Saturday, May 16, 2015

কুমিল্লায় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা নিহত:প্রথম অালো

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার কড়িকান্দি বাসস্ট্যান্ডে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার অনুসারীদের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এ সময় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মাসুম সরকারসহ অন্তত ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন। পরে গতকাল শুক্রবার সকালে হাসপাতালে মাসুমের মৃত্যু হয়। মাসুম সরকার (৩৫) ছিলেন কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি। বাড়ি উপজেলার
জগতপুর গ্রামে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনুল ইসলামের সঙ্গে কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে গত বুধবার দুপুরে কড়িকান্দি বাসস্ট্যান্ডে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে কড়িকান্দি বাসস্ট্যান্ডে আবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে ঘটনাস্থল থেকে রুবেল হোসেন নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকে। কিন্তু রাত দেড়টার দিকে আবার সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় সারোয়ার হোসেনের অনুসারী মাসুম সরকার, ছাত্রলীগের কর্মী লিটন মিয়া, রমজান হোসেন ও কামরুল হাসানসহ ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন। এ ছাড়া আরও অন্তত পাঁচজন আহত হন। আহত মাসুমকে একটি মাইক্রোবাস চাপা দেয়। পরে গুরুতর অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে গতকাল সকালে মাসুমের মৃত্যু হয়। আহত অন্য কর্মী-সমর্থকদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে গতকাল মাসুমের মৃত্যুর খবর শোনার পর কয়েক শ কর্মী-সমর্থক সকাল আটটা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর ও তিতাস উপজেলার কড়িকান্দি এলাকায় গৌরীপুর-হোমনা সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তাঁরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ ঘটনায় সারোয়ার হোসেন বাদী হয়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনুলকে প্রধান আসামি করে তিতাস থানায় হত্যা মামলা করেছেন। সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, শাহিনুলের নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীদের ওপর ওই গুলির ঘটনা ঘটে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে শাহিনুল বলেন, ‘কারা ওই ঘটনা ঘটিয়েছে আমি জানি না। রাতের বেলায় কারা গোলাগুলি করেছে, সেটা আমি বলতে পারব না।’ তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেক মো. আবদুল হান্নান জানান, দীর্ঘদিন থেকে দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এই প্রেক্ষাপটে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত ছাত্রলীগের ওই সাবেক নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

No comments:

Post a Comment