতিকার চাইবে বিএনপি। তা হচ্ছে, আগে অবিভক্ত সিটি করপোরেশন থাকায় মেয়র প্রার্থীরা যেকোনো এলাকার ভোটার হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারতেন। এবার সিটি উত্তর-দক্ষিণে ভাগ হওয়ায় মেয়র প্রার্থীরা পছন্দের এলাকায় প্রার্থী হতে পারছেন না। এই আইনটি শিথিল করা কিংবা পছন্দের এলাকায় ভোটার তালিকায় নাম স্থানান্তরের সুযোগ দেওয়ার আবেদন জানানো হতে পারে। উত্তরে মিন্টু, দক্ষিণে প্রার্থী-সংকট: বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টুর মেয়র পদপ্রার্থী হওয়া অনেকটাই নিশ্চিত। তবে নাগরিক ঐক্য ইতিমধ্যে এই এলাকা থেকে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে প্রার্থী ঘোষণা দেওয়ায় বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছেন। কারণ, বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের ভাবনায় ছিল মিন্টুকে উত্তরে, আর মান্নাকে দক্ষিণে সমর্থন করা হবে। কিন্তু দুজনেই উত্তরের ভোটার হওয়ায় তা আর সম্ভব হচ্ছে না। এই অবস্থায় কে, কাকে ছাড় দেবে এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি মিন্টুর বিষয়টি ছাড় দেবে না বলেই দলে আলোচনা আছে। বিএনপির একাধিক নেতা জানান, ঢাকা দক্ষিণে মনমতো প্রার্থী পাচ্ছে না বিএনপি। এ এলাকায় পছন্দের প্রার্থীদের মধ্যে মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরকত উল্লা, রুহুল কবির রিজভী আহমেদের নাম ছিল। এর মধ্যে মির্জা আব্বাস ছাড়া অন্যরা দক্ষিণের ভোটার নন। আর মির্জা আব্বাস একটি মামলায় দণ্ডিত। এ কারণে তাঁর প্রার্থী হওয়া নিয়ে সংশয় আছে। এ ছাড়া চলমান আন্দোলনে ঢাকায় কার্যকর কোনো ভূমিকা না রাখতে পারায় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁর ওপর কিছুটা অসন্তুষ্ট বলেও জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ পর্যায়ে পুরান ঢাকার বাসিন্দা আইনজীবী তুহিন মালিককে মেয়র পদে সমর্থন দেওয়ার কথা ভাবা হয়। কিন্তু রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা মাথায় নিয়ে তিনি বিদেশে আছেন। তাঁর বিষয়টিও প্রায় বাতিলের খাতায় চলে গেছে। অবশ্য বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব হাবিব-উন-নবী খান দক্ষিণ থেকে মেয়র পদে প্রার্থী হতে আগ্রহী। দুজনেই ওই এলাকার ভোটার। ফলে দলীয় নেতাদের মধ্যে তাঁদের নামও আলোচিত হচ্ছে। এদিকে কারাবন্দী নেতা নাসির উদ্দীন আহম্মেদ পিন্টু গতকাল তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে মনোনয়নপত্র কিনেছেন। এ ছাড়া কাউন্সিলর পদে দক্ষিণে বিএনপির ৭১ জন এবং উত্তরে ২৯ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। চট্টগ্রামে প্রার্থী নিয়ে ধূম্রজাল: চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আ জ ম নাছির। কিন্তু বিএনপি এখনো প্রার্থী ঠিক করতে পারেনি। সম্ভাব্য পছন্দের প্রার্থীদের কেউ কেউ প্রার্থী হতে চাইছেন না। আবার অনেকে নিজে আগ্রহী হলেও দল ভরসা পাচ্ছে না। বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা জানান, চট্টগ্রাম সিটিতে নির্বাচন করার জন্য নগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে দুই দফায় ফোন করেন চেয়ারপারসন। এতে তিনি মৌন সম্মতিও দেন। কিন্তু পরে দলের নীতিনির্ধারকদের তিনটি কারণ দেখিয়ে তিনি পিছু হটেন। কারণগুলো হচ্ছে প্রথমত, তিনি জাতীয় রাজনীতি করতে চান, পূর্ণ মন্ত্রীও ছিলেন। আর চট্টগ্রামের মেয়র পদটি প্রতিমন্ত্রী মর্যাদার। দ্বিতীয়ত, তাঁর ব্যবসা-বাণিজ্য সব ঢাকাকেন্দ্রিক। যে কারণে তাঁকে ঢাকায় থাকতে হয়। সর্বশেষ কারণ হচ্ছে দলে বিভক্তি। প্রার্থী হলে সবার সমর্থন পাবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তাই বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ মন্জুর আলমকে আবারও বিএনপির সমর্থন দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন তিনি। কিন্তু দলের শীর্ষ নেতৃত্বের এতে সায় নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শীর্ষ নেতৃত্বের এই মনোভাবের পর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিকল্প হিসেবে দলের সাবেক সাংসদ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম ও তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী আবদুস সালামের নাম প্রস্তাব করেন। জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে যাবে কি না, গেলে কাকে সমর্থন দেবে, এসব বিষয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষায় আছি।’ মন্জুর-শাহাদাতকে ঘিরে আলোচনা: চট্টগ্রাম থেকে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জানান, বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ মন্জুর আলমের পাশাপাশি মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেনও মেয়র প্রার্থী হতে তৎপর রয়েছেন। দলের স্থানীয় নেতারাও এ নিয়ে প্রকাশ্যে ও আড়ালে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত দিচ্ছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্জুর আলম বলেন, ‘আমি নির্বাচন করতে চাই। আশা করি, দল আমাকে সমর্থন দেবে।’ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রামে দলের সব নেতাই আমার পক্ষে। আওয়ামী লীগকে মোকাবিলা করার শক্তি ও সামর্থ্য আমি রাখি। মন্জুরের দাবি ঠিক নয়।’ বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, স্থানীয় নেতাদের বড় একটি অংশ বর্তমান মেয়র মন্জুর আলমকে আবারও প্রার্থী করার পক্ষে। এর কারণ হিসেবে তাঁরা মনে করছেন, মন্জুর আলম সিটি করপোরেশনকে দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করেননি। তাঁর বিরুদ্ধে বড় ধরনের কোনো অভিযোগও নেই। তা ছাড়া আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর গুরু-শিষ্যের সম্পর্ক। জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘অর্থবহ নির্বাচন হচ্ছে কি না, সেটা আগে দেখতে হবে। আমাদের বেশির ভাগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা-হুলিয়া রয়েছে। নির্বাচনী মাঠে সমান সুযোগ পাওয়া গেলে আমরা বর্তমান মেয়র মন্জুর আলমকে নিয়ে ভাবতে পারি। কারণ, আমি ও খসরু নির্বাচন করছি না। আমাদের দুজনের বাইরে এখন মন্জুর আলম ছাড়া আর বিকল্প নেই।’
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment