Sunday, October 12, 2014

কাসিকোতে সুপার জয় ব্রাজিলের:নয়াদিগন্ত

ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনালে দেখা হবে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার। অনেক ফুটবল বোদ্ধার মতো এমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বর্তমান কোচ কার্লোস ডুঙ্গাও। তখন তিনি জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন। কিন্তু সেমিতে জার্মানির কাছে ১-৭ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ায় নিজ মাঠে ফাইনাল আর খেলা হয়নি ব্রাজিলের। ১৯৯০ সালের পর বিশ্বকাপে আর সাক্ষাৎও হয়নি আর্জেন্টিনার। ল্যাটিন আমেরিকার এই দুই ফুটবল পরাশক্তির ও সাবেক বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নদের নিকট অতীত
ে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচেও দেখা  মেলেনি। ল্যাটিন আমেরিকান সুপার কাসিকো উপলক্ষে গতকাল বেইজিংয়ের বার্ড নেস্ট স্টেডিয়ামে ফের দেখা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দেশ দু’টির। আর এতে শেষ হাসি হেসে কার্লোস ডুঙ্গা প্রমাণ করলেন তাকে আবার ব্রাজিল দলের দায়িত্ব দিয়ে সঠিক কাজই করেছেন কনফেডারেশন অব ব্রাজিল ফুটবল (সিবিএফ)। ২-০ তে ম্যাচ জিতে বার্সেলোনার সতীর্থ মেসিকে অবনত মস্তকে মাঠ ছাড়তে বাধ্য করেন নেইমার অ্যান্ড গং। ব্রাজিল আর্জেন্টিনার ম্যাচ বলে কথা। বিশ্বের শত কোটি ফুবটলপ্রেমীদের পরম কাক্সিত ম্যাচ এটি। বেইজিংয়ের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে এ ম্যাচ দেখতে যেমন গ্যালারিপূর্ণ মানুষ। তেমনি সারা বিশ্বের টিভি পর্দার সামনেও ভিড় ছিল দুই দলের সমর্থকদের। গতকাল সারা দিনই যারা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেয় ম্যাচটি দেখার। এতে অবশ্য শেষ পর্যন্ত হতাশ হতে হয় সাদা-আকাশী-নীল জার্সিধারী সমর্থকদের। মেসির পেনাল্টি মিসের মাধ্যমে তাদের সেই যে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়া এরপর আর ফিরতে পারেননি লড়াইয়ে। মেসির পেনাল্টি শট ব্রাজিলিয়ান কিপার জেফারসন ঠেকিয়ে না দিলে সমতায় ফিরত আর্জেন্টিনা। হয়তো অন্য রকম হতে পারত ম্যাচের ফলাফলও। আগের প্রীতি ম্যাচে বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানির কাছে হারের প্রতিশোধ নেয়া আর্জেন্টিনা গতকাল শুরুটা করেছিল চমৎকার। পুরোপুরি চেপে ধরে ব্রাজিলিয়ানদের। অ্যাগুয়েরো, ডি মারিয়া এবং মেসিরা গোলের সন্ধান দিতে না পারায় লিড নেয়া হয়নি জেরার্ডো মার্টিনোর দলের। এরই খেসারত দিয়ে ২৮ মিনিটে পিছিয়ে পড়ে আর্জেন্টিনা। ম্যাচে চালকের আসনে চলে আসে পাঁচবারের বিশ্বসেরারা। দুই আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডারের ভুলের সুযোগে ফাঁকায় বল পেয়ে যান স্ট্রাইকার দিয়েগো তারদেলি। শূন্যে ভাসা বল কিয়ার করতে গিয়ে ব্যর্থ দুই রক্ষণকর্মী। ফলে ফাঁকায় বল পেয়েই ডান পায়ের কোনাকুনি ভলিতে সার্জিও রোমেরোকে পরাস্ত করেন তারদেলি (১-০)। ব্রাজিলিয়ান সমর্থকদের তখন বাঁধভাঙা উল্লাস। এরপর ৪০ মিনিটে সমতার সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। রেফারির বদান্যতায় অবশ্য এই স্পট কিক। ডিফেন্ডার ডেনিলো বলের ওপর পা চালালেও রেফারির দৃষ্টিতে তা ডি মারিয়ার পায়ে মারা হয়েছে। অবশ্য এ সুবিধাকেও পুঁজি করতে পারেননি মেসি ও তার দল আর্জেন্টিনা। পেনাল্টি শট স্পেশালিস্ট মেসির শট ডান দিকে শরীর ফেলে রুখে দেন জেফারসন। ফিরতি বলে আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার মার্কেস রহোর শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ম্যাচে মেসির মতো গোলের দেখা পাননি তারকা স্ট্রাইকার ব্রাজিলের নেইমারও। তাতেও ব্রাজিলের জয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। কারণ ওই তারদেলি। ৬৪ মিনিটে কর্নার থেকে আসা বল ডেভিড লুইজের মাথা ঘুরে তারদেলির কাছে আসা মাত্রই তার হেড। তারদেলির হেডের মাধ্যমে আসা দ্বিতীয় গোলের সময় বিফলে যায় রোমেরোর শেষ প্রতিরোধ (২-০)। এরপর আর্জেন্টিনা বারবার চেষ্টা করেও ব্যবধান কমাতে পারেনি মূলত মেসির ফ্রিকিকগুলো অল্পের জন্য মিস হওয়ায় এবং ব্রাজিলিয়ান কিপার জেফারসনের দৃঢ়তায়। ফলে ল্যাটিন শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে জয় নিশ্চিত হয় ব্রাজিলের। চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে এই বিজয় তাদের বিশ্বকাপের ব্যর্থতা কিছুটা হলেও লাঘব করবে।

No comments:

Post a Comment