রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষের জন্য প্লট ও ফ্ল্যাটের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের (এনএইচএ)। গৃহায়ণসেবা
র জন্য এটিই একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান। তবে জনসেবায় তাদের মনোযোগ তত নেই, যতটা নিজেদের জন্য আছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই নিজেদের নামে পাঁচ-ছয়টি করে প্লট-ফ্ল্যাট নিয়ে নিচ্ছেন। অনেকে নিজ নামে নেওয়ার পর স্ত্রী-সন্তান ও নিকট আত্মীয়স্বজনের নামে একাধিক বরাদ্দ নিয়েছেন। ছোট পরিসরের এ সরকারি প্রতিষ্ঠানের অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর কথা জানা গেছে, যাঁরা নিয়মবহির্ভূতভাবে উপর্যুক্ত কাজটি করেছেন। অথচ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিধিতেই বলা হয়েছে, একটির বেশি কেউ বরাদ্দ নিতে পারবে না; আবার চাকরির মেয়াদ দুই বছর না হলে বরাদ্দ নেওয়া যাবে না। মহাজোট সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খানের সময় অনিয়মের এসব ঘটনা ঘটে। সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ হিসেবে তাঁর যতটুকু নজরদারি করার কথা ছিল, সেটা তিনি করেননি বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ। বাস্তবে এসব নিয়মকে থোড়াই কেয়ার করা হচ্ছে। অনেকেই মানছেন না এসব। বরং এ সংস্থায় চাকরির সুবাদে নিজের নামে প্লট-ফ্ল্যাট বরাদ্দ নেওয়ার অঘোষিত প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন সংশ্লিষ্টরা। কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিভিন্ন সময়ে সংস্থাটির অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ নামে দুই শতাধিক প্লট-ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়েছেন। পিয়ন থেকে শুরু করে অতিরিক্ত সচিব পর্যন্ত এ তালিকায় রয়েছেন। জানা গেছে, এনএইচএ ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে পৃথকভাবে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে। গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী নিয়ম ভেঙে বরাদ্দ নিয়েছেন যাঁরা তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই এ ধরনের দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে। না হলে পরে সরকারের পক্ষে এর নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যারা সরকারের হয়ে প্লট-ফ্ল্যাট বিতরণের দায়িত্বে থাকে, তারাই যদি লুটপাটে ব্যস্ত হয়ে পড়ে তাহলে তো খুবই সমস্যা। আমার বিষয়টি জানা ছিল না। এখন সংস্থার চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হবে এসব অনিয়ম খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। কোনো প্রকার অন্যায়-অনিয়মকে ছাড় দেওয়া হবে না।’ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ নামে একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়েছেন তাঁদের মধ্যে সদস্য প্রকৌশল ও সমন্বয় (অতিরিক্ত সচিব) মো. সানোয়ার আলী গোপালগঞ্জ হাউজিং প্রকল্প থেকে তিন কাঠার প্লট, মাদারীপুরের শিবচরে একটি প্লট ও কক্সবাজারে একটি ফ্ল্যাট নিয়েছেন এবং গ্রহায়ণ কর্তৃপক্ষের সচিব মোজাহেদ হোসেন মিরপুর ৩৬০ প্রকল্পে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও কুষ্টিয়া হাউজিং এস্টেটে আড়াই কাঠার প্লট নিয়েছেন। অন্যদের মধ্যে উপপরিচালক (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা বিভাগ) কাজী মোহাম্মদ হাসান চট্টগ্রামের হালিশহর ও কক্সবাজারে একটি করে ফ্ল্যাট; নির্বাহী প্রকৌশলী (পরিকল্পনা বিভাগ) গাজী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন লালমাটিয়া ১৮২ প্রকল্পে ফ্ল্যাট, মাদারীপুরের শিবচরে তিন কাঠার প্লট, গোপালগঞ্জে পাঁচ কাঠার প্লট ও কক্সবাজারে ফ্ল্যাট; নির্বাহী প্রকৌশলী (খুলনা হাউজিং অফিস) সাঈদ রেজা লালমাটিয়ায় ফ্ল্যাট, মোহাম্মদপুরে ফ্ল্যাট, শরীয়তপুরে তিন কাঠা ও কুষ্টিয়ায় আড়াই কাঠার প্লট; নির্বাহী প্রকৌশলী (চট্টগ্রাম হাউজিং) শাহজালাল চৌধুরী চট্টগ্রামের পিংক সিটি ও হালিশহরে একটি করে প্লট; সহকারী পরিচালক (অর্থ) গুলরুখ খাদিজা জাহান লালমাটিয়া ১৮২ প্রকল্পে ফ্ল্যাট ও শরীয়তপুরে সাড়ে তিন কাঠার প্লট; সাবেক উপপরিচালক কালীরঞ্জন বর্মণ চট্টগ্রামের কৈবল্যধামে পাঁচ কাঠা, বি/৫ এক হাজার বর্গফুট ফ্ল্যাট ও শিবচরে একটি প্লট; উপবিভাগীয় প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান খুলনা, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জে একটি করে প্লট; উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (বগুড়া হাউজিং) মো. আবু হোরায়রা চট্টগ্রামে পাঁচ কাঠা, শিবচর ও মাগুরায় একটি করে প্লট; উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (দিনাজপুর হাউজিং) মো. মঈনুল হক মোতাইদ মিরপুরের আনন্দনগরে একটি ও চট্টগ্রামের হালিশহরে একটি করে ফ্ল্যাট; উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (ইএম ডিভিশন) মিরাজ হোসেন শরীয়তপুর ও শিবচরে একটি করে প্লট এবং লালমাটিয়ায় একটি ফ্ল্যাট; উপসহকারী প্রকৌশলী (মোহাম্মদপুর হাউজিং) হামিদুর রহমান লালমাটিয়ায় একটি ফ্ল্যাট, খুলনা, শরীয়তপুর ও কুষ্টিয়ায় একটি করে প্লট; উপসহকারী প্রকৌশলী হেমায়েত হোসেন শিবচরে পাঁচ কাঠার প্লট, কুষ্টিয়ায় প্লট ও চট্টগ্রামের কৈবল্যধাম প্রকল্পে পাঁচ কাঠার প্লট; উপসহকারী প্রকৌশলী (সিলেট হাউজিং) মো. রুহুল আমিন নাটোর ও পাবনায় একটি করে প্লট; উপসহকারী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম মিরপুরে এক হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট ও কুষ্টিয়ায় একটি প্লট; প্রশাসনিক কর্মকর্তা (খুলনা হাউজিং) মো. রুহুল আমিন মিরপুরের আনন্দনগর ও কক্সবাজারে একটি করে ফ্ল্যাট; উপসহকারী প্রকৌশলী (রাজশাহী হাউজিং) হুমায়ূন কবির নাটোরে প্লট, কক্সবাজারে ফ্ল্যাট ও কুষ্টিয়ায় প্লট; অফিস সহকারী জামাল হোসেন চট্টগ্রামের হালিশহরে এক হাজার ২২৪ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, চট্টগ্রামের পিংক সিটিতে প্লট ও খুলনায় তিন কাঠার একটি প্লট; চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয়ের অফিস সহকারী শিহাব উদ্দিন চৌধুরী পিংক সিটি, শেরশাহ ও রাউজানে একটি করে মোট তিনটি প্লট; এমএলএসএস কাজল গুহ শিবচরে প্লট ও কক্সবাজারে ফ্ল্যাট; এমএলএসএস রফিকুল ইসলাম কুষ্টিয়ায় ও শিবচরে একটি করে প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। সংস্থাটির বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে প্লট-ফ্ল্যাটগ্রহীতা আরো কয়েকজন রয়েছেন। আমজাদ হোসেন কক্সবাজারে ফ্ল্যাট, নাটোর ও কুষ্টিয়ায় একটি করে প্লট; জাহিদ হোসেন শরীয়তপুরে প্লট ও কক্সবাজারে ফ্ল্যাট; মো. নাসির উদ্দিন শরীয়তপুরে তিন কাঠা, গোপালগঞ্জে তিন কাঠা ও