তার সূত্রপাত হয়েছিল আরববিশ্বের সবচেয়ে পশ্চিমের ক্ষুদ্র দেশ তিউনিসিয়া থেকে। তিউনিসিয়া সেদিন শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আরবদের স্বৈরতন্ত্রের কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার পথ দেখিয়েছিল। আজ দেশটি দেখিয়ে দিচ্ছে, পুরোনো শাসনব্যবস্থার ধ্বংসস্তূপের ওপর ফুটতে পারে গণতন্ত্রের ফুল। গণবিক্ষোভের মুখে ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে পতন হয়েছিল দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট বেন আলীর। আরব বসন্তের ঢেউ লাগা বাকি দেশগুলো হয় বিশৃঙ্খলা, না হয় সামরিক শাসনের জাঁতাকলে ফিরে গেছে। সিরিয়া পরিণত হয়েছে বধ্যভূমিতে; জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক সংঘাতে লিবিয়া এখন গভীর সাগরে দিকভ্রষ্ট নৌকা; আর মিসরে কার্যত ফিরে এসেছে সামরিক শাসন। তবে চারপাশে ব্যাপক ঝড়-ঝঞ্ঝার মধ্যেও তিউনিসিয়া ভেঙে পড়েনি। তবে আজকের এই পার্লামেন্ট নির্বাচন পর্যন্ত আসা এতটা সহজ ছিল না। বিশ্লেষকেরা বলছেন, সামনের পথটাও সহজ হবে না। উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলো মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। সামাজিক অস্থিরতাও ব্যাপক। এর মধ্যেও তিউনিসিয়ায় গণতন্ত্র যে এখন পর্যন্ত সঠিক পথে রয়েছে, তার কারণ ক্ষমতার ভাগাভাগি ও সমঝোতার রাজনীতি। ২০১১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জিতে ইসলামপন্থী দল এন্নাহদা মুভমেন্ট জাতীয় ঐক্যের ডাক দেয়। তাহলে কি গণতন্ত্রের অভিযাত্রা টিকিয়ে রাখতে পারবে তিউনিসিয়া? দেশটির মানবাধিকারকর্মী ও রাজনৈতিক ব্লগার আমির সাফাকসির আশঙ্কা, একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ার গতি ক্রমেই মন্থর হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সুশীল সমাজ ক্রমেই শক্তি হারিয়ে ফেলছে বলে মনে হচ্ছে। পেশায় কম্পিউটার প্রোগ্রামার সাফাকসি আরও বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠান, সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রয়োজন হলে প্রতিবাদ জানানোর মাধ্যমে আমাদের একটা শক্তিশালী সুশীল সমাজ গড়ে তুলতে হবে।’ তবে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও অনিশ্চয়তার পরও আরব বসন্তের ঢেউ লাগা সিরিয়া, লিবিয়া ও মিসরসহ অন্য দেশগুলোর চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় রয়েছে তিউনিসিয়া। এন্নাহদার নেতা রশিদ ঘানুচির মতে, তিউনিসিয়া শিগগিরই আরব বিশ্বের প্রথম পূর্ণাঙ্গ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘এ বছরের শেষ নাগাদ তিউনিসিয়া প্রথম আরব গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত হবে। এ বিষয়ে আমরা নিশ্চয়তা দিতে পারি।’ পার্লামেন্ট নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মধ্যপন্থী ইসলামি দল এন্নাহদা ও ধর্মনিরপেক্ষ দল নিদা তৌনিস-এর মধ্যে। এর বাইরে রয়েছে ধর্মনিরপেক্ষ দল কংগ্রেস ফর দি রিপাবলিক (সিপিআর) ও ডেমোক্রেটিক ফোরাম ফর লেবার অ্যান্ড লিবার্টির (এফডিটিএল) পাশাপাশি বেন আলীর আমলের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বাধীন কয়েকটি দলও। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন ৮৭ বছর বয়সী বেইজি কায়েদ আসেবসি। নব্বইয়ের দশকে পার্লামেন্টে স্পিকারের দায়িত্ব পালনকারী এই নেতা প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছেন।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Sunday, October 26, 2014
