Thursday, January 22, 2015

চরম দুশ্চিন্তায় ১৫ লাখ পরীক্ষার্থী:কালের কন্ঠ

রাজনৈতিক অস্থিরতা এসএসসি ও সমমানের প্রায় ১৫ লাখ পরীক্ষার্থীকে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তাদের সঙ্গে অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের লাগাতার অবরোধ কর্মসূচির কারণে পরীক্ষার প্রস্তুতিতে বিঘ্ন ঘটছে। অনেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। পরীক্ষা যথাসময়ে ও নির্বিঘ্নে দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়েও ব্যাপক অনিশ্চয়তা কাজ করছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। এদিকে পরীক্ষা নির্বিঘ্ন করতে
এবং প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে মাঠ পর্যায়ে আট দফা নির্দেশনা পাঠিয়েছেন শিক্ষাসচিব। নির্দেশনায় প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে কিংবা ফাঁসকৃত প্রশ্ন বহন করলে তার তাৎক্ষণিক বিচারের ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি-ভোকেশনাল পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। অবরোধ কর্মসূচির কারণে পরীক্ষা পেছানোর চিন্তাভাবনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেই বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। গত বছর ১০টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ১৪ লাখ ৩২ হাজার ৭২৭ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এ বছর প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ পরীক্ষার্থীর অংশ নেওয়ার কথা। গতবার পরীক্ষা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হলেও এর আগের বছর (২০১৩ সালে) বিরোধী দলের কর্মসূচির কারণে শিক্ষার্থীরা ব্যাপক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছিল। সেবার পাঁচ দিন পরীক্ষা পেছাতে হয়েছিল। অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে কি না- জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষা-ক্যালেন্ডার অনুসারে কয়েক বছর ধরে নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা গ্রহণ ও ফল ঘোষণা করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ে ভর্তি পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি বলেন, পরীক্ষা পেছানোর সুযোগ নেই। নির্বিঘ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠানে সব মহলের সহযোগিতা চেয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'পরীক্ষার্থীরা কেবল আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান নয়, তারা দেশের সন্তান, দেশের ভবিষ্যৎ। আশা করি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অগ্রযাত্রায় বিরূপ প্রভাব পড়ে, এমন কর্মসূচি থেকে রাজনৈতিক দলগুলো বিরত থাকবে।' তিনি পরীক্ষার্থীদের স্বার্থে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহারের জন্য বিএনপির প্রতি অনুরোধ জানান। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে পরীক্ষা গ্রহণ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যে সব পরীক্ষার্থী নিরাপদে আসা-যাওয়া করতে পারবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সবার মধ্যেই টেনশন কাজ করছে। শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) কাছে পাঠানো নির্দেশনায় এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলেছেন। প্রশ্নফাঁসের কোনো ঘটনা নজরে এলে ১৯৮০ সালের পরীক্ষা আইনে এবং ২০০৬ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইনে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। গত জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার সময় এ রকম নির্দেশনার ভিত্তিতে ফাঁসকৃত প্রশ্ন বহনের অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিচারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কা সদর উপজেলার চরবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী লুনা আক্তারের উৎকণ্ঠিত ভাষ্য : মাধ্যমিকে ভালো ফল করার জন্য দুই বছর ধরে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেছি। ওই পরিশ্রমের ফল পাওয়ার জন্য পরীক্ষায় অংশ নেব। প্রস্ততি নিয়েছি দিন-রাত এক করে। কিন্তু সব কিছুই মনে হয় ভেস্তে যাবে। কারণ সুস্থভাবে পরীক্ষা দিতে পারব কি না, তার নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছে না। ঘর থেকে বেরুলেই এখন মৃত্যুর প্রহর গুনতে হয়। সব সময় দুশ্চিন্তা- পেট্রলবোমার আঘাতে এই বুঝি প্রাণটা গেল। পরীক্ষা আদৌ দিতে পারব কি না, তা নিয়েও সন্দেহ হয়।' ক্ষোভের সঙ্গেই সে বলে, অবরোধ-হরতাল যাদের জন্য তারা করুক, তাতে অপত্তি নেই। কিন্তু