Wednesday, March 11, 2015

দিন থমথম রাত ভয়ঙ্কর:কালের কন্ঠ

দিনের বেলাটা কোনো রকমে পার হলেও সূর্য ডুবতেই জেঁকে বসে আতঙ্ক। থমথম করে চারদিক। সন্ধ্যা নামতেই পাল্টে যায় চিত্র। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে রাত। রাস্তাঘাট, হাটবাজার শূন্য করে লোকজন ঘরে ঢুকে যায়। জরুরি প্রয়োজন হলেও নাশকতা আর হয়রানির ভয়ে ঘর ছাড়ে না তারা। বিভীষিকাময় এ জীবন পার করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মানুষ। গত ৬ জানুয়ারি থেকে বিএনপি-জামায়াত জোটের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধ আর হরতালের মধ্যে এ পর্যন্ত
শিবগঞ্জসহ জেলাজুড়ে শিশুসহ নিহত হয়েছে অন্তত আটজন। নাশকতার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত দুই মাসে আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ। এখন রাত নামলেই চলে চোরাগোপ্তা হামলা। রাতে যাত্রীবাহী গাড়ি না চলায় নাশকতাকারীরা টার্গেট করেছে পণ্যবাহী যানবাহন। প্রতিদিনই পেট্রলবোমার আগুনে পুড়ছে যান, পুড়ছে প্রাণ। বিশেষ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সোনামসজিদ স্থলবন্দর পর্যন্ত ৩১ কিলোমিটার এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার সড়কে প্রাণ হাতে নিয়ে নামতে হয় পণ্যবাহী যানের চালকদের। বন্দর অচল করে দিতে একের পর এক হামলা চলছে। দেশে নাশকতাপ্রবণ জেলাগুলোর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ অন্যতম। জামায়াত-শিবিরের ঘাঁটি শিবগঞ্জকে কেন্দ্র করেই জেলাজুড়ে চলে নাশকতা। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ব্যাপক সহিংসতা চালায় জামায়াত-শিবির। দীর্ঘদিন ধরে চলে তাদের তাণ্ডব। গত বছর ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। তবে সেই নির্বাচনের বর্ষপূতিকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এবার বিএনপি জোট অবরোধ ঘোষণার পরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার সেখানে যৌথ বাহিনী নামায়। বাহিনীর সদস্যরা প্রতিদিন অভিযানও চালাচ্ছেন। ইতিমধ্যে সন্দেহভাজন অনেকে ধরাও পড়েছে। তবে থামছে না সহিংসতা। কারণ হিসেবে স্থানীয়রা বলছে, যারা ধরা পড়েছে তারা হয়তো কেবল নাশকতার ফরমায়েশ বাস্তবায়ন করছে। যারা নাশকতার পরিকল্পনা করছে, অর্থের জোগান দিচ্ছে- তারা সবাই চিহ্নিত। তবে ধরা পড়ছে না কেউই। গত ৫ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত নাশকতার ঘটনায় শিবগঞ্জ থানায় ১১টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের আসামি করা হয়েছে। অথচ এ পর্যন্ত তাঁদের মধ্যে কেবল জামায়াতের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা ধরা পড়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, নাশকতা প্রতিরোধে এগিয়ে আসছে না উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। উল্টো দলীয় কোন্দলে তাদের জেরবার অবস্থা। নাশকতা ঠেকাতে কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় কমিটি করার নির্দেশ দেওয়া হলেও এ পর্যন্ত কোনো তৎপরতাই দেখা যাচ্ছে না। কেবল লোক দেখানো সভা-সমাবেশ আর মানববন্ধন করেই দায় সারছে তারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, আওয়ামী লীগের অনেকের বিরুদ্ধে নাশকতাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানির বিরুদ্ধেই এ অভিযোগ বেশি। ইতিমধ্যে উপজেলার ১৫ ইউনিয়নের মধ্যে ১৪ ইউনিয়েনের নেতা-কর্মীরাই এমপির বিরুদ্ধে অনাস্থার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযাগ দিয়েছে। সরেজমিন শিবগঞ্জ ঘুরে জানা যায়, প্রায় প্রতিদিনই একের পর এক হামলায় পুড়ছে যানবাহন। হতাহত হচ্ছে মানুষ। তবে নাশকতার পরিকল্পনাকারী, অর্থের জোগানদাতা ও নাশকতাকারীদের মধ্যে অধিকাংশই মূলত ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। তারা দিনের বেলা এলাকা পরিবর্তন করে একেক সময় একেক জায়গায় অবস্থান করছে। কখনো তারা ভারতীয় সীমান্তের কাছে পদ্মার চর এলাকায়, পাশের উপজেলা গোমস্তাপুরে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, নাচোল ও ভোলাহাটে গিয়েও অবস্থান নিচ্ছে। রাতের বেলা মোটরসাইকেল অথবা বাইসাইকেলে করে এসে সোনামসজিদ বন্দর রোড বা বন্দরেই বেশির ভাগ নাশকতা চালাচ্ছে। সীমান্ত এলাকার একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, দিনের বেলা সীমান্ত এলাকায় অপরিচিত লোকজনের আনাগোনা বাড়ছে। তাদের বেশির ভাগই সেখানে স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট) আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফা বলেন, 'শিবগঞ্জ থেকে জামায়াত-শিবিরের নেতারা গোমস্তাপুরে এসে আশ্রয় নিচ্ছে। রাতের বেলা শিবগঞ্জে গিয়ে নাশকতায় অংশ নিচ্ছে তারা। গোমস্তাপুরেও নাশকতা চালাচ্ছে। তাদের প্রতি নজর রাখতে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।' এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এসপি বসির আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, '৫ জুনায়ারির পর থেকে শিবগঞ্জে প্রায় ৩০টি যৌথ অভিযান হয়েছে। নাশকতায় জড়িত ও পরিকল্পনাকারী অনেককে আটকও করা হয়েছে। অভিযান এখনো চলছে। মূলত পোর্ট অচল করে দেওয়া, দেশকে জিম্মি করে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যেই বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা এসব নাশকতা চালাচ্ছে। তবে আমাদের যৌথ অভিযানের কারণে তারা এলাকা ছাড়া হয়েছে। এখন ভাড়াটিয়াদের দিয়ে এসব হামলা চালাচ্ছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।' দুই মাসে নাশকতায় নিহত ৮ : সাঈদীর রায়কে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি কানসাট পল্লীবিদ্যুৎ কার্যালয় পুড়িয়ে দেয় জামায়াত-শিবির। সোনামসজিদে নির্মাণাধীন পর্যটন মোটেলে হামলা চালিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুর রহমানকে হত্যা করে। সে দিন বড় ধরনের ২৮টি নাশকতা চালিয়ে আলোচনায় আসে শিবগঞ্জের জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের নাশকতায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীসহ অন্তত ২০ জন নিহত হয়। দশম সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূতি ঘিরে এবার ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির। মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছিল গত ৫ জানুয়ারি থেকেই। সে দিন দেশজুড়ে বিএনপি জোটের কালো পতাকা মিছিলকে কেন্দ্র করে শিবগঞ্জের কানসাট ইউনিয়নে পুলিশের গুলিতে জমসেদ আলী নামের এক বিএনপি কর্মী নিহত হন। ৯ জানুয়ারি কানসাটের বিশ্বনাথপুর বিএন বাজার এলাকায় দুর্বৃত্তদের হামলায় মুকুল বিশ্বাস (৩৫) নামে এক যুবলীগকর্মী নিহত হন। ১৫ জানুয়ারি শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা রুহুল আমিনের ছেলে রাজন আলী রকিকে (১৪) পিটিয়ে গুরুতর আহত করে শিবির ক্যাডাররা। দুই দিন পরে রকি মারা যায়। ১৬ জানুয়ারি র‌্যাবের সঙ্গে কথিত 'বন্দুকযুদ্ধে' ছাত্রদল নেতা মতিউর রহমান মন্টু (২২) নিহত হন। পরের দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিটি কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি আসাদুল্লাহ তুহিনকে আটকের পর অস্ত্র উদ্ধারে গেলে 'সড়ক দুর্ঘনায়' তিনি নিহত হন। ২০ ফেব্রুয়ারি শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মী আবুল কালাম আজাদকে (৪০) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। গত ৩ মার্চ রাতে সোনামসজিদ বন্দরে যাওয়ার পথে কাভার্ডভ্যানে পেট্রলবোমা হামলায় চালক শিপন মারা যান। পর দিন রাতে গোমস্তাপুরের রহনপুর-গোমস্তাপুর সড়কে আলুভর্তি ট্রাকে পেট্রলবোমা হামলায় চালক সেলিম রেজা (২৭) নিহত হন। নাশকতায় জড়িত যারা : অনুসন্ধানে জানা গেছে, শিবগঞ্জসহ পুরো চাঁপাইজুড়ে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের সাম্প্রতিক তাণ্ডবে যাঁরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জেলা জামায়াতের আমির ও শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কেরামত উল্লাহ, শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামীম কবির হেলিম, সাবেক মেয়র ও পৌরসভা জামায়াতের আমির জাফর আলী, কানসাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা তহুরুল ইসলাম, শিবগঞ্জের শ্যামপুর ইউপির চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা নুরুল হুদা, কানসাট ইউপি জামায়াতের ৩ নম্বর ওয়ার্ড নেতা আব্দুল মতিন, বিএনপি নেতা তাজিরুল ইসলাম, জামায়াতের রুকন ভুট্টু, কানসাট যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রনি, ওয়ার্ড সদস্য আব্দুস সামাদ, বিএনপি নেতা কাদির, জামায়াত নেতা মনিরুল ইসলাম, শিবিরের প্রশিক্ষণ দাতা জামায়াত নেতা ও সাবেক সেনা সদস্য মনিরুল ইসলাম, শিবগঞ্জ উপজেলা জামায়াত নেতা গোলাম আজম, বিএনপি নেতা সুজা উদ্দিন, ময়েজউদ্দিন, রেজাউল করিম, হান্টু, আইয়ুব আলী, জামায়াত নেতা মমিন মৌলভী, শিবির ক্যাডার এমরান আলী, বিএনপি নেতা মোস্তাক আলী, জামায়াতের নিপু রহমান, বিএনপি নেতা সুভাস, টুটুল, শফিকুল, রাকিব, ইসমাইল, আইউব আলীসহ শতাধিক নেতা-কর্মী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁদের মধ্যে এখন পর্যন্ত জাফর আলীকে ছাড়া আর কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। বাকি নেতাদের মধ্যে কারো কারো এমপি গোলাম রাব্বানি, তাঁর পরিবারের সদস্য এবং উপজেলার প্রভাবশালী নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সখ্য রয়েছে বলে অভিযোগও রয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলছে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সখ্যের কারণেই নাশকতার প্রধান হোতা জামায়াত-শিবিরের উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো নেতা-কর্মী আটক হয়নি। যেসব স্থানে চলছে নাশকতা : সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, সোনামসদিজ স্থলবন্দর, শিবগঞ্জের শাহাবাজপুর ইউনিয়নের ধোবড়া এলাকা, মোবারকপুর ইউনিয়নের তিকড়ি বাজার, কানসাটের কলা বাগান, কানসাট বাজার, শিবগঞ্জ বাজার, বেকিবাড়ী, রসুলপুর, ভাগাব্রিজ ও দুর্লোভপুরেই সবচেয়ে বেশি হামলা হচ্ছে। গত রবিবার রাতেও সোনামসজিদ বন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা ভারতীয় পণ্যবাহী একটি ট্রাকে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগের দিন রাতেও বন্দরে একটি ট্রাকে আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর সোমবার সকাল থেকে ভারতীয় ট্রাকচালকরা বন্দরে পণ্য আনা বন্ধ করে দেন। অভিযানের নামে হয়রানির অভিযোগ : গত ৩ মার্চ রাতে কানসাট কলাবাড়ী এলাকায় ট্রাকে পেট্রলবোমা হামলা হয়। ঘটনার পর যৌথ বাহিনী ওই এলাকার ব্যবসায়ী তারিফ আলীর বাড়িতে অভিযান চালায়। তারিফ আলী অভিযোগ করেন, বাড়িতে ঢুকে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ভাঙচুর চালায়। একই রাতে যৌথ বাহিনী শিবগঞ্জের মিলিক গ্রামের ডিম ব্যবসায়ী বেসারত আলীর বাড়িতে অভিযান চালায়। রাত ৮টার দিকে ওই বাড়ির কাছে একটি ট্রাকে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পর অভিযানে নামে যৌথ বাহিনী। তারা ওই বাড়িতে গিয়ে বেসারত আলী, তাঁর দুই ছেলে আব্দুল আওয়াল ও রবিউলকে ধরে নিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা দাবি করে, অভিযানের সময় বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিল তিনজন। সে অবস্থায় তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে তাদের নামে ট্রাক পোড়ানো, ককটেল হামলা ও মানুষ পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় তিনটি মামলা দেওয়া হয়। বেসারতের স্ত্রী রুমালি বেগম দাবি করেন, 'আমার স্বামী ও দুই ছেলে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। আমরা দিন আনি দিন খাই। রাজনীতি করব কখন?' ভুক্তভোগীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত দুই মাসে অন্তত শতাধিক বাড়িতে অভিযানের সময় আসবাবপত্র ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ভয়ে কেউ কিছু বলতেও পারে না। একই এলাকার আওয়ামী লীগের এক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'কখনো কখনো দলীয় কর্মী-সমর্থকরাও হয়রানির শিকার হচ্ছে। পরে দলের জ্যেষ্ঠ নেতা-কর্মীদের সুপারিশে অথবা পুলিশকে বকশিশ দিয়ে থানা থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে।' শিবগঞ্জ থানার ওসি এম এম মইনুল ইসলাম জানান, গত ৫ জানুয়ারি থেকে শিবগঞ্জে নাশকতার ঘটনায় ১১টি মামলা হয়েছে। এজাহার নামীয় আসামি রয়েছে পাঁচ শতাধিক। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি রয়েছে কয়েক হাজার। এসব মামলায় তিন শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, 'শিবগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক সহিংসতা চলছে। এটি এত দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়। তার পরও আমরা সবদিক থেকে চেষ্টা চালাচ্ছি। রাত-দিন যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। কিন্তু সীমান্তবর্তী উপজেলা হিসেবে হয়তো নাশকতাকারীরা সীমান্তের ওপারে অথবা চর এলাকায় গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। ফলে তাদের আটক করতে বেগ পেতে হচ্ছে।' সাধারণ মানুষের হয়রানির বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, 'কখনো কখনো মিসটেকের ফলে কিছুটা হয়রানির শিকার হচ্ছেন হয়তো। তবে আমরা অনেকটা নিশ্চিত হয়েই সাধারণত অভিযানে নামি এবং গ্রেপ্তার অভিযানও চালানো হয় একইভাবে। তবে ভাঙচুরের অভিযোগ সত্য নয়।'    

No comments:

Post a Comment