চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার পুলিশ সদস্যদের ওপর আচমকা হামলা চালিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির একাংশের নেতা-কর্মীরা। হামলায় পুলিেশর চার সদস্য আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত চার পুলিশকে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। ছাত্রলীেগর কর্মীদের হামলায় আহত পুলিেশর চার সদস্য হলেন: ফোরকান, রুবেল, সোহাগ ও নুরে আলম।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির দপ্তর সম্পাদক জালাল আহমেদ ও গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক রুপম বিশ্বাসের অনুসারী ভিএক্স (শাটল ট্রেনভিত্তিক ছাত্রলীগের বগি সংগঠন ভার্সিটি এক্সপ্রেস) নেতা-কর্মীরা এ হামলা চালান বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা নিশ্চিত করেছেন। তবে ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। পুলিশ জানায়, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন পুলিেশর একদল সদস্য। এ সময় জালাল আহমেদ ও রুপম বিশ্বাসের উপস্থিতিতে তাঁদের অনুসারী উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের আশা, ইংরেজি বিভাগের সাদ্দাম, ইতিহাস বিভাগের সোপান, আইইআরটি বিভাগের মিশু, জামশেদ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী শাহরিদসহ ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন কর্মী তাঁদের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে তাঁরা পুলিশকে মারধর করে আহত করেন। পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মঈন উদ্দিন বলেন, কয়েক দিন আগে পরীক্ষা নিয়ে ইংরেজি বিভাগে ভাঙচুর করতে চাইলে পুলিশের এই সদস্যরা তাতে বাধা দেন। এ কারণেই হয়তো তাঁদের ওপর ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন। আহত পুলিেশর চার সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ অভিযানে নামছে বলে জানিয়েছেন হাটহাজারী থানার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইসমাইল। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি। তবে বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির দপ্তর সম্পাদক জালাল আহমেদ প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তাঁর অনুসারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়নি। জালাল বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি রিকশায় করে শহীদ মিনার এলাকা হয়ে আসছিলাম। ওই সময় কয়েকজনের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটতে দেখে আমি নেমে তা থামিয়ে দিয়েছি।’ অন্যদিকে গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক রুপম বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যার আগেই আমি ক্যাম্পাস ছেড়ে শহরে চলে এসেছি। তবে আমি বিষয়টি শুনেছি। আমি ক্যাম্পাসে না থাকায় ঘটনা পুরোপুরি বলতে পারব না।’ তবে পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও ওই দুজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, ‘ভুল-বোঝাবুঝির কারণে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনার খোঁজখবর নিয়েছি। বিষয়টির মীমাংসার চেষ্টা চলছে।’
No comments:
Post a Comment