কুষ্টিয়ায় একটি প্লট; আব্দুল আলী ঢাকার লালমাটিয়ায় ফ্ল্যাট ও গোপালগঞ্জে প্লট; কাশেম হাওলাদার গোপালগঞ্জে তিন কাঠা, শরীয়তপুরে সাড়ে তিন কাঠা, মাগুরা ও কুষ্টিয়ায় একটি করে মোট চারটি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। মো. জাহাঙ্গীর আলম চট্টগ্রামে পাঁচ কাঠার একটি ও শিবচরে একটি প্লট নিয়েছেন। এ ব্যাপারে সদস্য প্রকৌশল ও সমন্বয় (অতিরিক্ত সচিব) সানোয়ার আলী বলেন, ‘মন্ত্রণালয় যে নির্দেশনা দিয়েছে তা আমরা পেয়েছি অনেক পরে। নির্দেশনা পাওয়ার পর আমি একটি রেখে বাকিগুলো সমর্পণ করেছি। ইতিমধ্যে আমার সমর্পণের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের ১৩১তম বোর্ড সভায় অনুমোদিত হয়েছে। আমি না জেনেই কাজটি করেছি।’ এনএইচের সচিব মো. মোজাহেদ হোসেন দাবি করেন, মন্ত্রণালয় একটি নয়, দুটির বেশি বরাদ্দ নেওয়া যাবে না- এমন নির্দেশনা দিয়েছে। তাই তিনি একটি প্লট ও একটি ফ্ল্যাট নিয়েছেন। নির্বাহী প্রকৌশলী (পরিকল্পনা) গাজী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি যে ছয়টি প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়েছি সেগুলোর বেশির ভাগ লটারির মাধ্যমে। নীতিমালার কথা জানা নেই। তাই এগুলো সমর্পণেরও প্রয়োজন নেই।’ চট্টগ্রাম হাউজিং অফিসের সহকারী শিহাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমি দুটি প্লট বরাদ্দ নিয়েছি। এগুলো কর্তৃপক্ষ বরাবরে ফেরত দিয়ে দেব।’ খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী সাঈদ রেজা বলেন, ‘আমরা বিজ্ঞপ্তি দেখে লটারির মাধ্যমে এগুলো নিয়েছি। এখন সরকার যদি মনে করে এগুলো নিয়মমাফিক হয়নি তাহলে বাতিল করে দেবে।’ বগুড়ার উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবু হোরায়রা বলেন, ‘শুনেছি, মন্ত্রণালয়ের একটি সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে এটি নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। মাগুরার প্লটটি নির্বাহী প্রকৌশলী আমাকে ডেকে দিয়েছেন।’ এনএইচএর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি, মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত সবার জানা ছিল না। তাই সে সময়ে একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়েছেন। এখন তাঁরা নিয়ম মেনে অতিরিক্তগুলো সমর্পণ করবেন। ইতিমধ্যে সাত-আটজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ১৫টির মতো প্লট ও ফ্ল্যাট কর্তৃপক্ষ বরাবর সমর্পণ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী এখন সমর্পণ করছেন তাঁদের বেশির ভাগ দুদকের মামলার ভয়ে করছেন। তাঁদের আয়করের নথি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, কী পরিমাণ অপ্রদর্শিত অর্থ তাঁদের রয়েছে। একজন অফিস সহকারী বা চালকও নিজ নামেই চার-পাঁচটি বরাদ্দ নিয়েছেন। তাঁরা স্ত্রী-সন্তান ও নিকটাত্মীয়দের নামেও বেশ কিছু প্লট-ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়েছেন। দুর্নীতিবাজ এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী বরাদ্দ নেওয়ার সময় বিষয়টি যে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে তা বুঝতে পারেননি।’ ওই কর্মকর্তা বলেন, এখন মন্ত্রণালয় ও দুদক যদি তদন্ত কমিটি করে তাহলে অনেকে ফেঁসে যাবে। এনএইচএতে চাকরি করেছে, অথচ প্লট বা ফ্ল্যাট নেয়নি এমন ব্যক্তি খুুঁজে পাওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান খন্দকার আখতারুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী একের অধিক প্লট-ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়েছেন তাঁদের একটি রেখে বাকিগুলো কর্তৃপক্ষ বরাবরে সমর্পণ করার কথা জানানো হবে। এরপর যাঁরা সমর্পণ করবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কারণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সংরক্ষিত কোটায় একের অধিক কেউ বরাদ্দ নিতে পারেন না।’ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্লট-ফ্ল্যাট বরাদ্দ নেওয়া সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, যা পরবর্তী সময়ে গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা আছে, সংরক্ষিত কোটায় কেউ একটির বেশি প্লট বা ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিতে পারবেন না। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যাঁদের চাকরির কার্যকাল দুই বছর হবে না তাঁরা বরাদ্দ নিতে পারবেন না। কিন্তু অনেকেই এ নিয়মের তোয়াক্কা করছেন না। জানা গেছে, সংস্থার উপপরিচালক-২ (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা) কাজী মোহাম্মদ হাসান যোগদান করেই দুটি প্রকল্পে দুটি ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি যে দুটি ফ্ল্যাট বরাদ্দ পেয়েছি সেগুলো এখনো বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। গৃহায়ণে আমি নতুন এসেছি; নীতিমালার কথা জানা নেই।’ এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়েছেন মহাজোট সরকারের সময়। ওই সময় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন অ্যাডভোকেট মান্নান খান। তাঁর আমলে কুষ্টিয়া প্লট প্রকল্প, চট্টগ্রামের কৈবল্যধাম প্লট প্রকল্প, মাদারীপুরের শিবচর প্লট প্রকল্প, রাজধানীর লালমাটিয়ায় ১৮২ ফ্ল্যাট প্রকল্প, কক্সবাজারে ফ্ল্যাট প্রকল্প, মোহাম্মদপুরের এফ-ব্লক ফ্ল্যাট প্রকল্প, রাজধানীর মিরপুরের আনন্দনগর ফ্ল্যাট প্রকল্প, গোপালগঞ্জ ও শরীয়তপুরের প্লট প্রকল্পের লটারি ড্র করা হয়। এই অনিয়মে মান্নান খানের পক্ষ থেকে কোনো বাধা ছিল না। বরং নীরবতা অবলম্বন করে তিনি বিষযটিকে অনুমোদনই করেছেন। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) নামের সংগঠনটির সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অন্যায়ভাবে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজটি করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের উচিত এখন বিষয়টি কঠোর হাতে দমন করা।’ সংস্থাটির অনিয়ম ও দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি টিম কাজ শুরু করেছে। গৃহায়ণ ভবনের সপ্তম তলায় টিমের একটি ক্যাম্প অফিসও বসানো হয়েছে। টিমের প্রধান দুদকের উপপরিচালক হামিদুল হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নিয়মবহির্ভূতভাবে যাঁরা একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়েছেন তাঁদের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার কাজ শুরু করেছি। বরাদ্দের সংখ্যা ও গ্রহীতার নাম পাওয়ার পর নিয়মিত মামলা দায়ের করা হবে। দুদকের মহাপরিচালক মহোদয়ের নির্দেশে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির খোঁজে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কেউ অনিয়ম-দুর্নীতি করে রেহাই পাবেন না।’
No comments:
Post a Comment