মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী (মায়া) ও কামরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে সাঈদ খোকন ও শাহে আলমের (মুরাদ) মধ্যে দ্বন্দ্ব দিন দিন আরও প্রকট হচ্ছে। শুধু পদ নিয়েই নয়, ঢাকা মহানগর কমিটি কি আগের মতো একটিই থাকবে, নাকি মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ দুই ভাগে বিভক্ত হবে, তা নিয়েও মতবিরোধ রয়েছে। এর মধ্যে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও সাঈদ খোকন মহানগরের অখণ্ড কমিটির পক্ষে। আর কামরুল ইসলাম, হাজি মো. সেলিম ও শাহে আলম দুই কমিটির পক্ষে। এ দ্বন্দ্বের বিষয়ে জানতে চাইলে ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। সাঈদ খোকন এটাকে ‘উড়ো খবর’ বলে এড়িয়ে যান। আর শাহে আলম দাবি করেন, তাঁর কোনো কোনো কর্মকাণ্ডে সাঈদ খোকন অসন্তুষ্ট থাকতে পারেন, তবে তাঁদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। এদিকে হাজি সেলিম মহানগরের দুটি কমিটির পক্ষে তাঁর অবস্থানের কথা জানিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার পরিধি অনেক বেড়েছে। একটি কমিটির পক্ষে পুরো মহানগরের রাজনীতি পরিচালনা সম্ভব নয়। এ সরকারের আগের মেয়াদে ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তর ও দক্ষিণ—দুই ভাগে বিভক্ত হয়। তাই নীতিগত কারণে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দুই কমিটির পক্ষে। আবার মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী দলের শীর্ষ পর্যায়ে আস্থাভাজন হওয়ায় মাঝে অখণ্ড কমিটি হওয়ার সম্ভাবনা স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। কিন্তু গত এপ্রিলে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় জামাতা লে. কর্নেল তারেক সাঈদ গ্রেপ্তার হওয়াকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্কে পড়েন মোফাজ্জল হোসেন। এরপর তাঁর প্রভাব কিছুটা হ্রাস পায়। এ অবস্থায় অখণ্ড নাকি দুই কমিটি হবে—জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলীয় প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই আমরা মেনে নেব। তবে আমাদের কিছু বলার আছে, সেটা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলব।’ তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ জানান, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করতে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ নামে দুটি কমিটি করা হবে। এর আগে ২০০৩ সালের জুনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে মোহাম্মদ হানিফকে সভাপতি ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়েছিল। ওই কমিটিতে কামরুল ইসলাম ও হাজি সেলিম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাঈদ খোকন ও শাহে আলম সাংগঠনিক সম্পাদক হন। ২০০৬ সালের নভেম্বরে মোহাম্মদ হানিফ মারা যান। এরপর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ওমর আলী। কিছুদিন পর নেতা-কর্মীদের বিরোধিতার মুখে তিনি পদত্যাগ করেন। নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হন এ কে এম রহমতউল্লাহ। কিছুদিনের মধ্যে তাঁকেও সরে যেতে হয়। এরপর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয় এম এ আজিজকে, যিনি এখনো ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আছেন। অন্যদিকে, ২০০৭ সালে এক-এগারোর পটপরিবর্তনের পর মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী দেশত্যাগ করলে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান কামরুল ইসলাম। ২০০৯ সালে দল ক্ষমতায় আসার পর মোফাজ্জল হোসেন দেশে ফিরে আসেন এবং আবার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। একই দায়িত্বে এখনো আছেন। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে সর্বশেষ সম্মেলন হয়। তাতে ভোটাভুটিতে না গিয়ে সবাই নতুন কমিটি গঠনের দায়িত্ব দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার ওপর অর্পণ করেন। এরপর ২০ মাস পার হয়েছে। কমিটি আর গঠিত হয়নি। এ বিষয়ে খোঁজখবর করলে সম্প্রতি দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা এই প্রতিবেদককে বলেন, আগামী সেপ্টেম্বরে মহানগরের থানা কমিটিগুলো ঘোষিত হতে পারে। মূল কমিটি কবে হবে, তা দলের সভানেত্রী ছাড়া কেউ জানেন না বলে এসব নেতা দাবি করেন।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Sunday, August 24, 2014
