Friday, December 5, 2014

নড়ে উঠল ‘লাশ’:প্রথম অালো

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক নারীকে মৃত ঘোষণা করেছিলেন চিকিৎসকেরা। মর্গে নেওয়ার জন্য ট্রলিতে ওঠানোমাত্রই নড়েচড়ে ওঠেন ওই নারী। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তোলপাড় শুরু হয়।  হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেলের সামনে অবৈধ দোকান উচ্ছেদের সময় ওই নারীকে ফুটপাতে পড়ে থাকতে দেখেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুস্তাফিজুর
রহমান। পরিচালকের নির্দেশে ওই দিন ওই নারীকে হাসপাতালের নতুন ভবনের ৮০২ নম্বর ওয়ার্ডের ৭ নম্বর ইউনিটে ভর্তি করা হয়। গতকাল বেলা দুইটার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করে মৃত্যুসনদ লেখেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। মৃত্যুসনদ নিয়ে ওয়ার্ড বয় বেলাল ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গ অফিসে যান। মর্গের কর্মকর্তা নূরে আলম বাবুল মৃত্যুসনদ দেখেন। এরপর তিনি লাশ মর্গে নিয়ে আসার জন্য বেলালের সঙ্গে মর্গকর্মী আজিজকে পাঠান। আজিজের হাতে মৃত্যুসনদসহ বিভিন্ন কাগজপত্রও দেওয়া হয়। আজিজ ও বেলাল ওই ওয়ার্ডে গিয়ে লাশ ট্রলিতে তুলছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে ওই নারীর হাত নড়ে ওঠে। এতে বেলাল ও আজিজ চিৎকার দেন। ভয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন অন্যান্য রোগীর স্বজনেরা। সূত্র জানায়, এমতাবস্থায় ওয়ার্ড বয় বেলাল আজিজের কাছ থেকে মৃত্যুসনদ ছিনিয়ে নেন। বেলাল চিকিৎসকের কক্ষে গিয়ে রোগী জীবিত আছে বলে জানান। তখন এক চিকিৎসক রোগীকে দেখে তাৎক্ষণিকভাবে স্যালাইন দিতে বলেন। স্যালাইন দেওয়ার পর ওই রোগীর হাত-পা নড়ে ওঠে। জানতে চাইলে ওই চিকিৎসক সাংবাদিকদের জানান, অজ্ঞাতনামা হিসেবেই ওই নারীকে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি পুষ্টিহীনতায় ভুগছিলেন। ওই রোগীর হৃৎকম্পন ছিল না বলেই তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই নারীর মৃত্যুসনদে লেখা হয়েছে, হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। মৃত্যুসনদের নিচে একজন সহকারী রেজিস্ট্রারের সিলসহ একটি স্বাক্ষর আছে। জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেলের ৮০২ নম্বর ওয়ার্ডের একজন সহকারী রেজিস্ট্রার সাংবাদিকদের জানান, ভুল বোঝার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি দাবি করেন, ওই মৃত্যুসনদে তিনি স্বাক্ষর করেননি। একজন অবৈতনিক মেডিকেল অফিসার (এইচএমও) স্বাক্ষর করেছেন। তবে ওই মেডিকেল অফিসারের নাম বলতে রাজি হননি তিনি। জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক মুশফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ওই নারী মারাত্মক পুষ্টিহীনতায় ভুগছিলেন। বার্ধক্যজনিত সমস্যাও ছিল। মৃত ঘোষণার পর জীবিত থাকার কথা শোনার পর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। একজন অবৈতনিক মেডিকেল অফিসার মৃত ঘোষণা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন। তবে যে-ই করুক, তাঁর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

No comments:

Post a Comment