ি) শীর্ষক এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। আইএমইডি বলছে, সিস্টেম লসের জন্য আর্থিক ক্ষতি রোধ করতে দ্রুত ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস সরবরাহ লাইন সংস্কার, অবৈধ সংযোগ বন্ধ এবং সঠিকভাবে গ্যাসের বিল তৈরি করতে হবে। এই তিনটি কারণ তিতাসকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। গত বছরের শেষ দিকে প্রকল্পটির কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য দুটি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (ই. জেন কনসালটেন্টস লি. ও ক্রিয়েটিভ কনসাল্টিং লি.) সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় আইএমইডি। চলতি বছরের শুরুর দিকে মাঠপর্যায়ের গবেষণা শেষে জুনে প্রতিবেদন চূড়ান্ত হয়। পরে প্রতিবেদনটি তিতাস গ্যাসসহ অংশীজনদের দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য রাজধানী ঢাকার পাশের দুটি অঞ্চলকে বেছে নেওয়া হয়। এগুলো হলো নারায়ণগঞ্জ সদর, ফতুল্লা ও মুন্সিগঞ্জ (অঞ্চল-১) এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ (অঞ্চল-২)। এসব জায়গায় গৃহস্থালি গ্রাহকের পাশাপাশি ৩৮টি সিএনজি স্টেশন, ৩০৩টি ক্যাপটিভ পাওয়ার জেনারেশন স্টেশন এবং ৭১৫টি রি-রোলিং মিলে সংযোগ রয়েছে। বাণিজ্যিক ও গৃহস্থালিভাবে গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণ বেশি হওয়ায় গবেষণার জন্য এ এলাকা বেছে নেওয়া হয়। আইএমইডির প্রতিবেদন বলছে, ২০১৪ সালের প্রথম তিন মাসে অঞ্চল-১-এ ১৯ কোটি ২০ লাখ ঘনমিটার গ্যাস সরবরাহ হয়। তবে ওই তিন মাসে বিল করা হয়েছে ১৭ কোটি ৩৭ লাখ ঘনমিটার গ্যাসের। একই সময়ে অঞ্চল-২-এ ৩০ কোটি ৪১ লাখ ঘনমিটার গ্যাস সরবরাহ করা হলেও ২৭ কোটি ৮৯ লাখ ঘনমিটারের বিল করা হয়েছে। অর্থাৎ, দুটি অঞ্চলে চার কোটি ৩৫ লাখ ঘনমিটার গ্যাসের দাম পাওয়া যায়নি, যা সরবরাহ করা গ্যাসের ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আইএমইডি মাঠপর্যায়ের গবেষণায় সিস্টেম লসের প্রধান তিন ধরনের কারণ পেয়েছে। প্রথমত, ত্রুটিপূর্ণ মিটার ও মিটার টেম্পারিং; দ্বিতীয়ত, ত্রুটিপূর্ণ, ছিদ্র বা ফুটো লাইন থেকে গ্যাসের অপচয় এবং তৃতীয়ত, অবৈধ সংযোগ। গবেষণালব্ধ ফলের ভিত্তিতে আইএমইডি বলছে, ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশের মধ্যে প্রায় ৬ শতাংশ সিস্টেম লস হয়েছে অবৈধ সংযোগের জন্য। আইএমইডি হিসাব করে বলছে, প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ছয় টাকা হলে এ দুই অঞ্চলে প্রথম তিন মাসে ২৬ কোটি ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এটিকে বার্ষিক হিসাবে পরিণত করা হলে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ১০৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। সিস্টেম লসের কারণে সারা দেশে এভাবেই বিপুল আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। আইএমইডির প্রতিবেদন আরও বলছে, সিস্টেম লস কমানো প্রকল্পের আওতায় তিতাস গ্যাসের ১৪০ জন কর্মীর দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তবে তা কাজে লাগেনি। কারণ, এসব কর্মীকে হয় অন্য প্রতিষ্ঠানে বদলি করা হয়েছে অথবা তাঁরা ভালো সুযোগ পেয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। অবশ্য তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নওশাদ ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গবেষণা এলাকায় গ্যাসের সরবরাহ ও ব্যবহারের হিসাব আইএমইডি ঠিকমতো নিতে পারেনি। আমাদের সরবরাহ লাইনের ক্ষমতা কত, সেটা আমরা জানি। কিন্তু এলাকাভিত্তিক গ্যাস সরবরাহ ও ব্যবহারের কোনো পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই। আইএমইডি কিসের ভিত্তিতে এসব তথ্য জোগাড় করে সিস্টেম লস হিসাব করেছে, তা আমরা জানি না।’ অবৈধ সংযোগের বিষয়ে আইএমইডির সুপারিশ হলো এগুলোকে বৈধ করে নেওয়া। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যদি ১০ হাজার গৃহস্থালির সংযোগ বৈধ করা হয়, তবে ৪৫০ টাকা করে বছরে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব আয় হবে।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Saturday, December 6, 2014
