Tuesday, January 6, 2015

পুলিশের গুলি ও টিয়ার শেলে চট্টগ্রামে ২০ দলের সমাবেশ পণ্ড:নয়াদিগন্ত

সমাবেশ করার অনুমতি দিয়ে আবার মুহুর্মুহু গুলি, রাবার বুলেট আর টিয়ার শেল মেরে পুলিশই পণ্ড করে দিয়েছে চট্টগ্রামে ২০ দলীয় জোটের সমাবেশ। গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলে নগরীর কাজীর দেউরীর বিএনপি কার্যালয়ের সম্মুখে ব্যাপক লোকসমাগমে আয়োজিত এ সমাবেশ পণ্ড করতে পুলিশ শত শত রাউন্ড টিয়ার শেল, শর্টগানের গুলি ও রাবার বুলেট ছুড়ে। এতে নয়া দিগন্তের ফটোসাংবাদিকসহ অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন। আহতদের মধ্যে পুলিশ সদস্যও রয়েছ
েন। পুলিশ সমাবেশ স্থলের আশপাশ থেকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও উত্তর জেলার আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরী এবং দণি জেলা বিএনপির সহসভাপতি এনামূল হকসহ দুই শতাধিক জনকে আটক করে নিয়ে যায়। এ সময় অধিকাংশকে নির্দয়ভাবে পেটাতে দেখা যায়।  প্রত্যদর্শীরা জানান, ২০ দলের সমাবেশ চলাকালে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা ‘গণতন্ত্র’ লেখা একটি প্রতীকী কফিন নিয়ে কাজীর দেউড়ী মোড়ে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ ২০ দলের নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা শুরু করে। এ সময় উভয়পে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ইটপাটকেল নিপে শুরু হয়। তবে সমাবেশের কার্যক্রমও অব্যাহত থাকে। একপর্যায়ে পুলিশ বেশ মারমুখো ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। ২০ দলের নেতাকর্মীদের ল্য করে উপর্যুপরি গুলি, রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুড়ে মারে। সংঘর্ষ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। পুরো এলাকা টিয়ার শেলের ঝাঝালো গন্ধ ও ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে আসকার দীঘি আলমাস মোড় থেকে নেভাল এভিনিউ পর্যন্ত। ২০ দলের নেতাকর্মীদের প্রতিরোধের এক পর্যায়ে পুলিশ পিছু হটে সার্কিট হাউজের দিকে চলে যায়। এ সময় নসিমন ভবনের অদূরে একটি মিনি ট্রাকে আগুন দেয় বিুব্ধ নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া বেশ কিছু টায়ার জড়ো করে সড়কে আগুন দেয়া হয়। কিন্তু অল্পণ পরেই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। একটি রায়ট কার সেখানে হাজির হয়ে গুলি বর্ষণ শুরু করলে ২০ দলের নেতাকর্মীরাও আস্তে আস্তে নিরাপদে সরে পড়ে। এ সময় পুলিশ আরো মারমুখো হয়ে এলোপাতাড়ি গুলি, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়তে থাকে। প্রধান সড়ক ছাড়িয়ে বিভিন্ন অলিগলিতে ঢুকে পুলিশ টিয়ার শেল ছুড়ে মারে। ফলে বাসাবাড়িতে অবস্থানকারী নারী-শিশুরাও ঝাঝালো গন্ধে আক্রান্ত হয়। বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে আতঙ্কগ্রস্ত মানুষের কান্নার শব্দও ভেসে আসে।  ২০ দলের বেশ ক’জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়। আহতদের বেশির ভাগই গুলিবিদ্ধ বলেও সূত্র জানায়। এ ছাড়া কয়েকজন পুলিশ সদস্যও ইটের আঘাতে আহত হন। নয়া দিগন্তের আলোকচিত্রী আখতার হোসাইনও সংঘর্ষের সময় আহত হন এবং তার ক্যামেরা সামান্য তিগ্রস্ত হয়।   এর আগে নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনের সামনে দু’টি ট্রাক দিয়ে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে শুরু হয় সমাবেশের কার্যক্রম।  বেলা আড়াইটার দিকে শুরু হওয়া সমাবেশে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, দণি জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরী, সাবেক হুইপ সৈয়দ ওয়াহিদুল হক, মহানগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি অধ্য মো: নূরুল আমিন, নগর বিএনপির সহসভাপতি শামসুল আলম ও আবু সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক ডা: শাহাদাত হোসেন, বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান শামীম উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীদের বিােভ  ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলে ২০ দলীয় জোট সমর্থিত আইনজীবী ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রামের উদ্যোগে নতুন আদালত ভবন চত্বরে গতকাল সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মকবুল কাদের চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ সোলায়মানের সঞ্চালনায় এক বিােভ সভা অনুষ্ঠিত হয়।  সভা শেষে এক বিােভ মিছিল আদালত অঙ্গন প্রদণি করে সোনালী ব্যাংক চত্বরে এসে শেষ হয়। সভায় আইনজীবী নেতৃবৃন্দ বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখা এবং সারা দেশকে অবরুদ্ধ করে রাখার তীব্র নিন্দা জানান। তারা অবৈধ সংসদ বাতিল করে নির্দলীয় নিরপে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানান। পটিয়া-চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, চট্টগ্রামের পটিয়ায় ২০ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে পুলিশের বাধা উপো করে বিােভ সমাবেশ করেছে উপজেলা বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট। গতকাল উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এ বিােভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিােভ সমাবেশে উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার নেতাকর্মী এতে অংশ গ্রহণ করে। বিােভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পৌর সভা বিএনপির সভাপতি নুরুল ইসলাম।

No comments:

Post a Comment