Thursday, July 24, 2014

গাজায় বোমা পড়ছে সর্বত্র:প্রথম অালো

সাদা চাদরে করে এক নারীর ছিন্নভিন্ন লাশ নামানো হচ্ছে সালাম টাওয়ারের ষষ্ঠ তলা থেকে। গাজা সিটির ওই বহুতল ভবনে গত সোমবার রাতে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১১ জন নিহত হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ওই নারীর স্বামী এবং পাঁচ সন্তানও আছেন। তাঁরা সবাই জার্মান নাগরিক। মাত্র এক দিন আগে গাজার ‘মৃত্যুপুরী’ শাজাইয়া শহর থেকে পালিয়ে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছিলেন সালাম টাওয়ারে। খবর ইনডিপেনডেন্টের। আসলে গাজায় এখন নিরাপদ আশ্রয় বল
তে কিছু নেই। বোমা পড়ছে সর্বত্র। মঙ্গলবার সকালে মরদেহগুলো সালাম টাওয়ার থেকে নামাচ্ছিলেন গাজার জরুরি বিভাগের কর্মীরা। পরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল আল-শিফা হাসপাতালের মর্গে। হাসপাতালের সামনে ওই নারীর স্বজন সালেহ কেলানি জানান, তাঁর নিহত স্বজনদের সবার জার্মান পাসপোর্ট আছে। পশ্চিমাদের দ্বৈতনীতির কঠোর সমালোচনা করে সালেহ বলেন, জার্মান পাসপোর্টধারী হলেও তাঁদের মৃত্যুতে জার্মানি কেন কোনো কথা বলবে না? যখন কোনো ইসরায়েলি নিহত হয়, তখন ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে, কিন্তু গাজায় এত মানুষ হত্যা করা হলো কিন্তু তাদের কোনো কথা নেই। সালেহ বলেন, ‘আমরা হতাশ। তাঁরা (নিহত স্বজনেরা) মনে করতেন, বিপদে পড়বেন না। কিন্তু এখন সব শেষ।’ তিনি বলেন, কেন ওই ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হলো? ওখানে তো কোনো জঙ্গি ছিল না। কিন্তু ইসরায়েল তো নির্বিচারে গাজার প্রতিটি স্থানেই হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের নিয়ন্ত্রিত শরণার্থী শিবির থেকে শুরু করে হাসপাতাল—কোনো কিছুই বাদ নেই। শাজাইয়া শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর এক দিনের অভিযানেই নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যায়। পুরো শহর পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে। একই হাসপাতালে আছেন ২১ বছর বয়সী তরুণ মোহাম্মদ আবু ইয়াহিয়া। তিনি জাতিসংঘের একটি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। গত শনিবার ওই শিবিরে হামলা চালালে আহত হয়ে আল-আকসা হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। ইয়াহিয়া বলেন, এই হাসপাতালেও ইসরায়েলি ট্যাংকের তিনটি গোলা আঘাত হানে। এতে পাঁচজন নিহত ও ৭০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে অন্তত ৩২ জন ছিলেন চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মী। এখানে দ্বিতীয়বারের মতো আহত হলেন তরুণ ইয়াহিয়া। ক্ষুব্ধ ইয়াহিয়া বলেন, হামাস অস্ত্র মজুত করে রেখেছে অভিযোগ করে শরণার্থী শিবিরে হামলা চালানো হলো, একই কথা বলে এবার হামলা চালানো হলো হাসপাতালে। এভাবে নির্বিচারে হামলা চালিয়ে পুরো গাজাকেই যুদ্ধক্ষেত্র বানিয়ে ফেলেছে ইসরায়েল।

No comments:

Post a Comment