Wednesday, September 3, 2014

বিজয় দিবসের উপহার স্মার্ট এনআইডি কার্ড:কালের কন্ঠ

এবারের বিজয় দিবসে জাতিকে স্মার্ট এনআইডি কার্ড (উন্নত জাতীয় পরিচয়পত্র) উপহার দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ উদ্দেশ্যে এ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বরের ১৪ তারিখ পর্যন্ত বিদ্যমান এনআইডি সংশোধন, এর ব্যবহার ও সংরক্ষণ সম্পর্কে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা চলবে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রাম বা বিসিসিপি নামের একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানও নিয়োগ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচন
কমিশনের বৈঠকে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এসএমএস, টিভিস্ক্রল, রোমান ব্যানার, প্রেস অ্যাড, টিভি অ্যাড, বিলবোর্ড, থিম সংয়ের খসড়া উপস্থাপন করে কমিশনের অনুমোদন নেওয়া হয়। খসড়া প্রচারণায় ‘এবারের বিজয় দিবসে জাতির জন্য উপহার স্মার্ট এনআইডি কার্ড’ কথাগুলো উল্লেখ করে বিজয় দিবসভিত্তিক চিত্র ব্যবহার করা হয়েছে। থিম সং হলো- কোটি মানুষের ভিড়ে/আমি যাবো না হারিয়ে/দেশে কিংবা বিদেশে/আমার পরিচয় যাবে না মিশে। স্মার্ট ন্যাশনাল আইডি কার্ড আমার পরিচয় রাখবে ধরে...। এ কার্ড আমার সুরক্ষা/এ কার্ড আমার সম্মান/সব কাজে সব স্থানে রাখবে প্রমাণ। কমিশন সূত্র জানায়, বিজয় দিবসে স্মার্ট এনআইডি কার্ড উপহার দেওয়ার পরিকল্পনার পাশাপাশি ১৮ বছরের কম বয়সীদেরও এনআইডি কার্ড কিভাবে দেওয়া যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। গত ২১ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব দুই সপ্তাহের মধ্যে কমিশনে উপস্থাপনের জন্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন বিধিমালায়ও ১৮ বছরের কম বয়সী নাগরিকদের বা যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য নয় তাদেরও এনআইডি কার্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। কমিশন সূত্র জানায়, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে এই স্মার্ট এনআইডি কার্ড বিতরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। আর ব্যাপকহারে বিতরণ শুরু হতে পারে জানুয়ারি থেকে। তবে বিষয়টি নির্ভর করছে বিশ্বব্যাংকের অনুমোদনের ওপর। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় এ-সংক্রান্ত প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নত জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির জন্য দরপত্র আহ্বান ও তা গ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। মূল্যায়নের বিষয়টি বিশ্বব্যাংকের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায়। এটি সম্পন্ন হলেই স্মার্ট এনআইডি কার্ড তৈরি শুরু হয়ে যাবে। নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হাফিজ এ বিষয়ে বলেন, স্মার্ট এনআইডি কার্ড তৈরির জন্য দরপত্র মূল্যায়নের কাজ কমিশন এবং বিশ্বব্যাংকের স্থানীয় ও আঞ্চলিক অফিস সম্পন্ন করেছে। বিষয়টি আটকে আছে বিশ্বব্যাংকের কেন্দ্রীয় অফিসে। বিশ্বব্যাংকের পরামর্শ অনুসারে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রবিধিমালাও হওয়ার পথে। এটি হলে দরপত্র মূল্যায়নে বিশ্বব্যাংকের সম্মতি পেতে আর বাধা থাকবে না। বিজয় দিবসে স্মার্ট এনআইডি কার্ড দেওয়া সম্ভব হবে কি না এ প্রশ্নে মোহাম্মদ আবু হাফিজ বলেন, ‘আশা করছি এটা সম্ভব হবে।’ ১৮ বছরের কম বয়সীদের এনআইডি কার্ড দেওয়ার বিষয়ে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, এনআইডি কার্ড শুধু ভোটাররা পাবেন তা হতে পারে না। ভোটার হওয়ার যোগ্য নয় যারা- এমন অনেকেই এ দেশের নাগরিক। সে কারণে প্রথম পর্যায়ে ১৬-১৭ বছর বয়সীদের এ পরিচয়পত্র দেওয়া যেতে পারে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সরকার ২০১১ সালের ২১ জুলাই বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহান্সড অ্যাক্সেস টু সার্ভিস’ (আইডিয়া) প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১৯৫ মিলিয়ন ইউএস ডলারের  ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করে। এ চুক্তি সম্পর্কে ওই দিন বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রকল্পটির মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের ক্ষেত্রে একটি পূর্ণাঙ্গ ও নির্ভুল ডাটাবেইস ও নেটওয়ার্ক তৈরি হবে, যা সব নাগরিককে স্বচ্ছভাবে সেবা প্রদানের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। এ ছাড়া সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাসমূহ সহজে ও দ্রুত ব্যক্তিপরিচয় নিশ্চিত করতে পারবে। প্রকল্পটির আওতায় আনুমানিক ৯ কোটি অত্যাধুনিক জাতীয় পরিচয়পত্র ছাপানো হবে, যা ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী নাগরিকদের দেওয়া হবে। বিশ্বব্যাংকের অঙ্গ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (আইডিএ) থেকে প্রাপ্ত সুদমুক্ত এই ঋণের মেয়াদ ১০ বছরের রেয়াতসহ ৪০ বছর। এতে সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য হবে ৭৫ শতাংশ।

No comments:

Post a Comment