পিরোজপুর সদর উপজেলার ভৈরমপুর গ্রামে গতকাল শুক্রবার ভোরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শহিদুল ইসলাম শেখ (২৪) নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ তাঁকে ধরে গুলি করেছে। শহিদুল ভৈরমপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রব শেখের ছেলে। তিনি পেশায় ফল ব্যবসায়ী। এক সময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, পুলিশ ওই গ্রামে ‘আশরাফ ডাকাত’-এর ভাই রফিককে ধর
তে গিয়েছিল। রফিক ভেবে ভুল করে শহিদুলকে ধরে গুলি করে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে পুলিশ কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধের’ দাবি করছে। পিরোজপুর সদর থানার এসআই খন্দকার আনোয়ার হোসেনের ভাষ্যমতে, গতকাল ভোর সাড়ে চারটার দিকে পুলিশ খবর পায়, ভৈরমপুর গ্রামের বাবুল শেখের সুপারিবাগানে ডাকাতির প্রস্ততি নিচ্ছে একদল ডাকাত। ভোর পাঁচটার দিকে পুলিশ ওই গ্রামে পৌঁছার পর ডাকাতেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে চারটি গুলি ছোড়ে। তখন পুলিশও পাল্টা গুলি করে। একপর্যায়ে ডাকাতেরা পালিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শহিদুলকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় পুলিশের কনস্টেবল মেহেদী (২৪) আহত হন। তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। শহিদুল আশরাফ ডাকাতের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড।’ তাঁর জামার পকেট থেকে দুটি বন্দুকের গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। পিরোজপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শংকর কুমার ঘোষ জানান, সকাল সাতটা ৫০ মিনিটে শহিদুলকে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। চারটি গুলি তাঁর শরীরে বিদ্ধ হয়েছে। অস্ত্রোপচারের জন্য তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে অস্ত্রোপচার করে গুলি চারটি বের করা হয়েছে বলে জানান এই চিকিৎসক। শহিদুলের ছোট ভাই রাজিদুল শেখ অভিযোগ করেন, তাঁর ভাই ঢাকার সাভারের নবীনগরে ফলের ব্যবসা করেন। ঈদের আগের দিন তিনি বাড়িতে আসেন। শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে শহিদুল দোকানে চা ও চিনি কিনতে যান। এ সময় পুলিশকে অস্ত্রে গুলি ভরতে দেখে ভয়ে তিনিসহ কয়েকজন দৌড় দেন। কিছুদূর গিয়ে দাঁড়ালে পুলিশ তাঁকে ধরে কোমরের ওপর গুলি করে। পিরোজপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, শহিদুল কদমতলা ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী। পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবদুল রাজ্জাক মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি শহিদুলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা থাকার কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
No comments:
Post a Comment