গণতন্ত্রের পথে থাকবে তিউনিসিয়া?:প্রথম অালো
তার সূত্রপাত হয়েছিল আরববিশ্বের সবচেয়ে পশ্চিমের ক্ষুদ্র দেশ তিউনিসিয়া থেকে। তিউনিসিয়া সেদিন শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আরবদের স্বৈরতন্ত্রের কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার পথ দেখিয়েছিল। আজ দেশটি দেখিয়ে দিচ্ছে, পুরোনো শাসনব্যবস্থার ধ্বংসস্তূপের ওপর ফুটতে পারে গণতন্ত্রের ফুল। গণবিক্ষোভের মুখে ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে পতন হয়েছিল দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট বেন আলীর। আরব বসন্তের ঢেউ লাগা বাকি দেশগুলো হয় বিশৃঙ্খলা, না হয় সামরিক শাসনের জাঁতাকলে ফিরে গেছে। সিরিয়া পরিণত হয়েছে বধ্যভূমিতে; জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক সংঘাতে লিবিয়া এখন গভীর সাগরে দিকভ্রষ্ট নৌকা; আর মিসরে কার্যত ফিরে এসেছে সামরিক শাসন। তবে চারপাশে ব্যাপক ঝড়-ঝঞ্ঝার মধ্যেও তিউনিসিয়া ভেঙে পড়েনি। তবে আজকের এই পার্লামেন্ট নির্বাচন পর্যন্ত আসা এতটা সহজ ছিল না। বিশ্লেষকেরা বলছেন, সামনের পথটাও সহজ হবে না। উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলো মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। সামাজিক অস্থিরতাও ব্যাপক। এর মধ্যেও তিউনিসিয়ায় গণতন্ত্র যে এখন পর্যন্ত সঠিক পথে রয়েছে, তার কারণ ক্ষমতার ভাগাভাগি ও সমঝোতার রাজনীতি। ২০১১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জিতে ইসলামপন্থী দল এন্নাহদা মুভমেন্ট জাতীয় ঐক্যের ডাক দেয়। তাহলে কি গণতন্ত্রের অভিযাত্রা টিকিয়ে রাখতে পারবে তিউনিসিয়া? দেশটির মানবাধিকারকর্মী ও রাজনৈতিক ব্লগার আমির সাফাকসির আশঙ্কা, একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ার গতি ক্রমেই মন্থর হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সুশীল সমাজ ক্রমেই শক্তি হারিয়ে ফেলছে বলে মনে হচ্ছে। পেশায় কম্পিউটার প্রোগ্রামার সাফাকসি আরও বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠান, সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রয়োজন হলে প্রতিবাদ জানানোর মাধ্যমে আমাদের একটা শক্তিশালী সুশীল সমাজ গড়ে তুলতে হবে।’ তবে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও অনিশ্চয়তার পরও আরব বসন্তের ঢেউ লাগা সিরিয়া, লিবিয়া ও মিসরসহ অন্য দেশগুলোর চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় রয়েছে তিউনিসিয়া। এন্নাহদার নেতা রশিদ ঘানুচির মতে, তিউনিসিয়া শিগগিরই আরব বিশ্বের প্রথম পূর্ণাঙ্গ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘এ বছরের শেষ নাগাদ তিউনিসিয়া প্রথম আরব গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত হবে। এ বিষয়ে আমরা নিশ্চয়তা দিতে পারি।’ পার্লামেন্ট নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মধ্যপন্থী ইসলামি দল এন্নাহদা ও ধর্মনিরপেক্ষ দল নিদা তৌনিস-এর মধ্যে। এর বাইরে রয়েছে ধর্মনিরপেক্ষ দল কংগ্রেস ফর দি রিপাবলিক (সিপিআর) ও ডেমোক্রেটিক ফোরাম ফর লেবার অ্যান্ড লিবার্টির (এফডিটিএল) পাশাপাশি বেন আলীর আমলের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বাধীন কয়েকটি দলও। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন ৮৭ বছর বয়সী বেইজি কায়েদ আসেবসি। নব্বইয়ের দশকে পার্লামেন্টে স্পিকারের দায়িত্ব পালনকারী এই নেতা প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছেন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment