Monday, July 21, 2014

মদিনায় মায়ের সঙ্গে তারেক কথা হবে দলীয় বিষয়ে:কালের কন্ঠ

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং তাঁর বড় ছেলে ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখন মদিনায় অবস্থান করছেন। তাঁরা সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের কর্মকাণ্ড, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বিএনপির সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে তাঁদের মধ্যে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, মূলত সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেই তারেক রহমান লন্ডন থেকে মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেছেন সৌদি আরবে। বিএনপির বিভি
ন্ন পর্যায়ের কয়েকজন নেতা জানান, মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও শিগগিরই দলের জাতীয় কাউন্সিল করার বিষয়ে আলোচনা হবে মা-ছেলের মধ্যে। ঈদের পর সরকারবিরোধী আন্দোলনের যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সেই আন্দোলনের কৌশল ও রূপরেখা কী হবে, তা নিয়েও তাঁদের মধ্যে কথা হবে। সৌদি আরব থেকে ফেরার পর খালেদা জিয়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জোটের শরিক দলের নেতাদের নিয়েও পর্যায়ক্রমে বৈঠক করবেন। এরপর সরকারবিরোধী আন্দোলনের রূপরেখাও তৈরি করা হবে। এর পরই আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, তারেক রহমান তাঁর স্ত্রী জোবায়দা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে লন্ডন থেকে আগেই দুবাই পৌঁছান। খালেদা জিয়া গত শনিবার রাতে ঢাকা থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা দিয়ে দুবাই পৌঁছান। পরে তাঁরা সবাই দুবাই বিমানবন্দর থেকে একই ফ্লাইটে মদিনায় পৌঁছান। বিভিন্ন মামলা মাথায় নিয়ে ছয় বছর ধরে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে রয়েছেন তারেক রহমান। ২০০৮ সালে লন্ডন যাওয়ার পর মা-ছেলের এটা দ্বিতীয় সাক্ষাৎ। এর আগে খালেদা জিয়া যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার পথে লন্ডনে যাত্রাবিরতিকালে তারেকের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল। বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, এবার ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে যাওয়ায় তাঁদের সাক্ষাতে ভিন্নমাত্রা যোগ হয়েছে। মা-ছেলে কিছুটা হলেও বাংলাদেশের সরকার, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নিজ দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করার সুযোগ পাবেন। এর আগে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাওয়ার কথা ছিল। আর লন্ডন থেকে তারেক রহমান গিয়েছিলেন মালয়েশিয়া। তখন সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য সিঙ্গাপুর যাওয়ার কথা ছিল তারেক রহমান ও আরাফাত রহমানের। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে খালেদা জিয়া সিঙ্গাপুর সফর বাতিল করায় তারেক রহমানের সে মিশন সফল হয়নি। এদিকে দলের বিভিন্ন সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার সঙ্গে দলের অনেকেই সৌদি আরব যাননি। অনেকে অন্য ফ্লাইটে সৌদি আরবে ওমরাহ করতে গেছেন। সৌদি আরব যাওয়ার পর তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করবেন। এসব নেতার একটাই টার্গেট- ওমরাহ পালনের পাশাপাশি তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করা। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে নগর বিএনপির প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ডে কমিটি গঠনের সময়সীমা বেধে দেওয়া হয়েছে। এরপর হবে মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি। এ ছাড়া দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটি, যুবদল, ছাত্রদল, মহিলা দল, কৃষক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, জাসাসসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের কমিটি গঠন করা হবে। এসব কমিটিতে পদ পাওয়ার জন্য তারেক রহমানের নজর কাড়তে চান নেতারা। যাঁর সামর্থ্য আছে সেই নেতা লন্ডন গিয়েও তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য তদবির চালান। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরপর পর্যায়ক্রমে দলের নির্বাহী কমিটিসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটিও হবে। জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে দলের নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হবে। হয়তো এসব বিষয় নিয়ে সৌদি আরবে সুযোগ-সময় হলে তারেক রহমানের সঙ্গে খালেদা জিয়া পরামর্শ করতে পারেন। গত শনিবার রাতে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি বিমানে সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন খালেদা জিয়া। দুবাই থেকে একই বিমানে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন তারেক রহমান, তাঁর স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান। এর আগে ২০১১ সালে লন্ডনে ছেলের সঙ্গে দেখা হয়েছিল খালেদা জিয়ার। খালেদা জিয়ার প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান জানান, স্থানীয় সময় শনিবার রাত সাড়ে ৩টায় এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তাঁরা মদিনার আমির মুহাম্মদ বিন আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। সৌদি আরব বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিমানবন্দরে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে স্বাগত জানান। পরে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় দারুল আমান হোটেলে। বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের আমন্ত্রণে এই সফরে রাজকীয় অতিথি হিসেবে সৌদি আরবে অবস্থান করবেন খালেদা জিয়া ও তাঁর সফরসঙ্গীরা। জানা গেছে, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুই দিন মদিনায় অবস্থান করবেন। মঙ্গলবার মদিনা থেকে বিমানে জেদ্দা এবং ওমরাহ পালন করতে সেখান থেকে সড়কপথে মক্কায় যাবেন তাঁরা। খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন তাঁর প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ব্যক্তিগত আলোকচিত্রী নূর উদ্দিন আহমেদ নুরু, বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক শরীফ শাহ কামাল তাজ, সৌদি আরবে বিএনপি চেয়াপারসনের বিশেষ প্রতিনিধি এনামুল হক চৌধুরী।

No comments:

Post a Comment