Monday, January 19, 2015

শিবগঞ্জে এখনো আতঙ্ক:নয়াদিগন্ত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানের পর এখনো আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন এলাকাবাসী। পুলিশি আতঙ্কে ঘুমাতে পারেন না তারা। অনেকেই প্রচণ্ড শীতের মধ্যে পাশের আমবাগান, খেলার মাঠ বা অন্য কোনো নিরাপদ আশ্রয়ে রাত কাটাচ্ছেন। তিন দিন ধরে এমনই অবস্থা বিরাজ করছে শিবগঞ্জের গ্রামে গ্রামে।  গত শনিবার রাতে ধোবরা এলাকায় তিনজন গ্রাম্য চিকিৎসককে তাদের চেম্বার থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার পর এ ভীতি প্রকট আকার ধারণ ক
রেছে। এলাকার কেউ এখন আর নিজেকে নিরাপদ মনে করছেন না। বন্ধ হয়ে গেছে বেশির ভাগ দোকানপাট ও ব্যবসাবাণিজ্য। গত বৃহস্পতিবার কানসাট এলাকার পারদিলালপুর, ধোবরা, নয় রশিয়া, শিয়াল মারা, বালিয়াদীঘি, শিবগঞ্জের রসুলপুর, মোহদিপুর এলাকায় যৌথবাহিনীর অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এখনো স্বাভাবিক হতে পারেনি। রসুলপুরের ইয়াসিন আলীর নষ্ট হয়ে যাওয়া ফ্রিজ, টেলিভিশন, ভাঙা সোকেশ এখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বাড়িতে। মনিমুলের পোড়া মোটরসাইকেলটি ধ্বংসের সাক্ষী হয়ে এখনো পড়ে রয়েছে বাড়ির আঙিনায়। ধোবরা পার দিলালপুরের অধ্যাপক আবদুল মকিম, অধ্যাপক দুরুল হোদা, লাল মোহাম্মদ মেম্বার, আতাউর রহমান, জারদিস, শওকত আলী, শাহজাহান তারা প্রত্যেকেই বাড়িঘর ও আসবাবপত্র ভাঙচুরের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে দুরুল হোদা ও আবদুল মকিমের বিছানাপত্র বাইরে এনে আগুন দিয়ে দেয়া হয় বলে তারা অভিযোগ করেন।  একটি সূত্র জানায়, যৌথবাহিনীর অভিযানের সময় শিবগঞ্জের রসুলপুর, মহদিপুর, চণ্ডিপুর ও কানসাটের পারদিলালপুর এলাকার অনন্ত ৪৫টি বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিকদের বেশির ভাগই বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানা গেছে। আবার রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নন এমন দু-একজনের বাড়িও আক্রান্ত হয়েছে। অভিযানের পর থেকেই শিবগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপক আতঙ্ক। পরিবার-পরিজন নিয়ে এলাকা ছেড়েছেন অনেকেই। নতুন করে অভিযান শুরু হতে পারে এমন আতঙ্ক পেয়ে বসেছে এই অঞ্চলের মানুষকে।  এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও শিবগঞ্জের সাবেক এমপি অধ্যাপক শাহজাহান মিয়া জানান, শিবগঞ্জের মানুষ এখন দিশেহারা। প্রতিদিনই সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের পুলিশ-বিজিবি রাস্তাঘাট থেকে গ্রেফতার করায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্কাবস্থা চরম আকার ধারণ করেছে। এ দিকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের জন্য যৌথবাহিনীকে দায়ী করলেও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার বশির আহম্মেদ। সাংবাদিকদের তিনি জানান, অভিযানের সময় তিনি নিজেই উপস্থিত ছিলেন। তাই কারো বাড়িতে অগ্নিসংযোগ বা ভাঙচুরের কোনো সুযোগ ছিল না।

No comments:

Post a Comment