বাংলাদেশের ইতিহাসে এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় প্রকল্প মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প। ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ প্রকল্পটিতে
অর্থায়ন করছে জাপানের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান জাইকা। এই প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন হবে। একই সঙ্গে নির্মাণ করা হবে আধুনিক সুসজ্জিত একটি স্যাটেলাইট শহরও। গুরুত্ব বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি এই প্রকল্পের নজরদারি করছেন। অনেক আশা আর স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরেজমিন দৌড়াদৌড়ি করছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ নিজেও। অথচ সেই প্রকল্পে শুরুতেই ঘটে গেছে বিদ্যুৎ বিভাগের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে সবচেয়ে বড় দুর্নীতি। জমির ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে মাত্র ৩ শতাংশ মানুষকে। অবাক করার বিষয় হলো, শুরুতেই মৎস্যজীবীদের ক্ষতিপূরণের নামে ২৩ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট। আরো ২২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিতে এই সিন্ডিকেট মরিয়া। আর প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ক্ষতিপূরণের অর্থ পেতে ১০ শতাংশ হারে ঘুষ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। জানা গেছে, ২৩ কোটি টাকা ভুয়া মৎস্য প্রকল্পের নামে লোপাট করার পর প্রাথমিক তদন্তে জালিয়াতির ঘটনা ধরে পড়লে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৩ প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে পৃথক ২৩টি সার্টিফিকেট মামলা (অর্থ আদায়ের মামলা) করা হয়েছে। বাদী জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আরেফিন আক্তার নূর। অথচ এই আরেফিন আক্তার নূরের স্বাক্ষরেই প্রতারকরা ২৩ কোটি টাকার চেক হাতিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, একজন অভিযোগকারী হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের যেসব কাগজপত্র জমা দেওয়ার কথা স্থানীয় জেলা প্রশাসকের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তার কিছুই দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ ইতিমধ্যে যারা ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়েছে তাদের বৈধ কাগজপত্রও নেই। জানা গেছে, বৈধ কাগজপত্র দাখিল করে উপযুক্ত প্রমাণ দেওয়ার পরই কেবল ঘেরের ক্ষতিপূরণ বাবদ চেক ইস্যু হওয়ার কথা। অথচ কোনো কাগজপত্র ও ঘের আছে এমন প্রমাণাদি না রেখেই বিপুল অঙ্কের অর্থ ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে। একেবারে হাওয়ার ওপর ২৩ প্রতারককে ২৩ কোটি টাকা দিয়ে দেওয়ার বিপরীতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলার সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সরকারি টাকা ছাড় করতে হলে কিছু নিয়ম-কানুন পালন করতে হয়। কিন্তু কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তেমন কোনো দায়িত্বই পালন করেননি। ক্ষতিপূরণের নামে ইতিমধ্যে ২৩ কোটি টাকা বেরিয়ে গেলেও জমি ও ঘেরের প্রকৃত মালিকরা কোনো অর্থ পাননি।’ জানা গেছে, ভুয়া ঘের মালিক সাজিয়ে ২৩ প্রতারক প্রায় ২৩ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। আরো ৪৫ প্রতারকের নামে ২২ কোটি টাকা ছাড়করণের বিষয়টিও চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অথচ প্রকৃত জমির মালিকদের ৯৭ শতাংশই এখন পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাননি। আর পুরো বিষয়টিতে সরাসরি যোগসাজশ রয়েছে ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সাবেক প্রধান সহকারী আবুল কাশেম মজুমদার, কানুনগো আবদুল কাদের, সার্ভেয়ার ফখরুল ইসলাম ও বাদশা মিয়ার। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কার্যালয় সূত্র জানায়, জাইকা জমি অধিগ্রহণের জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। এর মধ্যে ইতিমধ্যে প্রায় ৪০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩ কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ জাফর আলমকে প্রধান করে এ মাসের প্রথম দিকে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) আলেফ উদ্দিনকে প্রধান করে আরেকটি কমিটিও করা হয়েছে। তবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ঘুষের অভিযোগ আনায় তদন্ত ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। মাতারবাড়ী প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যে এক হাজার ৪১৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে চিংড়ি চাষের জমি পড়েছে এক হাজার ৩৩৫ একর। