বাংলাদেশের সর্বত্র বিশ্বকাপের উত্তেজনা মুহূর্তের জন্য বোধ হয় থমকে গিয়েছিল। সর্বত্রই সাকিবকে নিয়ে আলোচনা। সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ঝড়। টিভিতেও বিশ্বকাপের জন্য নির্ধারিত অনুষ্ঠানগুলো জুড়েই শুধুই সাকিব ইস্যু। কেউ বলছেন, শাস্তিটা যথার্থ। কেউ বলছেন, শাস্তিটা একটু বেশি হয়ে গেছে। কেউ কেউ বলছেন গোটা বাংলাদেশেই যখন অনিয়মটা নিয়মে পরিণত হয়ে গেছে, তখন সাকিবের এটুকু অনিয়ম আর কী। তবে বেশির ভাগই জানাচ্ছেন, শাস্তির প
রিমাণ একটু বেশিই বোধ হয় হয়ে গেল। তবে যে সাকিবকে নিয়ে এত কথা, তিনি কিন্তু মুখ খুলেননি। মিডিয়া অনেক চেষ্টা করলেও সাফ জানিয়ে দেন কোনো মন্তব্য নয়। তবে তার সামাজিক যোগাযোগের সাইটে দেখা গেছে একটি আবেগি স্ট্যাটাস দিয়েছেন এ অলরাউন্ডার। সেখানে ভক্তদের উদ্দেশে রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি লিখেন, ‘অতীতে এমনকি এখনো আপনাদের কাছ থেকে যে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়ে আসছি এতে আমি অভিভূত। সত্যি বলতে কী এ মুহূর্তে আমি আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে আপনাদের জানাচ্ছি যে আজকের এই আমি শুধু আপনাদের ভালোবাসা, সমর্থন আর লাল-সবুজ পতাকার জন্যই। আপনাদের এ আবেগ ও ভালোবাসা ধরে রাখার চেষ্টা করি। দেশ আমার কাছে সবকিছুর ঊর্ধ্বে। দেশ জাতির জন্য প্রতি মুহূর্তে লড়াইয়ে নামতে আমি প্রস্তুত। আশা করি আপনারা আমাকে হৃদয়ে ঠাঁই দেবেন এবং আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে আপনাদের জন্য সব কিছুই করতে পারি।’ সাকিবের এ আবেগি স্ট্যাটাস অনেককে আকৃষ্ট করেছে। তবে তার শাস্তির ব্যাপারে বিসিবির সাথে একমত প্রকাশ করেছেন আইসিসির সভাপতি ও বিসিবির সাবেক সভাপতি পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, কেউই নিয়মের ঊর্ধ্বে নয়। সাকিবের উচিত ক্রিকেটের স্বার্থে বিসিবির সাথে থাকা। আর বিসিবিও চাইবে তার ক্যারিয়ার যাতে শেষ হয়ে না যায়। কারণ তাকেও বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য প্রয়োজন। এ দিকে সাকিবের ওপর ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা ও দেশের বাইরের লিগে দেড় বছরের নিষেধাজ্ঞায় সাকিবের ভক্তরা বুধবার মানববন্ধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একই সাথে মাগুরাবাসী এ শাস্তি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। শুধু দেশেই নয়, প্রবাসীদের মধ্যেও এ ব্যাপারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। শাস্তির খবর ঘোষণার সাথে সাথে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে। তবে একটি সূত্র জানাচ্ছে, এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও আসতে পারে। কারণ এর আগেও আকরাম খানের পদত্যাগসংক্রান্ত এক ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হস্তক্ষেপ করে তাকে যথাস্থানে থাকার নির্দেশ দেন। ফলে এখন সাকিবের বেলায়ও তার হস্তক্ষেপ হতে পারে। যদিও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন প্রধানমন্ত্রীর স্নেহভাজন। আর সিদ্ধান্তটা নেয়ার অগ্রভাগে ছিলেন তিনি নিজেই। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, শাস্তির পরিমাণ যেহেতু একটু বেশি হয়েছে বলেছে বলে কথা উঠেছে তাই এ ব্যাপারে বিসিবি কিছুটা নমনীয় হতে পারে। এ দিকে বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, বিসিবি সাকিবের ওপর যে শাস্তি আরোপ করেছে, সাকিব চাইলে সে ব্যাপারে আপিল করতে পারেন। তবে সাকিব সেটা করবেন কি না সেটা জানা যায়নি।
No comments:
Post a Comment