রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। গতকাল পর্ষদ বৈঠকে আগামী রোববারের মধ্যে ব্যাংকগুলোর আর্থিক পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পর্ষদ সদস্যদের কাছে পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া, বেসিক ব্যাংকের অপসারিত এমডির শাস্তি মওকুফের আবেদন নাকচ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আর্থিক সূচকের ওপর ভিত্তি ক
রে প্রতি বছর ব্যাংকগুলোর মানদণ্ড নির্ণয় (ক্যামেলস রেটিং) করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর ওপর একটি মেমো তৈরি করে পরিচালনা পর্ষদে উত্থাপন করা হয়। সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, গত জুন প্রান্তিকে ব্যাংক চারটির মোট খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ১৯ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা, যা গত মার্চ প্রান্তিকে ছিল ১৮ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় পাশাপাশি ব্যাংক চারটির মন্দ ঋণও বেড়েছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। গত মার্চ প্রান্তিকে চার ব্যাংকের মন্দ ঋণ ছিল ১৫ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা, যা জুন শেষে বেড়ে হয়েছে ১৬ হাজার ৬৪৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট খেলাপি ঋণের ৮৫ শতাংশই মন্দ ঋণ। এ মন্দ ঋণের কারণে কাক্সিত হারে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে পারছে না। শুধু সোনালী ও রূপালী ব্যাংকেরই প্রভিশন ঘাটতি হয়েছে এক হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা। মন্দ ঋণ বেড়ে যাওয়ায় সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি দেখা দিয়েছে এক হাজার ৫১১ কোটি টাকা ও রূপালী ব্যাংকের ২১৭ কোটি টাকা। এ দিকে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংকের অপসারিত এমডি কাজী ফখরুল ইসলামের শাস্তি মওকুফের আবেদন নাকচ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে গত ২৫ মে তাকে অপসারণ করে বাংলাদেশ বাংক। তাকে অপসারণের পাশাপাশি পরবর্তী দুই বছর অন্য কোনো ব্যাংকে যোগ দেয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। ফখরুল ইসলাম ওই শাস্তি মওকুফের আবেদন করলে বাংলাদেশ ব্যাংক তার পরিচালনা পর্ষদের কাছে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চায়। গতকাল পর্ষদের বৈঠকে ফখরুল ইসলামের শাস্তি মওকুফের আবেদন নাকচ করা হয়েছে। জানা গেছে, অপসারিত হওয়ার পর প্রথম দিকে ফখরুল ইসলাম ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে যোগাযোগ করেন। বেসিক ব্যাংকে চাকরি ফেরত না পেলেও অন্য ব্যাংকে কাজ করার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করানোর জন্য জোর চেষ্টা ছিল তার। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্ষদ তার অনুরোধ রাখেনি। এমনকি বেসিক ব্যাংক থেকে ফখরুল ইসলামকে অপসারণের পর তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা না নেয়ায় বিভিন্ন প থেকে সমালোচনা ওঠে। ফৌজদারি ব্যবস্থা নেয়ার সুবিধার্থে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুদকে প্রতিবেদন দিয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে ফখরুল ইসলাম দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন এবং বর্তমানে সপরিবারে তিনি মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
No comments:
Post a Comment