Friday, December 12, 2014

ছেলের অভিযোগ কাদের মোল্লাকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে:প্রথম অালো

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতা আবদুল কাদের মোল্লাকে সরকার ‘হত্যা’ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর ছেলে হাসান জামিল। গতকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, সর্বোচ্চ আদালতের বিচারের পরে কাদের মোল্লার দণ্ড কার্যক
র হয়েছে। এটাকে যদি তাঁর পরিবার হত্যা বলে ধরে নেয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার প্রসিডিং শুরু করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। মানুষকে বিভ্রান্ত করতে এ বক্তব্য। কাদের মোল্লার পরিবারের পক্ষ থেকে দুপুর ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হাসান জামিল বলেন, ‘২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর সরকার ফাঁসি কার্যকরের নামে মূলত আমার বাবাকে হত্যা করেছে। আমার বাবা যথেষ্ট আইনি সুযোগ পাননি।’ তিনি বলেন, ‘আমার বাবাকে হত্যার ৩৪৮ দিন পর তাঁর করা রিভিউ আবেদনের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এ রায়ে রিভিউ মেইনটেনেবল বলে সুপ্রিম কোর্ট ঘোষণা করেন এবং বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করা যাবে। অথচ রায় প্রকাশের সাত দিনের মাথায় তাঁর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। বাবা দুনিয়া থেকে বিদায়ের আগে জানতে পারলেন না, সংবিধান অনুযায়ী তাঁর রিভিউ করার অধিকার আছে কি না। যখন আইনের পূর্ণাঙ্গ আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়, তখন সেটা হত্যাকাণ্ড ছাড়া আর কিছু নয়। এই সরকার আমার পিতাকে অত্যন্ত নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।’ সংবাদ সম্মেলনে কাদের মোল্লার স্ত্রী সানোয়ার জাহান, আইনজীবী ফরিদ উদ্দিন খান ও সাইফুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। ওই সংবাদ সম্মেলনের পর এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে অ্যাটর্নি জেনারেল তাঁর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বলেছি রিভিউর সুযোগ নেই। তার পরও কাদের মোল্লার পক্ষ থেকে রিভিউ আবেদন করা হয়েছে। রিভিউ পিটিশন দায়ের করবেন—এ কথা বলে চেম্বার জজের কাছ থেকে স্থগিতাদেশ নিয়েছেন। পরবর্তী দিনে এটার শুনানি হয়েছে। শুনানিতে আপিল বিভাগ তাঁর রিভিউ পিটিশন মেরিটে শুনানি করেছেন। শুনানি করে তাঁরা পূর্বের রায় পুনর্বিবেচনা করার মতো কোনো যুক্তি পাননি। কাজেই কাদের মোল্লা সমস্ত সুযোগ পেয়েছেন। বিচারিক আদালতেও তিনি সমস্ত সুযোগ পেয়েছেন। বিস্তারিতভাবে আপিলের শুনানি হয়েছে। সেখানে সুযোগ পেয়েছেন। এই আপিল শুনানিতে আদালত সাতজন অ্যামিকাস কিউরির বক্তব্য শুনেছেন।’ মাহবুবে আলম বলেন, ‘আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছি, রিভিউ চলবে না। রিভিউ আবেদনের শুনানি হয়েছে। শুনানির রায় সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। সেই রায় পড়ার জন্য আমি কাদের মোল্লার পরিবারকে বলব। সেই রায়ে বিস্তারিতভাবে বলা আছে, কেন কাদের মোল্লার রায় পুনর্বিবেচনা করা গেল না। কাজেই এ সময়ে তাঁরা যেসব বক্তব্য রাখছেন, শুধুমাত্র একটি মহলের প্ররোচনায় তাঁরা এগুলো করছেন। এই বিচারকে অহেতুক প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তাঁরা এ সমস্ত বক্তব্য দিচ্ছেন।...মানুষকে বিভ্রান্ত করতে এসব বক্তব্য।’

No comments:

Post a Comment