দ্বন্দ্বে আটকে আছে কমিটি:প্রথম অালো
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী (মায়া) ও কামরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে সাঈদ খোকন ও শাহে আলমের (মুরাদ) মধ্যে দ্বন্দ্ব দিন দিন আরও প্রকট হচ্ছে। শুধু পদ নিয়েই নয়, ঢাকা মহানগর কমিটি কি আগের মতো একটিই থাকবে, নাকি মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ দুই ভাগে বিভক্ত হবে, তা নিয়েও মতবিরোধ রয়েছে। এর মধ্যে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও সাঈদ খোকন মহানগরের অখণ্ড কমিটির পক্ষে। আর কামরুল ইসলাম, হাজি মো. সেলিম ও শাহে আলম দুই কমিটির পক্ষে। এ দ্বন্দ্বের বিষয়ে জানতে চাইলে ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। সাঈদ খোকন এটাকে ‘উড়ো খবর’ বলে এড়িয়ে যান। আর শাহে আলম দাবি করেন, তাঁর কোনো কোনো কর্মকাণ্ডে সাঈদ খোকন অসন্তুষ্ট থাকতে পারেন, তবে তাঁদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। এদিকে হাজি সেলিম মহানগরের দুটি কমিটির পক্ষে তাঁর অবস্থানের কথা জানিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার পরিধি অনেক বেড়েছে। একটি কমিটির পক্ষে পুরো মহানগরের রাজনীতি পরিচালনা সম্ভব নয়। এ সরকারের আগের মেয়াদে ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তর ও দক্ষিণ—দুই ভাগে বিভক্ত হয়। তাই নীতিগত কারণে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দুই কমিটির পক্ষে। আবার মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী দলের শীর্ষ পর্যায়ে আস্থাভাজন হওয়ায় মাঝে অখণ্ড কমিটি হওয়ার সম্ভাবনা স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। কিন্তু গত এপ্রিলে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় জামাতা লে. কর্নেল তারেক সাঈদ গ্রেপ্তার হওয়াকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্কে পড়েন মোফাজ্জল হোসেন। এরপর তাঁর প্রভাব কিছুটা হ্রাস পায়। এ অবস্থায় অখণ্ড নাকি দুই কমিটি হবে—জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলীয় প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই আমরা মেনে নেব। তবে আমাদের কিছু বলার আছে, সেটা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলব।’ তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ জানান, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করতে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ নামে দুটি কমিটি করা হবে। এর আগে ২০০৩ সালের জুনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে মোহাম্মদ হানিফকে সভাপতি ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়েছিল। ওই কমিটিতে কামরুল ইসলাম ও হাজি সেলিম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাঈদ খোকন ও শাহে আলম সাংগঠনিক সম্পাদক হন। ২০০৬ সালের নভেম্বরে মোহাম্মদ হানিফ মারা যান। এরপর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ওমর আলী। কিছুদিন পর নেতা-কর্মীদের বিরোধিতার মুখে তিনি পদত্যাগ করেন। নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হন এ কে এম রহমতউল্লাহ। কিছুদিনের মধ্যে তাঁকেও সরে যেতে হয়। এরপর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয় এম এ আজিজকে, যিনি এখনো ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আছেন। অন্যদিকে, ২০০৭ সালে এক-এগারোর পটপরিবর্তনের পর মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী দেশত্যাগ করলে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান কামরুল ইসলাম। ২০০৯ সালে দল ক্ষমতায় আসার পর মোফাজ্জল হোসেন দেশে ফিরে আসেন এবং আবার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। একই দায়িত্বে এখনো আছেন। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে সর্বশেষ সম্মেলন হয়। তাতে ভোটাভুটিতে না গিয়ে সবাই নতুন কমিটি গঠনের দায়িত্ব দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার ওপর অর্পণ করেন। এরপর ২০ মাস পার হয়েছে। কমিটি আর গঠিত হয়নি। এ বিষয়ে খোঁজখবর করলে সম্প্রতি দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা এই প্রতিবেদককে বলেন, আগামী সেপ্টেম্বরে মহানগরের থানা কমিটিগুলো ঘোষিত হতে পারে। মূল কমিটি কবে হবে, তা দলের সভানেত্রী ছাড়া কেউ জানেন না বলে এসব নেতা দাবি করেন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment