্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলির কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বছরের ২১ মে থেকে এই তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছিল। তদন্তে তাঁদের বিরুদ্ধে যে আটটি অভিযোগ পাওয়া গেছে, তার মধ্যে চারটিতে শুধু সিরাজুল হকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। দুটি অভিযোগে লতিফ তালুকদার ও আকরাম হোসেনের যৌথ সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। বাকি দুটি অভিযোগে তিনজনেরই সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়া গেছে। তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই তিনজনই একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতা করার জন্য রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। খুলনার আনসার ক্যাম্পে পাকিস্তানি সেনাদের কাছে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তাঁরা বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় রাজাকার ক্যাম্প স্থাপন করে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্মান্তরিত করাসহ নানা ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ করতে থাকেন। তদন্তে তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পক্ষে প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, একাত্তরের ১৩ মে বাগেরহাট সদর থানার রণজিৎপুর গ্রামে ৪০-৫০ জন হিন্দুকে হত্যা, ২১ মে রামপালের ডাকরা কালীমন্দিরে ৬০০-৭০০ হিন্দুকে গণহত্যা, ১৮ জুন সদর থানার বেসরগাতী ও কান্দাপাড়া এলাকায় ১৯ জনকে হত্যা এবং ১৪ অক্টোবর সদর থানার চুলকাঠিতে সাতজনকে হত্যার সঙ্গে সিরাজুল হকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তদন্ত সংস্থার সহ-সমন্বয়ক এম সানাউল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালের নৃশংসতার জন্য সিরাজুল হক ‘সিরাজ কসাই’ নামে পরিচিতি পান। একাত্তরে প্রতিদিন সকালে তিনি মানুষ হত্যা না করে সকালের নাশতা করতেন না। ‘সিরাজ মাস্টার’ নামেও পরিচিত সিরাজুল হককে গ্রেপ্তারের পর এলাকার মানুষ তাঁকে দেখতে গিয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, একাত্তরের ৫ নভেম্বর কচুয়ার শাঁখারীকাঠি হাটে ৪২ জনকে হত্যা এবং ২২ নভেম্বর কচুয়া সদরে পাঁচজনকে হত্যার সঙ্গে তাঁদের তিনজনেরই সংশ্লিষ্টতা মিলেছে। একাত্তরের জুলাই মাসের শেষে শাঁখারীকাঠি ও আশপাশের এলাকায় ২০০ হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করা এবং ১৩ ডিসেম্বর এক মুক্তিযোদ্ধাকে আটকে রেখে নির্যাতন করে হত্যার সঙ্গে লতিফ তালুকদার ও আকরাম হোসেনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এই তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হেলালউদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সিরাজ মাস্টারসহ তিনজনই একাত্তরে মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে সিরাজ জানিয়েছেন, পরে তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন, তবে কোনো পদ ছিল না। বাকি দুজন কেউ রাজনীতিতে যুক্ত হননি। তদন্ত সংস্থা জানায়, গত ১০ জুন এই তিনজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে ওই রাতেই আবদুল লতিফ তালুকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। আকরাম হোসেন এলাকা ছেড়ে পালান, ২০ জুন তাঁকে রাজশাহী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর আত্মগোপনে থাকা সিরাজুল হক গ্রেপ্তার হন ২১ জুলাই বাগেরহাট সদর থানার ডেমা গ্রাম থেকে। তাঁরা তিনজনই এখন কারাগারে আছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ৬৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Tuesday, August 26, 2014
সিরাজ, লতিফ, আকরামের বিরুদ্ধে আট অভিযোগ:প্রথম অালো
্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলির কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বছরের ২১ মে থেকে এই তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছিল। তদন্তে তাঁদের বিরুদ্ধে যে আটটি অভিযোগ পাওয়া গেছে, তার মধ্যে চারটিতে শুধু সিরাজুল হকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। দুটি অভিযোগে লতিফ তালুকদার ও আকরাম হোসেনের যৌথ সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। বাকি দুটি অভিযোগে তিনজনেরই সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়া গেছে। তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই তিনজনই একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতা করার জন্য রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। খুলনার আনসার ক্যাম্পে পাকিস্তানি সেনাদের কাছে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তাঁরা বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় রাজাকার ক্যাম্প স্থাপন করে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্মান্তরিত করাসহ নানা ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ করতে থাকেন। তদন্তে তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পক্ষে প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, একাত্তরের ১৩ মে বাগেরহাট সদর থানার রণজিৎপুর গ্রামে ৪০-৫০ জন হিন্দুকে হত্যা, ২১ মে রামপালের ডাকরা কালীমন্দিরে ৬০০-৭০০ হিন্দুকে গণহত্যা, ১৮ জুন সদর থানার বেসরগাতী ও কান্দাপাড়া এলাকায় ১৯ জনকে হত্যা এবং ১৪ অক্টোবর সদর থানার চুলকাঠিতে সাতজনকে হত্যার সঙ্গে সিরাজুল হকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তদন্ত সংস্থার সহ-সমন্বয়ক এম সানাউল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালের নৃশংসতার জন্য সিরাজুল হক ‘সিরাজ কসাই’ নামে পরিচিতি পান। একাত্তরে প্রতিদিন সকালে তিনি মানুষ হত্যা না করে সকালের নাশতা করতেন না। ‘সিরাজ মাস্টার’ নামেও পরিচিত সিরাজুল হককে গ্রেপ্তারের পর এলাকার মানুষ তাঁকে দেখতে গিয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, একাত্তরের ৫ নভেম্বর কচুয়ার শাঁখারীকাঠি হাটে ৪২ জনকে হত্যা এবং ২২ নভেম্বর কচুয়া সদরে পাঁচজনকে হত্যার সঙ্গে তাঁদের তিনজনেরই সংশ্লিষ্টতা মিলেছে। একাত্তরের জুলাই মাসের শেষে শাঁখারীকাঠি ও আশপাশের এলাকায় ২০০ হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করা এবং ১৩ ডিসেম্বর এক মুক্তিযোদ্ধাকে আটকে রেখে নির্যাতন করে হত্যার সঙ্গে লতিফ তালুকদার ও আকরাম হোসেনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এই তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হেলালউদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সিরাজ মাস্টারসহ তিনজনই একাত্তরে মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে সিরাজ জানিয়েছেন, পরে তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন, তবে কোনো পদ ছিল না। বাকি দুজন কেউ রাজনীতিতে যুক্ত হননি। তদন্ত সংস্থা জানায়, গত ১০ জুন এই তিনজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে ওই রাতেই আবদুল লতিফ তালুকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। আকরাম হোসেন এলাকা ছেড়ে পালান, ২০ জুন তাঁকে রাজশাহী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর আত্মগোপনে থাকা সিরাজুল হক গ্রেপ্তার হন ২১ জুলাই বাগেরহাট সদর থানার ডেমা গ্রাম থেকে। তাঁরা তিনজনই এখন কারাগারে আছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ৬৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment