Monday, January 12, 2015

রাঙামাটিতে সান্ধ্য আইন:প্রথম অালো

রাঙামাটি শহরে গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে আজ সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত সান্ধ্য আইন (কারফিউ) জারি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষে শহরে মাইকযোগে বিষয়টি প্রচার করা হয়। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুকে কেন্দ্র করে চলা উত্তেজনার মধ্যে গতকাল সন্ধ্যায় শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাঙালি ও আদিবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসক মো. শামসুল আরে
ফিন সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে সান্ধ্য আইন জারি করেন। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকযোগে পথচারীসহ সবাইকে বাড়িতে চলে যেতে বলা হয়। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণাও মাইকে প্রচার করা হয়। শহরের বিভিন্ন মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। গত শনিবার রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাঙামাটি পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এর পরও বিচ্ছিন্নভাবে সহিংস ঘটনা ঘটে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বেলা সাড়ে তিনটায় জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সভা হয়। জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি থেকে নির্বাচিত সাংসদ ঊষাতন তালুকদার, মহিলা সাংসদ ফিরোজা বেগম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, সেনাবাহিনীর রাঙামাটি জোনের অধিনায়ক লে. কর্নেল মালিক সামস্ উদ্দিন মুহাম্মদ মঈন, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অরুণ কান্তি চাকমা, পৌরসভার চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম চৌধুরীসহ মেডিকেল কলেজের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থানকারী রাজনৈতিক দলের নেতারা। বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা জানান, সভা চলাকালে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে খবর আসে, বনরূপা বাজারের পাহাড়ি-অধ্যুষিত এলাকায় বাঙালিরা আগুন লাগানোর চেষ্টা করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল ইমতিয়াজ এবং পরে সেনাবাহিনীর জোন অধিনায়ক ও পুলিশ সুপার সভা থেকে ঘটনাস্থলে চলে যান। এরপর আবার সভা শুরু হলে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে সহিংসতার খবর আসতে থাকে। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে খবর আসে কোতোয়ালি থানা থেকে মাত্র ৪০০ গজ দূরে আর্ট কাউন্সিল কলোনি ও আনন্দ বিহার এলাকায় হামলা হচ্ছে। এরপর খবর আসে ভেদভেদি এলাকায় বাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে। ওই নেতা জানান, একের পর এক সহিংসতার খবর আসতে শুরু করায় দ্রুত সভা শেষ করে জেলা প্রশাসক তাঁর কক্ষে দুই সাংসদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমতি পাওয়ার কথা উল্লেখ করে সান্ধ্য আইন ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক। আজ সকাল আটটা পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে বলে তিনি জানান।

No comments:

Post a Comment