এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে র্যাব। র্যাব বলেছে, তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদস্য। র্যাব সূত্রে জানা গেছে, আটকের পর জাহাঙ্গীর র্যাবকে জানিয়েছেন, এ ঘটনায় আরও দুজন পুলিশ কর্মকর্তা জড়িত। তাঁরা পুলিশের বিশেষ শাখার উপপরিদর্শক (এসআই)। তাঁদের একজন অপর একটি ঘটন
ায় বরখাস্ত আছেন। গতকাল রাতে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার উপপরিচালক রুম্মান আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, জাহাঙ্গীরকে ধানমন্ডি থানায় সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়ে ডিএমপির পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। র্যাব কর্মকর্তারা জানান, আবদুল মান্নান নামের এক ব্যবসায়ী র্যাব-২-এর কাছে অভিযোগ করেন, সম্প্রতি তিন ব্যক্তি তাঁকে রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে অপহরণ করে একটি গাড়িতে ওঠান। এ সময় তাঁরা ৬৫ লাখ টাকা দাবি করেন। তিন ব্যক্তির সঙ্গে এক নারীও ছিলেন। অপহরণকারীরা ভয়ভীতি দেখিয়ে ও কৌশলে তাঁর (মান্নান) ধানমন্ডির বাসা থেকে ব্যাংকের কয়েকটি চেক বই আনান। কয়েকটি চেকে জোরপূর্বক তাঁর সই নেওয়া হয়। একটি চেকের মাধ্যমে ওই দিনই গুলশানের একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে দেড় লাখ টাকা উত্তোলন করেন অপহরণকারীরা। মান্নানের অভিযোগ, ব্যাংক থেকে টাকা ওঠানোর পর অপহরণকারীরা তাঁকে একটি ভবনে নিয়ে যান। সেখানে ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন রাখা ছিল। মাইক্রোফোনে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের স্টিকার ছিল। অপহরণকারীরা ক্যামেরার সামনে তাঁর কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেন যে, তিনি ওই নারীর কাছ থেকে ৬৫ লাখ টাকা নিয়েছেন। রাতে সেখান থেকে তাঁকে নেওয়া হয় শাহবাগ থানায়। সেখানে অপহরণকারীরা ওই নারীকে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে বলেন। কিন্তু থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা তাঁদের জানান, এ ধরনের অভিযোগে জিডি নয়, মামলা করতে হয়। এরপর মামলা কিংবা জিডি না করেই ওই নারীসহ অপহরণকারীরা তাঁকে নিয়ে থানা থেকে বেরিয়ে আসেন। এক দিন পর রাত দুইটার দিকে কারওয়ান বাজারে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। র্যাব কর্মকর্তারা জানান, এ অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে র্যাব। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ধানমন্ডি এলাকা থেকে র্যাব-২-এর একটি দল জাহাঙ্গীরকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি ডিএমপির প্রটেকশন বিভাগে কর্মরত। ঘটনার ব্যাপারে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। র্যাব জানায়, ওই নারী মান্নানের পূর্বপরিচিত। বিদেশে থাকেন। মাঝে মাঝে দেশে আসেন। তাঁর জায়গা-জমিসংক্রান্ত কোনো ঝামেলার কারণে মান্নানের শরণাপন্ন হন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, মান্নান তাঁর কাছ থেকে ৬৫ লাখ টাকা নিয়েছেন। ফেরত পেতেই ওই নারী ওই তিনজনের আশ্রয় নিয়েছিলেন।
No comments:
Post a Comment