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারি সংস্থা কোল পাওয়ার জেনারেশন কম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) ইতিমধ্যে অধিগ্রহণ করা জমি বুঝে নিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজও শুরু করেছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৩ সালে। জমি অধিগ্রহণে দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে সিপিজিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষে জেলা প্রশাসককে অর্থ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু জেলা প্রশাসক ভূমি অধিগ্রহণের সঙ্গে আইনিভাবেই যুক্ত। সে কারণে জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কাকে অর্থ দিয়েছেন তা আমি জানি না। এখানে কোনো দুর্নীতি হয়েছে কি না তা বলতে পারবেন জেলা প্রশাসক।’ এ বিষয়ে বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, ‘ভুয়া জেলেদের নাম দিয়ে কোটি কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। এটা বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য সত্যিই লজ্জার, কলঙ্কের। আমরা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ রকম একটি দুর্নীতি কিভাবে হলো তা-ও খতিয়ে দেখব।’ কক্সবাজারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করছি। দোষীদের শাস্তির মুখোমুখি করা হবে। অর্থ আদায়ের জন্য ইতিমধ্যে সার্টিফিকেট মামলা করা হয়েছে।’ জানা গেছে, কক্সবাজারের মাতারবাড়ী ও ধলঘট প্রকল্প এলাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জমির প্রয়োজন ছিল প্রায় এক হাজার ৫০০ একর। এর মধ্যে এক হাজার ৪১৪ একর ব্যক্তি খাতের, বাকিটা সরকারের পানি উন্নয়ন বোর্ডের। এ প্রকল্প এলাকায় চিংড়ি ও লবণ চাষ হতো। মে মাসের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত চিংড়ি চাষ হয়। বাকি ছয় মাস লবণ চাষ করা হয়। ঘের মালিকরা প্রতিবছর মালিকের কাছ ছয় মাসের জন্য জমি ভাড়া নেন। এ প্রকল্প এলাকায় চিংড়ি চাষের জন্য বড় ধরনের কোনো অবকাঠামোও করতে হয় না। তবুও প্রকৃত চিংড়ি ঘেরের মালিকরা এই ক্ষতিপূরণ পেলে এত প্রশ্ন উঠত না। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, মাতারবাড়ীর মাইজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শাহদাত হোসেন নাসির ১২০ একরের একটি চিংড়ি ঘের করতেন। তাঁর ঘেরের নাম ‘আনিছেরদিয়া চিংড়ি প্রজেক্ট’। এই ঘেরের নামে এক কোটি ৪৮ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে ক্ষতিপূরণ হিসেবে। তবে সেই টাকার কিছুই পাননি শাহদাত হোসেন নাসির। তাঁর পরিবর্তে এই ঘেরের ক্ষতিপূরণের টাকা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ধারী ছালেহ আহমদ সামাদ নিয়েছেন এক কোটি ১১ লাখ ও মো. হারুন নিয়েছেন ৩৭ লাখ টাকা। শাহদাত হোসেন নাসির বলেন, ‘এখন আমি কার কাছে যাব? কার কাছে নালিশ জানাব? আমার নাম বাদ দিয়ে সামাদ ও হারুনের নাম ঢুকিয়েছে স্থানীয় ডিসি অফিস।’ সিন্ডিকেটে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি : জানা গেছে, চিংড়ি ঘেরের নামে ভুয়া ২৩ মৎস্য ব্যবসায়ী ২৩ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার পেছনে রয়েছেন মাতারবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছমি উদ্দিন, তাঁর ছোট ভাই আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচিত জমির উদ্দিন ও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। আর এই ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে মহেশখালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশিউর রহমানের যোগসাজশে। জানা গেছে, মাতারবাড়ী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক রফিকুল ইসলাম ভেন্ডার এলাকার সবার জমিজমা সম্পর্কে ভালো খোঁজখবর রাখেন। ইউনিয়ন বিএনপির এই সাধারণ সম্পাদক কখনোই ঘের ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। তাঁর সহায়তায় স্থানীয় জেলা প্রশাসনের জমি অধিগ্রহণ শাখার প্রধান সহকারী আবুল কাশেম মজুমদার কথিত ঘের মালিকদের তালিকা করেন। সঙ্গে নেন ধলকাটা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ বাচ্চু, জমির উদ্দিন ও সাত্তারকে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, অভিনব এই জালিয়াতিতে এক চিংড়ি ঘেরের মালিক হিসেবে একাধিক ব্যক্তিকে দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে টিয়াখাটি চিংড়ি প্রজেক্টের নামে একে একে আট ব্যক্তি ৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন। তাঁরা হলেন- সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা জমির উদ্দিন, এরফান, আনিছুর রহমান, রিদুয়ান, মীর কাশেম, মো. সেলিম উদ্দিন, মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম। এঁদের মধ্যে এরফান ও সেলিম জমির উদ্দিনের আপন ভাতিজা। এই সিন্ডিকেটের মধ্যে একমাত্র জাহাঙ্গীর আলম একসময় টিয়াখাটি চিংড়ি প্রজেক্ট নামে একটি ঘের পরিচালনা করতেন। জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলমের টিয়াখাটি চিংড়ি প্রজেক্টের নামে ৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা বরাদ্দ এনে তাতে আরো সাত ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ভেন্ডার রফিকুল ইসলাম রুস্তুমের ঘোনা চিংড়ি প্রজেক্টের নামে হাতিয়ে নিয়েছেন দুই কোটি ২২ লাখ ৯০ হাজার ৩২৫ টাকা। রফিক ভেন্ডারের এই সিন্ডিকেটে রয়েছেন তাঁর আপন শ্যালক মো. হারুন, শ্বশুর ছালেহ আহমেদ সামাদ ও আরেক আত্মীয় আমিনুল ইসলাম। এর মধ্যে হারুন আনিছেরদিয়া চিংড়ি ঘেরের নামে ৩৭ লাখ তিন হাজার ৬২৩ টাকা ও একই ঘেরের নামে ছালেহ আহমেদ সামাদ এক কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার ৮৬৯ টাকা এবং আমিনুল ইসলাম মগডেইল্যাঘোনা চিংড়ি ঘেরের নামে এক কোটি ২৫ লাখ ৫১ হাজার ১৬৭ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়া ধলকাটা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ বাচ্চু মুহুরীঘোনা চিংড়ি ঘেরের নামে তুলে নিয়েছেন ৬৮ লাখ ৫৮ হাজার ৫৬১ টাকা। এই ঘেরের নামে কথিত ঘের ব্যবসায়ী দানু মিয়া ও চমি উদ্দিন এক কোটি ছয় লাখ ৬৮ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণের টাকা পকেটে ভরেছেন। আমিনুল ইসলাম এক কোটি ২৫ লাখ ও আশরাফ আলী এক কোটি ছয় লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ছোয়ান মাঝিরঘোনা নামের কথিত চিংড়ি প্রকল্পের নামে এস্তেফাজুল হক ও ছকি আলম ৩৪ লাখ ২৯ হাজার টাকা প্রতিজনে হাতিয়ে নিয়েছেন। আরো যাঁরা কথিত ঘেরের ক্ষতিপূরণের নামে অর্থ তুলে নিয়েছেন তাঁরা হলেন- নুর মোহাম্মদ (১৪ লাখ ৪০ হাজার), আবুল বশর (৩০ লাখ), রুহুল আমিন (২৫ লাখ), মো. সেলিম (এক কোটি ৩৩ লাখ) ও মহিবুল ইসলাম (এক কোটি ৯ লাখ টাকা)। মাতারবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইনামুল হক চৌধুরী রুহুল কালের কণ্ঠকে এ ব্যাপারে বলেন, ‘স্থানীয় জমির ক্ষতিগ্রস্তরা এখনো টাকা পায়নি। আর ডিসি ভুয়া ঘের মালিকদের ইতিমধ্যে ২৩ কোটি টাকার চেক দিয়েছেন। আরো ২২ কোটি টাকার চেক দেওয়ার জন্য ভুয়া ঘের মালিকদের তালিকাও চূড়ান্ত করা হয়েছে।’ সিন্ডিকেটের কথা স্বীকার করেন ভেন্ডার রফিকুল ইসলাম। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমার ঘের ছিল। ঘেরের ক্ষতিপূরণ হিসেবে আমি টাকা পেয়েছি।’ প্রকল্প এলাকায় নিজের কোনো জমি নেই স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি অন্যের জমি ভাড়া নিয়ে ঘের করেছি।’ জমি ভাড়ার কোনো বন্দোবস্তের কাগজপত্র আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জমি ভাড়ার কোনো কাগজপত্র নেই। ঘেরেরও কোনো কাগজপত্র নেই।’ ১০ পার্সেন্ট না পেলে ফাইল নড়ে না : মাতারবাড়ী তিতামাঝির ঘাটের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে জমি দিয়ে স্থানীয় কৃষকরা এখন বেকায়দায় পড়েছেন। ক্ষতিপূরণের অর্থ আনতে গেলে স্থানীয় জেলা প্রশাসন অফিস থেকে বলা হচ্ছে ১০ পার্সেন্ট দিতে হবে। আর এই অর্থ যাবে জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পকেটে। তা না হলে ফাইল এগোবে না। শুধু সাইফুল নয়, প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মঞ্জুরুল আলম, জহুরুল আলমসহ অনেকেই এমন অভিযোগ করেন। বিশেষত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) মাধ্যমে ঘুষ আদায়ের বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে- এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, ‘অর্থ ছাড়ের বিষয়টি নিয়ে আমরা খুব সতর্কতার সঙ্গে এগোচ্ছি। কারো বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
No comments:
Post a Comment