
স উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জনসভাস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান উপচে শাহবাগ, টিএসসি, কার্জন হলসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিপুলসংখ্যক মানুষ অবস্থান নেয়। খালেদা জিয়া অবরুদ্ধ নন দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওনাকে কেউ অবরুদ্ধ করে রাখেনি। উনি বাড়ি চলে যাক। কেউ বাধা দেবে না। উনি নির্বাচন না করে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেই ভুলের খেসারত তিনি দেবেন। তাঁর দল দেবে। মানুষের ওপর অত্যাচার কেন?’ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাড়া-মহল্লায় কোথায় কোথায় সন্ত্রাসীরা আছে, কারা বোমা বানায়, কারা বোমা মারে, তাদের ধরে পুলিশে দিন। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার আন্দোলনে জনগণ সম্পৃক্ত হয়নি। তিনি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের নেত্রী। রাজনৈতিক নেত্রী হতে পারেননি। তাঁর ডাকে জনগণ আসবে না। এটা বাস্তব কথা। ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) ও কমনওয়েলথ পার্লামেন্ট অ্যাসোসিয়েশনে (সিপিএ) বিজয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই নির্বাচন বৈধ না হলে বিশ্বের এতগুলো পার্লামেন্টে ভোট পেয়ে বাংলাদেশের প্রার্থী জয়ী হতো না। এটা সারা বিশ্ব বোঝে। বোঝে না কেবল বিএনপির নেত্রী আর তাঁর কুলাঙ্গার পুত্র। শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব ইজতেমা হয়ে গেল। হাজার হাজার মুসল্লি এতে অংশ নিয়েছেন। বিশ্বের মুসলমানদের এটি দ্বিতীয় বড় জমায়েত। তাহলে ইজতেমার সময় অবরোধ কেন? খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে বাংলাদেশের মানুষকে অবরুদ্ধ করে রাখবেন, এটা কখনো হবে না। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, উনি (খালেদা) ঘর থুইয়া অফিসে। ঘর ছেড়ে পালানো তাঁর পুরোনো অভ্যাস। স্কুলে পড়ার সময় তিনি অভিনয় করার জন্য দিনাজপুরের বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন। পরে জিয়ার সঙ্গে পালিয়ে তিনি ময়মনসিংহ চলে গিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় খালেদ মোশাররফ, মঞ্জুর, হায়দারের স্ত্রীরা ভারতে গেলেও তিনি যাননি। তিনি ক্যান্টনমেন্টে পাকিস্তানি অফিসার মির্জা আসলাম বেগের সঙ্গে থেকে গেলেন। ১৯৮৫ সালে তাঁকে পূর্বাণী হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয়। ’৮৬ সালে সিপাহি-জনতার বিপ্লবের কথা বলে তিন দিন নিরুদ্দেশ ছিলেন। বিডিআর বিদ্রোহের দুই ঘণ্টা আগে উনি ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে পালালেন। এরপর বিদ্রোহ শুরু হয়। তিনি একটা ষড়যন্ত্র পাকিয়ে একটা পলান দেন। সরকারের এক বছরের নানা অর্জনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমুদ্রসীমার রায়ে বাংলাদেশ বিজয়ী হয়েছে। বিশ্বমন্দা মোকাবিলা করে অর্থনৈতিক গতি ঠিক রাখতে পেরেছে বিশ্বের এমন পাঁচটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ২। তিনি বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতি ১২-১৩ থেকে নামিয়ে ৬ দশমিক ১-এ এনেছি। দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে পেরেছি। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করেছি।’ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত দেশ গড়ার জন্য কাজ করছেন। আর খালেদা জিয়া দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্য অবরোধ ডেকে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, তাঁর (খালেদা) জন্মদিন ভুয়া, টেলিফোন ভুয়া (অমিত শাহ)। তাঁর চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত সব ভেজাল আর নকল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিএনপির বুদ্ধিজীবীরা বলছেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে আসবেন। চার বছর পর শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে। তার বিকল্প হবে না। তাঁরা ইচ্ছা করলে সে নির্বাচন বর্জন করতে পারেন। তবে তা করলে বিএনপির অস্তিত্বও থাকবে না। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন আমির হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, মাহবুব উল আলম হানিফ, এম এ আজিজ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ।
No comments:
Post a Comment