ি। দ্বিতীয় দফা আটকের পর মে মাসের শেষ ভাগে তাঁকে অন্য বন্দীদের থেকে আলাদা করে রাখা হয়েছিল। তারপর থেকে তাঁর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আবদুল আহাদের আদি নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলীতে। ১৯৫০ সালে এ দেশে আসেন তিনি। ১৯৫১ সালে হাইকোর্টে আইন পেশায় যোগদান করেন। তাঁর সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে অরডিগনাম অ্যান্ড কোম্পানি নামে একট ‘ল’ ফার্ম প্রতিষ্ঠা। ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠান উপমহাদেশের বৃহত্তম ও প্রাচীনতম। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় এর শাখা ছিল। এ ছাড়া ১৯৬১-৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান বণিক সমিতির সভাপতি, ১৯৬২-৬৩ সালে পাকিস্তান বণিক সমিতির সভাপতি ও ১৯৬৫-৬৬ সালে ঢাকা ক্লাবের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালে জেনেভায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার বার্ষিক বিশ্ব সম্মেলনে পূর্ব পাকিস্তানের বণিক ও মালিকদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন। এ দেশের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের সঙ্গেও তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে ছিল তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। তাঁর বড় ভাই প্রখ্যাত সাংবাদিক আবদুল ওয়াহেদের জ্যেষ্ঠ কন্যা সিদ্দিকা জামানের স্মৃতিচারণামূলক রচনা থেকে জানা যায়, পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের বাঙালি কর্মকর্তা সানাউল হক ও এ কে এম আহসান এবং কবি সিকান্দার আবু জাফর ও কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমানের সান্নিধ্যে এসে তিনি শুধু বাঙালি সংস্কৃতিই নয়, এ দেশের রাজনীতির প্রতিও গভীরভাবে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। বাংলাদেশের স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনে তিনি নানাভাবে ভূমিকা রেখেছেন। একাত্তরের উত্তাল দিনগুলোতেও বিভিন্ন কর্মসূচিতে আবদুল আহাদ নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী দ্বিতীয় দফা ধরে নিয়ে যাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। মে মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত তাঁর খোঁজ পেলেও এরপর তাঁর কোনো খোঁজ পাননি তাঁরা। স্বাধীনতার পরও তাঁরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেছেন। কোথাও তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ কারণে তাঁর শহীদ হওয়ার সঠিক তারিখ জানা যায়নি। তবে শোনা যায়, ব্যাপক নির্যাতনের পর মে মাসের শেষ সপ্তাহেই তাঁকে হত্যা করা হয়। আবদুল আহাদের জন্ম ১৯২৩ সালের ২২ নভেম্বর। তাঁর বাবা মরহুম সৈয়দুর রহমান। তিনি কলকাতায় শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৪২ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইতিহাসে অনার্সসহ বিএ পাস করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন আইন কলেজ থেকে ১৯৪৫ সালে ল ও কলকাতার ইনকরপোরেটেড ল সোসাইটি থেকে অ্যাটর্নি অ্যাট ল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বাংলাদেশে আসার আগ পর্যন্ত তিনি কলকাতা হাইকোর্টে আইন ব্যবসা করেন। তিনি দুই কন্যার জনক ছিলেন। সূত্র: শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ, সম্পাদনা রশিদ হায়দার ও শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মারক ডাকটিকিট (চতুর্থ পর্যায়) প্রকাশ উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকা (১৯৯৫)।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Monday, December 15, 2014
শহীদ আবদুল আহাদ:প্রথম অালো
ি। দ্বিতীয় দফা আটকের পর মে মাসের শেষ ভাগে তাঁকে অন্য বন্দীদের থেকে আলাদা করে রাখা হয়েছিল। তারপর থেকে তাঁর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আবদুল আহাদের আদি নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলীতে। ১৯৫০ সালে এ দেশে আসেন তিনি। ১৯৫১ সালে হাইকোর্টে আইন পেশায় যোগদান করেন। তাঁর সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে অরডিগনাম অ্যান্ড কোম্পানি নামে একট ‘ল’ ফার্ম প্রতিষ্ঠা। ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠান উপমহাদেশের বৃহত্তম ও প্রাচীনতম। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় এর শাখা ছিল। এ ছাড়া ১৯৬১-৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান বণিক সমিতির সভাপতি, ১৯৬২-৬৩ সালে পাকিস্তান বণিক সমিতির সভাপতি ও ১৯৬৫-৬৬ সালে ঢাকা ক্লাবের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালে জেনেভায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার বার্ষিক বিশ্ব সম্মেলনে পূর্ব পাকিস্তানের বণিক ও মালিকদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন। এ দেশের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের সঙ্গেও তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে ছিল তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। তাঁর বড় ভাই প্রখ্যাত সাংবাদিক আবদুল ওয়াহেদের জ্যেষ্ঠ কন্যা সিদ্দিকা জামানের স্মৃতিচারণামূলক রচনা থেকে জানা যায়, পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের বাঙালি কর্মকর্তা সানাউল হক ও এ কে এম আহসান এবং কবি সিকান্দার আবু জাফর ও কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমানের সান্নিধ্যে এসে তিনি শুধু বাঙালি সংস্কৃতিই নয়, এ দেশের রাজনীতির প্রতিও গভীরভাবে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। বাংলাদেশের স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনে তিনি নানাভাবে ভূমিকা রেখেছেন। একাত্তরের উত্তাল দিনগুলোতেও বিভিন্ন কর্মসূচিতে আবদুল আহাদ নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী দ্বিতীয় দফা ধরে নিয়ে যাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। মে মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত তাঁর খোঁজ পেলেও এরপর তাঁর কোনো খোঁজ পাননি তাঁরা। স্বাধীনতার পরও তাঁরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেছেন। কোথাও তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ কারণে তাঁর শহীদ হওয়ার সঠিক তারিখ জানা যায়নি। তবে শোনা যায়, ব্যাপক নির্যাতনের পর মে মাসের শেষ সপ্তাহেই তাঁকে হত্যা করা হয়। আবদুল আহাদের জন্ম ১৯২৩ সালের ২২ নভেম্বর। তাঁর বাবা মরহুম সৈয়দুর রহমান। তিনি কলকাতায় শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৪২ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইতিহাসে অনার্সসহ বিএ পাস করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন আইন কলেজ থেকে ১৯৪৫ সালে ল ও কলকাতার ইনকরপোরেটেড ল সোসাইটি থেকে অ্যাটর্নি অ্যাট ল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বাংলাদেশে আসার আগ পর্যন্ত তিনি কলকাতা হাইকোর্টে আইন ব্যবসা করেন। তিনি দুই কন্যার জনক ছিলেন। সূত্র: শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ, সম্পাদনা রশিদ হায়দার ও শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মারক ডাকটিকিট (চতুর্থ পর্যায়) প্রকাশ উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকা (১৯৯৫)।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment