নিজেকে অভিবাসীর সন্তান হিসেবে উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির নেতা এড মিলিব্যান্ড বলেছেন, তাঁর দল ক্ষমতায় গেলে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করবে, তবে তা যৌক্তিকভাবে। গতকাল সোমবার বার্মিংহামে দলের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার সময় তিনি এ কথা বলেন। আগামী ৭ মে যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ডেভিড ক্যামেরন সরকারের ধনীবান্ধব নীতির কড়া সমালোচনা করে বিরোধী লেবার পার্টির নেতা মিলিব্যান্ড বলেন, ক্ষমত
ায় গেলে লেবার সরকার মুষ্টিমেয় ধনীদের জন্য নয় বরং সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের স্বার্থকে সামনে রেখে কাজ করবে। লেবার পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারে ন্যূনতম মজুরি ঘণ্টায় আট পাউন্ডে উন্নীত করা, দেশটির ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসার বিজনেস রাইট কমানো এবং শিশু ভাতা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। করের হার, ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স এবং ভ্যাট বাড়বে না বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দলটি। সেই সঙ্গে আছে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি। এর বিপরীতে রয়েছে, নন ডোম আইন বাতিল (এই আইনের ফলে ব্যবসায়ীরা অন্য দেশে থাকা ব্যবসার জন্য কর দেন না), হেজ ফান্ডের কর নিশ্চিত করা এবং কর ফাঁকি রোধ করার মাধ্যমে বছরে সাড়ে সাত বিলিয়ন পাউন্ড তহবিল বৃদ্ধি। যাঁরা বছরে ১ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডের বেশি আয় করেন, তাঁদের করের হার ৫০ শতাংশে উন্নীত করবে মিলিব্যান্ডের সরকার। টোরি সরকারের চালু করা বিতর্কিত শূন্য কর্মঘণ্টা চুক্তি বাতিল করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ফি বছরে নয় হাজার পাউন্ড থেকে কমিয়ে ছয় হাজার পাউন্ড করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দলটি। এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা (এনএইচএস)। এ বিষয়ে লেবার পার্টির প্রতিশ্রুতি হলো, ক্যামেরন সরকার জাতীয় স্বাস্থ্যসেবাকে বেসরকারীকরণের যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে, তা রোধ করে এনএইচএস কর্মসূচিকে তার মৌলিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। গত সরকারের পাঁচ বছরে ব্যয়-সংকোচন নীতি ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে দাবি করে লেবার নেতা মিলিব্যান্ড বলেন, বাজেট ঘাটতি মোকাবিলার জন্য সাধারণ মানুষের কল্যাণবিষয়ক ব্যয় কর্তন নয়, প্রয়োজন কর ফাঁকিবাজদের দমন করা এবং রাষ্ট্রের প্রতি ধনীদের ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করা। স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে দলটি ২০ হাজার নার্স, আট হাজার চিকিৎসক, তিন হাজার মিডওয়াইফ নিয়োগ করবে। এর জন্য ব্যয় হবে প্রায় ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন পাউন্ড। ২০ লাখ পাউন্ডের অধিক মূল্যের বাড়ির ওপর ম্যানশন ট্যাক্স চালু করে লেবার সরকার ওই অর্থের জোগান দেবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে যুক্তরাজ্যের সদস্যপদ টিকিয়ে রাখার ঘোষণা দেন মিলিব্যান্ড। ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধ থেকে শিক্ষা নিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো সংগঠনের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের লড়াই অব্যাহত থাকবে।
No comments:
Post a Comment