বছরে তিতাসের ক্ষতি ১০০ কোটি টাকা:প্রথম অালো
ি) শীর্ষক এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। আইএমইডি বলছে, সিস্টেম লসের জন্য আর্থিক ক্ষতি রোধ করতে দ্রুত ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস সরবরাহ লাইন সংস্কার, অবৈধ সংযোগ বন্ধ এবং সঠিকভাবে গ্যাসের বিল তৈরি করতে হবে। এই তিনটি কারণ তিতাসকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। গত বছরের শেষ দিকে প্রকল্পটির কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য দুটি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (ই. জেন কনসালটেন্টস লি. ও ক্রিয়েটিভ কনসাল্টিং লি.) সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় আইএমইডি। চলতি বছরের শুরুর দিকে মাঠপর্যায়ের গবেষণা শেষে জুনে প্রতিবেদন চূড়ান্ত হয়। পরে প্রতিবেদনটি তিতাস গ্যাসসহ অংশীজনদের দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য রাজধানী ঢাকার পাশের দুটি অঞ্চলকে বেছে নেওয়া হয়। এগুলো হলো নারায়ণগঞ্জ সদর, ফতুল্লা ও মুন্সিগঞ্জ (অঞ্চল-১) এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ (অঞ্চল-২)। এসব জায়গায় গৃহস্থালি গ্রাহকের পাশাপাশি ৩৮টি সিএনজি স্টেশন, ৩০৩টি ক্যাপটিভ পাওয়ার জেনারেশন স্টেশন এবং ৭১৫টি রি-রোলিং মিলে সংযোগ রয়েছে। বাণিজ্যিক ও গৃহস্থালিভাবে গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণ বেশি হওয়ায় গবেষণার জন্য এ এলাকা বেছে নেওয়া হয়। আইএমইডির প্রতিবেদন বলছে, ২০১৪ সালের প্রথম তিন মাসে অঞ্চল-১-এ ১৯ কোটি ২০ লাখ ঘনমিটার গ্যাস সরবরাহ হয়। তবে ওই তিন মাসে বিল করা হয়েছে ১৭ কোটি ৩৭ লাখ ঘনমিটার গ্যাসের। একই সময়ে অঞ্চল-২-এ ৩০ কোটি ৪১ লাখ ঘনমিটার গ্যাস সরবরাহ করা হলেও ২৭ কোটি ৮৯ লাখ ঘনমিটারের বিল করা হয়েছে। অর্থাৎ, দুটি অঞ্চলে চার কোটি ৩৫ লাখ ঘনমিটার গ্যাসের দাম পাওয়া যায়নি, যা সরবরাহ করা গ্যাসের ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আইএমইডি মাঠপর্যায়ের গবেষণায় সিস্টেম লসের প্রধান তিন ধরনের কারণ পেয়েছে। প্রথমত, ত্রুটিপূর্ণ মিটার ও মিটার টেম্পারিং; দ্বিতীয়ত, ত্রুটিপূর্ণ, ছিদ্র বা ফুটো লাইন থেকে গ্যাসের অপচয় এবং তৃতীয়ত, অবৈধ সংযোগ। গবেষণালব্ধ ফলের ভিত্তিতে আইএমইডি বলছে, ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশের মধ্যে প্রায় ৬ শতাংশ সিস্টেম লস হয়েছে অবৈধ সংযোগের জন্য। আইএমইডি হিসাব করে বলছে, প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ছয় টাকা হলে এ দুই অঞ্চলে প্রথম তিন মাসে ২৬ কোটি ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এটিকে বার্ষিক হিসাবে পরিণত করা হলে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ১০৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। সিস্টেম লসের কারণে সারা দেশে এভাবেই বিপুল আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। আইএমইডির প্রতিবেদন আরও বলছে, সিস্টেম লস কমানো প্রকল্পের আওতায় তিতাস গ্যাসের ১৪০ জন কর্মীর দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তবে তা কাজে লাগেনি। কারণ, এসব কর্মীকে হয় অন্য প্রতিষ্ঠানে বদলি করা হয়েছে অথবা তাঁরা ভালো সুযোগ পেয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। অবশ্য তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নওশাদ ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গবেষণা এলাকায় গ্যাসের সরবরাহ ও ব্যবহারের হিসাব আইএমইডি ঠিকমতো নিতে পারেনি। আমাদের সরবরাহ লাইনের ক্ষমতা কত, সেটা আমরা জানি। কিন্তু এলাকাভিত্তিক গ্যাস সরবরাহ ও ব্যবহারের কোনো পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই। আইএমইডি কিসের ভিত্তিতে এসব তথ্য জোগাড় করে সিস্টেম লস হিসাব করেছে, তা আমরা জানি না।’ অবৈধ সংযোগের বিষয়ে আইএমইডির সুপারিশ হলো এগুলোকে বৈধ করে নেওয়া। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যদি ১০ হাজার গৃহস্থালির সংযোগ বৈধ করা হয়, তবে ৪৫০ টাকা করে বছরে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব আয় হবে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment