Friday, May 15, 2015

ভালো লাগা ও আপত্তি বিনিময়:প্রথম অালো

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে স্বাগত জানিয়েছিলেন গুজরাটের আহমেদাবাদে। ঠিক তেমনই মোদিকে চীনা প্রেসিডেন্ট স্বাগত জানালেন তাঁর নিজ রাজ্য শিয়াংয়ে। মোদি যে ঢংয়ে প্রথা ভেঙেছিলেন, শিও প্রথা ভাঙলেন সেভাবেই। চীনের ইতিহাসে রাজধানী বেইজিংয়ের বাইরে অন্য কোনো দেশের প্রধানকে স্বাগত জানানোর ক্ষেত্রে এটাই প্রথম ব্যতিক্রম। তিন দিনের চীন সফরে গতকাল বৃহস্পতিবার মোদি শিয়াংয়ে
পৌঁছান। সেখানকার শাংছি অতিথিশালায় তাঁকে স্বাগত জানান প্রেসিডেন্ট শি। খবর এনডিটিভি ও জি নিউজের। নিজের ভারত সফরের স্মৃতি উল্লেখ করে শি মোদিকে বলেন, ‘সবরমতি নদীর তীরে হাঁটা ও দোলনায় ঝোলা আমার চিরকাল মনে থাকবে। সেটা ছিল আপনার রাজ্য, শিয়াং আমার।’ উষ্ণ অভ্যর্থনার জবাবে আপ্লুত মোদি বললেন, ‘১২৫ কোটি ভারতীয়ের প্রতিনিধি হিসেবে এই সম্মানে আমি অভিভূত।’ মোদি আগাগোড়া কথা বলেন হিন্দিতে, শি তাঁর মাতৃভাষায়। প্রেসিডেন্ট শির সঙ্গে মোদির শীর্ষ বৈঠকেও আড়ষ্টতা ছিল না। বৈঠকের পরে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব এস জয়শঙ্কর জানান, দুই নেতা স্বচ্ছন্দে আলোচনা করেছেন। আলোচনা হয় রাজনৈতিক বিষয়, বাণিজ্য ঘাটতি, সন্ত্রাসের মোকাবিলা এবং সীমান্ত বিরোধ নিয়ে। মোদির গুজরাটের সাফল্যের উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট শি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী তাঁর রাজ্যের সাফল্যের আলো সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাইছেন। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মধ্য দিয়ে চীন যে অবকাঠামো তৈরি করতে চাইছে, ভারত তার প্রতিবাদ আগেই জানিয়েছিল। শীর্ষ বৈঠকেও মোদি এই বিষয়ে ভারতের আপত্তির কথা জানান। একইভাবে মোদি আপত্তি জানান অরুণাচল প্রদেশের মানুষদের ‘স্টেপল ভিসা’ দেওয়ার ক্ষেত্রেও। চীন মনে করে, অরুণাচল প্রদেশ তাদের অংশ। এ নিয়ে চীনের সঙ্গে ভারতের বিবাদ বহু বছরের। মোদির এই সফরের একটা বড় দিক বাণিজ্য। তিন দিনের এই সফরে অন্তত ২০টি বড় বাণিজ্যিক চুক্তি সই হওয়ার কথা, যার মোট আর্থিক পরিমাণ এক হাজার কোটি মার্কিন ডলার। এই লক্ষ্যে সাংহাইয়ে চীনের বড় বড় কোম্পানির বড় কর্তাদের সঙ্গে মিলিত হবেন মোদি। তবে বাণিজ্যের বহরের সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যাচ্ছে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ। ভারতের জন্য এটা উদ্বেগের। বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে মোদি এই সফরে চাপ দেবেন। গত আর্থিক বছরে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। আগের বছরের চেয়ে যা ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার বেশি। গতকাল সকালে চীন পৌঁছে মোদি প্রথমেই যান টেরাকোটা সংগ্রহশালায়, যেখানে প্রাচীন যোদ্ধাদের মূর্তি রাখা আছে। তারপর তিরি যান বিখ্যাত শিং সান বৌদ্ধমন্দিরে। শীর্ষ বৈঠকের পর দুই নেতা যান সপ্তম শতকে নির্মিত ওয়াইল্ড গুজ প্যাগোডায়। দুজনেই সেখানে প্রার্থনা করেন। শিয়াং থেকে মোদি প্রথমে যাবেন বেইজিং, তারপর সাংহাই। বেইজিংয়ে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলো নিয়ে আরও বিস্তারিত বৈঠক হবে। এই সফরে পররাষ্ট্রসচিব ছাড়াও মোদির সঙ্গে রয়েছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল।

No comments:

Post a Comment