২০০টি মামলা হয়। এতে নামে এক হাজার ৪০০ এবং বেনামে কয়েক হাজার লোককে আসামি করা হয়। তবে এর মধ্যে একই ব্যক্তি একাধিক মামলার আসামি আছেন। গত সাত মাসে ৭০টি মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ২১ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। মির্জা ফখরুলকে ৪৭টি মামলায় আসামি করা হয়েছে। ১৯টি মামলার বিচার শুরু হয়েছে। বিএনপির একাধিক নেতা প্রথম আলোর কাছে দাবি করেছেন, নতুন করে আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ার পর সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা মামলাগুলোয় দ্রুত অভিযোগপত্র দিচ্ছে। ঢাকায় গত এক মাসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ১২ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। চার মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারও শুরু হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, সরকার নিয়ন্ত্রণমূলক সম্প্রচার নীতিমালা করে, বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে, বিরোধী দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নামে সাজানো মামলা দিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা পাকাপোক্ত করার নীলনকশা করছে। কিন্তু জনগণ কখনো এ স্বৈরাচারীব্যবস্থা মেনে নেয়নি, আগামী দিনেও মানবে না। সর্বশেষ গতকাল সোমবার রাজধানীর পল্টন ও বিমানবন্দর থানায় পুলিশের করা দুটি মামলায় বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও আমান উল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুকসহ জোটের ১৬১ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে গত বছরের ১১ মার্চ পল্টন থানায় দ্রুত বিচার আইনে করা একটি মামলায় ঢাকা মহানগর দ্রুত বিচার আদালতে গতকাল ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পৃথক আদালত ২০০৯ সালে বিমানবন্দর থানার একটি মামলায় আমান উল্লাহ আমানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। গতকাল আদালতে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী, আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক ও জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধানসহ ১০০ জন আসামি হাজির ছিলেন। তাঁরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান। বাকি ৪৭ জন হাজির না হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এর আগে গত রোববার বিএনপির ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্যসচিব হাবিব-উন-নবী খান, যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ ৫৮ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পুলিশের দেওয়া ৭০টি মামলার অভিযোগপত্র এবং তদন্তাধীন মামলাগুলোর তালিকা ঘেঁটে দেখা যায়, হাতে গোনা পাঁচ-ছয়জন ছাড়া বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর প্রায় সব শীর্ষস্থানীয় নেতার নামই আসামির তালিকায় আছে। এসব মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে আছেন আরও কয়েক হাজার নেতা-কর্মী। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘যখনই আন্দোলনের কথা বলা হয়, তখনই সরকার পুরোনো মিথ্যা মামলাগুলো সচল করায়, সেগুলোর চার্জশিট দেওয়ায়, আদালত তা গ্রহণ করেন—এসব সরকারের পুরোনো রাজনৈতিক অপকৌশল।’ বিএনপির নেতাদের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপির কি তাহলে আদালতের ওপর আস্থা নেই? এসব মামলা যদি মিথ্যা হয় তাহলে বিএনপি হয় লিগ্যালি (আইনগতভাবে), না হয় পলিটিক্যালি ফেস (রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা) করুক। তাদের তো ৫০০ লোক নিয়ে মিটিং করার ক্ষমতা বা সাহস কোনোটিই আছে বলে আমার মনে হয় না।’ ঢাকা ছাড়া চট্টগ্রাম, বরিশালেও একাধিক মামলায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধ অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। তবে বাইরে সারা দেশে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের নেতাদের বিরুদ্ধে কত মামলা হয়েছে, এর পূর্ণাঙ্গ হিসাব বিএনপির দপ্তর থেকে পাওয়া যায়নি।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Tuesday, August 26, 2014
সাত মাসে ৭০ মামলায় অভিযোগপত্র:প্রথম অালো
২০০টি মামলা হয়। এতে নামে এক হাজার ৪০০ এবং বেনামে কয়েক হাজার লোককে আসামি করা হয়। তবে এর মধ্যে একই ব্যক্তি একাধিক মামলার আসামি আছেন। গত সাত মাসে ৭০টি মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ২১ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। মির্জা ফখরুলকে ৪৭টি মামলায় আসামি করা হয়েছে। ১৯টি মামলার বিচার শুরু হয়েছে। বিএনপির একাধিক নেতা প্রথম আলোর কাছে দাবি করেছেন, নতুন করে আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ার পর সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা মামলাগুলোয় দ্রুত অভিযোগপত্র দিচ্ছে। ঢাকায় গত এক মাসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ১২ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। চার মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারও শুরু হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, সরকার নিয়ন্ত্রণমূলক সম্প্রচার নীতিমালা করে, বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে, বিরোধী দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নামে সাজানো মামলা দিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা পাকাপোক্ত করার নীলনকশা করছে। কিন্তু জনগণ কখনো এ স্বৈরাচারীব্যবস্থা মেনে নেয়নি, আগামী দিনেও মানবে না। সর্বশেষ গতকাল সোমবার রাজধানীর পল্টন ও বিমানবন্দর থানায় পুলিশের করা দুটি মামলায় বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও আমান উল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুকসহ জোটের ১৬১ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে গত বছরের ১১ মার্চ পল্টন থানায় দ্রুত বিচার আইনে করা একটি মামলায় ঢাকা মহানগর দ্রুত বিচার আদালতে গতকাল ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পৃথক আদালত ২০০৯ সালে বিমানবন্দর থানার একটি মামলায় আমান উল্লাহ আমানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। গতকাল আদালতে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী, আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক ও জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধানসহ ১০০ জন আসামি হাজির ছিলেন। তাঁরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান। বাকি ৪৭ জন হাজির না হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এর আগে গত রোববার বিএনপির ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্যসচিব হাবিব-উন-নবী খান, যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ ৫৮ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পুলিশের দেওয়া ৭০টি মামলার অভিযোগপত্র এবং তদন্তাধীন মামলাগুলোর তালিকা ঘেঁটে দেখা যায়, হাতে গোনা পাঁচ-ছয়জন ছাড়া বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর প্রায় সব শীর্ষস্থানীয় নেতার নামই আসামির তালিকায় আছে। এসব মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে আছেন আরও কয়েক হাজার নেতা-কর্মী। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘যখনই আন্দোলনের কথা বলা হয়, তখনই সরকার পুরোনো মিথ্যা মামলাগুলো সচল করায়, সেগুলোর চার্জশিট দেওয়ায়, আদালত তা গ্রহণ করেন—এসব সরকারের পুরোনো রাজনৈতিক অপকৌশল।’ বিএনপির নেতাদের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপির কি তাহলে আদালতের ওপর আস্থা নেই? এসব মামলা যদি মিথ্যা হয় তাহলে বিএনপি হয় লিগ্যালি (আইনগতভাবে), না হয় পলিটিক্যালি ফেস (রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা) করুক। তাদের তো ৫০০ লোক নিয়ে মিটিং করার ক্ষমতা বা সাহস কোনোটিই আছে বলে আমার মনে হয় না।’ ঢাকা ছাড়া চট্টগ্রাম, বরিশালেও একাধিক মামলায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধ অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। তবে বাইরে সারা দেশে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের নেতাদের বিরুদ্ধে কত মামলা হয়েছে, এর পূর্ণাঙ্গ হিসাব বিএনপির দপ্তর থেকে পাওয়া যায়নি।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment