Tuesday, January 20, 2015

অর্থমন্ত্রী এবার বললেন, এক ও দুই টাকা চালু থাকবে:প্রথম অালো

রাত পোহাতেই এক ও দুই টাকার নোট নিয়ে এবার ভিন্ন তথ্য দিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল সোমবার তিনি বলেছেন, এক ও দুই টাকার নোট চালু থাকবে, তবে একসময় উঠে যাবে এগুলো। এর আগে অর্থমন্ত্রী গত রোববার জানিয়েছিলেন, এক ও দুই টাকার নোট বাজার থেকে তুলে নিয়ে ধ্বংস করা হবে। এ জন্য টাকা খরচের কথাও বলেছিলেন। অর্থমন্ত্রীর মন্তব্যের ওপর অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কেউই সরাসরি কথা বলতে চানন
ি। তবে মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজার থেকে এক ও দুই টাকার কাগজি নোট উঠিয়ে নেওয়ার একটি প্রক্রিয়া চলছে। আর পাঁচ টাকার নোটের নিচের সব মুদ্রাই থাকবে ধাতব মুদ্রা আকারে। পাঁচ টাকার কাগজি নোটে সই থাকবে অর্থসচিবের এবং এটিই হবে একমাত্র সরকারি নোট। পাঁচ টাকার ওপরের সব নোটই হবে ব্যাংক নোট। অর্থাৎ পাঁচ টাকার নিচে কাগুজে নোট উঠে গেলেও একই মূল্যমানের ধাতব মুদ্রা থাকবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক অটিজম ও অর্থোপেডিক সম্মেলন শেষে গতকাল সাংবাদিকেরা অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, বাজার থেকে এক ও দুই টাকা উঠিয়ে নেওয়ার বিষয়ে রোববার করা তাঁর মন্তব্যের ব্যাখ্যা কী? জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এক, দুই টাকার দাম কমে গেছে তো। শিগগির কিছু হবে না। এক টাকার নোট ছাপানো কোন জামানায় আমরা বন্ধ করে রেখেছি। এখনো আছে। এটা বাজার থেকে উঠে যেতে অনেক দিন লাগবে।’ এক ও দুই টাকার নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়া হলে ৬, ৭ ও ৯ টাকার লেনদেন করতে তো সমস্যা হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এটা তো সময়ের ব্যাপার। এক ও দুই টাকার নোট যেটা বাজারে আছে, তা চালু থাকবে। জোর করে তো ওঠানো যাবে না। আস্তে আস্তে মানুষ যখন দেখবে এগুলোর ব্যবহার নেই, এমনি এমনিই বাজার থেকে উঠে যাবে এগুলো।’ এক ও দুই টাকার নোট উঠিয়ে দিয়ে সর্বনিম্ন সরকারি নোট পাঁচ টাকা করা হবে বলে রোববার জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। নোটগুলো ধ্বংস করতে ৩০০ কোটি টাকার মতো লাগতে পারে এবং এক টাকা দিয়ে চকলেট পাওয়া যায় না—ওই দিন এসব মন্তব্যও করেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর এসব কথায় বিভ্রান্তিতে পড়ে জনগণ। নাজমুল হোসেন নামের একজন কলেজশিক্ষক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক ও দুই টাকা যখন উঠে যাবে, তখন উঠে যাবে, এ বিষয়ে এখন কথা বলার দরকার কী? আর কাল তিনি যে মন্তব্য করেছেন, আজকে (সোমবার) সুযোগ পেয়েও তা স্পষ্ট করতে পারলেন না।’ প্রতিক্রিয়া: এদিকে অর্থমন্ত্রীর রোববারের বক্তব্যে রাজধানীর বাইরেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়। আমাদের বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি জানান, রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার বৈরামপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম একজন মিষ্টান্ন বিক্রেতা। মালিক মো. রিন্টুর কাছে অর্থমন্ত্রীর রোববারের কথা শুনে খেপে যান শফিকুল। বলেন, ‘অর (অথর্মন্ত্রী) অবস্থা ভালো হইচে। ওমার (তাঁর) তো এক-দুই টাকার কারবার নাই। ওমরা কোটি কোটি টাকার মালিক। হামার কী হইবে?’ রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী আসমা আখতার অথর্মন্ত্রী আবুল আল আবদুল মুহিতের ওই ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এক ও দুই টাকাকে অথর্মন্ত্রী ইউজলেস (অপ্রয়োজনীয়) বলেছেন। ইউজলেস অথর্মন্ত্রীর কাছে হলেও আমাদের কাছে নয়।’ বদরগঞ্জ রেলস্টেশন চত্বরের পান দোকানদার আলম মিয়া বলেন, পাঁচ টাকায় কেউ পান খাবে না। আমরা চলব কেমন করে?’ অথর্মন্ত্রীর ওই বক্তব্য শুনে পৌর শহরের ভিক্ষুকেরাও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ভিক্ষুক রইচ উদ্দিন (৭২) বলেন, ‘হামাক মানুষ ভিক (ভিক্ষা) দেয় আট আনা ও এক টাকা করি। পাঁচ টাকা করি তো কাঁয়ো দিবার নেয়। মন্ত্রী কি হামাক ভিক দেবে?’

No comments:

Post a Comment