আমাদের জীবনের নিরাপত্তা দিয়ে যেন পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়। সরকার ও অবরোধকারীদের কাছে আমাদের এটাই দাবি।' লুনার মতোই নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ চায় নগরীর মহাবাজ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, 'প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে গিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এ পথ হেঁটে যাওয়া সম্ভব নয়। অবরোধের মধ্যে পরীক্ষা হলে গাড়িতে চেপে যে যাব, সে সাহস পাচ্ছি না।' সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করে, আতঙ্ক দূর করে পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করার দাবি জানান তিনি। তৈয়ব আলী মুন্সী নামের এক অভিভাবক বলেন, তাঁর মেয়ে গ্রামের স্কুলে লেখাপড়া করে। সেখান থেকেই এসএসসি পরীক্ষা দেবে। তার পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালো। কিন্তু সমস্যা হলো দেশের বর্তমান পরিস্থিতি। মেয়ের পরীক্ষার কেন্দ্র তাদের বাড়ি থেকে সাত কিলোমিটার দূরে। আর ওই পথ গাড়িতে করেই যেতে হবে। কিন্তু যদি অবরোধকারীরা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে তাহলে সব স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করে তবেই পরীক্ষা নেওয়া উচিত। বরিশাল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাবুবা হোসেন বলেন, এসএসসিতে ভালো ফল করার জন্য শিক্ষার্থীরা কঠোর পরিশ্রম করেছে। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে তাদের মধ্যে আতঙ্ক ঢুকে গেছে। এ আতঙ্ক দূর করা না গেলে ভালোভাবে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না তারা। এসএসসি পরীক্ষার জন্য হলেও সংঘাত বন্ধ করা উচিত। নইলে দেশের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়াউল হক বলেন, এসএসসি পরীক্ষার সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সব কেন্দ্রে পরীক্ষার খাতাপত্র পৌঁছে গেছে। এখন পরীক্ষা অনুষ্ঠানের অপেক্ষা। তিনি জানান, অবরোধের কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে। পরীক্ষার সময় অবরোধ তুলে নেওয়া হবে বা শিথিল করা হবে বলে আশা করি। এটা অবরোধকারীদের সন্তানদেরও ভবিষ্যতের বিষয়। উৎকণ্ঠায় পরীক্ষার্থী ও অভিভাবক টানা অবরোধের কারণে চিন্তিত হয়ে পড়েছে এসএসসি পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীন রংপুর বিভাগের আট জেলায় এক লাখ ২৬ হাজার ৯৫৪ পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। পরীক্ষার জন্য রয়েছে ২৩৪টি কেন্দ্র। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে আগামীকাল কেন্দ্রসচিবদের নিয়ে মতবিনিময় করবে বোর্ড। রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরীক্ষার্থী নাজমীন আক্তার জানায়, 'দেশের পরিস্থিতির কথা ভাবলে পড়ায় মন বসে না। সব সময় একটা টেনশন কাজ করে। কারণ নির্ধারিত সময়ে নির্ধারিত পরীক্ষা না হলে ভালো পরীক্ষা হয় না।' রংপুর পুলিশ লাইন স্কুলের পরীক্ষার্থী ইমরান বলে, 'হরতাল-অবরোধের কারণে অনেক সময় আশানুরূপ ফল হয় না।' রংপুর নগরের আলতাফ হোসেন নামের একজন অভিভাবক বলেন, এমন পরিস্থিতিতে পরীক্ষার্থী-অভিভাবক, কেউ ভালো থাকতে পারে না। যত হরতাল-অবরোধই হোক না কেন, পরীক্ষার সময় বাদ দিয়ে হওয়া উচিত। নগরের বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সচিব মতলুবার রহমান বলেন, টানা অবরোধে পরীক্ষায় ব্যাঘাত তো ঘটবে। দিনাজপুর বোর্ডে মতবিনিময় সভায় সংশ্লিষ্ট সবার যোগ দেওয়াই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। বোর্ডের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রাকিবুল ইসলাম জানান, ইতিমধ্যে পরীক্ষা গ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। অবরোধের কারণে কেন্দ্রগুলোতে পরীক্ষার সরঞ্জাম পাঠাতে বিঘ্ন ঘটছে। তিনি জানান, প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাহারায় সরঞ্জাম পাঠানো হবে।' প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তে দুশ্চিন্তা দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, কিছুদিন পরই শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা। প্রস্তুতিতে ব্যস্ত পরীক্ষার্থীরা। তবে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পরীক্ষার রুটিনে বিপর্যয় ঘটলে ফল খারাপ হবে- এ দুশ্চিন্তায় ভুগছে তারা। ফলে তাদের পাঠে মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটছে। কিছুটা ফল বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন অভিভাবক ও কোচিং সেন্টারের পরিচালকরা। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তোফাজ্জুর রহমান জানান, এবার রংপুর বিভাগের আট জেলায় এক লাখ ২৬ হাজার ৯৫৪ জন ছাত্রছাত্রীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে প্রবেশপত্র ছাপার কাজ শেষ হয়েছে। প্রবেশপত্রসহ উপকরণ শিক্ষা বোর্ডে আনার জন্য পুলিশ এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সহায়তায় গতকাল বুধবার কর্তকর্তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। প্রাপ্তিসাপেক্ষে আগামীকাল পরীক্ষা কেন্দ্রে সেসব হস্তান্তর শুরু হবে। উপকরণ নিরাপদে পৌঁছানোর জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দিয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা গ্রহণের সব প্রস্তুতি নিয়েছেন তাঁরা। তবে সবকিছু নির্ভর করছে শিক্ষামন্ত্রীর সিদ্ধান্তের ওপর। দিনাজপুর শহরের জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে তিলোত্তমা বর্মণ। সহপাঠী বৃষ্টি সরকার জানাল, তিলোত্তমা মানবিক বিভাগের ছাত্রী। সে বাকপ্রতিবন্ধী। ভালো ফলের আশায় সহপাঠীদের কাছে ইশারায় পাঠ বুঝে নিতে কোচিং সেন্টারের দ্বারস্থ হয়েছে সে। সহপাঠীরা তাকে সহায়তা করে। কথা বলতে না পারলেও টিভিতে খবর দেখে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝে গেছে তিলোত্তমা। ইশারায় বান্ধবীদের কাছে সে জানতে চায়, পরীক্ষা হবে তো? নিরাপদে পরীক্ষা দেওয়া যাবে কি না সেটাও জানতে চায় সে। কিন্তু সহজ কথায় জটিল উত্তরটা তাকে দিয়ে দুশ্চিন্তায় ফেলতে চায় না সহপাঠীরা। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে অনেকে : কুমিল্লা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, টানা অবরোধের কারণে পরীক্ষা হবে কি না তা নিয়ে টেনশনে রয়েছে পরীক্ষার্থীরা। এবার কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষাথীর সংখ্যা এক লাখ ৪৬ হাজার ২৫০ জন । মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে অনেকে। অবরোধের কারণে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মডেল টেস্ট হয়নি অনেক স্কুলে। পরীক্ষার দিনগুলোতে অবরোধ থাকলে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের বিষয়ে কেউ নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সন্তানকে পরীক্ষা দিতে পাঠাবেন কি না তা নিয়ে খুবই টেনশনে ভুগছেন অভিভাবকরা। অন্যদিকে টানা অবরোধের মধ্যে পরীক্ষা গ্রহণ করার বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছে বোর্ড। পরীক্ষার্থী সালাউদ্দিন মজুমদার বলে, 'অবরোধ অব্যাহত থাকলে পরীক্ষা পেছাবে কি না তা নিয়ে টেনশনে আছি। এরই মধ্যে যদি পরীক্ষা নেওয়া হয় তাহলে আমাদের প্রস্তুতি থাকবে কম। কারণ টেনশনে পড়াশোনা ঠিকমতো হচ্ছে না।' স্কুলশিক্ষিকা কোহিনূর বেগম জানান, পরীক্ষার্থীদের মধ্যে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কাজ করছে। তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। অনেক স্কুলে মডেল টেস্ট গ্রহণে বিঘ্ন ঘটছে। অনেক স্কুল মডেল টেস্ট নিতে পারেনি। তিনি জানান, উপজেলাগুলোতে পরীক্ষা কেন্দ্র দূরের স্থানে হয়। অবরোধ চললে ঝুঁকি নিয়ে কেন্দ্রে যেতে হবে। এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক ইমাম হোসেন মজুমদার জানান, লাগাতার অবরোধ-হরতালের কারণে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা ঠিকমতো লেখাপড়ায় মনোযোগ দিতে পারছে না। আবার পরীক্ষা শুরু হলে তারা ঠিকমতো পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে পারবে কি না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। যানবাহনে যেভাবে দুর্বৃত্তরা পেট্রলবোমা ছুড়ে মারছে তাতে পরীক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক সবার মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। কুমিল্লার নওয়াব ফয়জুন্নেসা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রোকসানা মজুমদার জানান, অবরোধের মধ্যে পরীক্ষা হলে একটু সমস্যা তো হবেই। অবরোধ-হরতাল থাকলে শহরের পরীক্ষার্থীরা কোনো না কোনোভাবে স্কুলে চলে আসে। সমস্যা দূরের পরীক্ষার্থীদের নিয়ে। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ জানান, 'অবরোধ অব্যাহত থাকলে পরীক্ষা কিভাবে হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।' তিনি বলেন, 'অবরোধের কারণে পরীক্ষার্থীরা মানসিক চাপে আছে, এটা ঠিক। অভিভাবকরা নিশ্চয়তা না পেলে তাঁদের সন্তানদের কোথাও যেতে দেবেন না। আর পরীক্ষাও তো দ্বিতীয়বার নেওয়া সম্ভব নয়। মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় হয়তো বোর্ডের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলবে। সে ক্ষেত্রে আমরা কিছু পরামর্শ দেব।'    

No comments:

Post a Comment