মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, আন্তঃজেলা বাস সার্ভিস চলাচল স্বাভাবিক করতে পারলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে। বিশেষ করে ঢাকার সাথে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো অস্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে। তারা জানান, লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। কিছুটা সমস্যা থাকলেও ট্রেন চলছে। দূরপাল্লার বাস চলাচল স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিসভার সদস্যরা জানান, এ ব্যাপারে মঙ্গলবার আন্তঃমন্ত্রণালয়
বৈঠক ডাকা হয়েছে। গতকাল সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে অনির্ধারিত আলোচনায় দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় তারা এ তথ্য জানান। মন্ত্রিসভা সূত্র জানায়, আলোচনায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আনসার সদস্যদের প্রহরায় যানবাহন চলাচল বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মন্ত্রিসভার এক সদস্য জানান, বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাসগুলোর কিছু মালিক বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত। তাদেরও দূরপাল্লার বাস চালু করার অনুরোধ জানানো হবে। বলা হবে নিরাপত্তা দেবে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মোবাইল ফোনালাপ নিয়ে আলোচনা করেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য জানান, আলোচনায় প্রায় সব মন্ত্রি-প্রতিমন্ত্রী অংশ নেন। বেগম খালেদা জিয়ার মোবাইল ফোনালাপে নাশকতার নির্দেশ রয়েছে বলে মনে করেন তারা। নাশকতার নির্দেশের জন্য সরকারের মন্ত্রীদের কেউ কেউ বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, চার বছর আগের খালেদা জিয়ার কয়েকটি ফোনালাপ ইউটিউবে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বাংলা লিকস নামের একটি একাউন্ট থেকে আপলোড করা এসব কথোপকথন সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এসব ফোনালাপের কয়েকটি গতকালের মন্ত্রিসভার বৈঠকে শোনানো হয়। বৈঠক শেষে একাধিক মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার এ ফোনালাপ শোনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সত্যি সত্যি, উনিই তো নাশকতার নির্দেশ দিয়েছেন। যাদের সাথে খালেদা জিয়া ফোনালাপ করেছেন তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা উচিত এবং গ্রেফতার করলে সব কিছু বেরিয়ে আসবে বলে মত দিয়েছেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। তারা বলেন, সব কিছু ফাইন্ড আউট করা উচিত। এ সংক্রান্ত আরো নির্দেশনামূলক আলাপ আছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখা উচিত। তারা বলেছেন, ফোনালাপের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে নির্দেশ দিতে শোনা যাচ্ছে। তাতে মনে হচ্ছে, তিনি কোনো কিছু ঘটানোর নির্দেশ দিয়েছেন। দলের কারো কারো কারণে নির্দেশ পালনে বাধা আসায় খালেদা জিয়া ুব্ধ হয়ে তাদের সরিয়ে দেয়ার কথা বলেছেন বলেও ফোনালাপে শোনা যায়। ওই দিকে মন্ত্রিসভায় নীতিগতভাবে জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা-২০১৫ এর খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়েছে। জাতির উন্নয়নের ল্য অর্জনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা (আইসিটি) আরো কার্যকর করতে আইসিটি সেক্টরের আরো উন্নয়ন করাই এই নীতিমালার উদ্দেশ্য। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম মোশাররফ হোসেইন ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, আইসিটি নীতি-২০০৯ এর হালনাগাদ করা হয়েছে। এর আগে এ নীতিমালার খসড়া সম্পর্কে সব স্টেক হোল্ডার, মন্ত্রিবর্গ, বিশেষজ্ঞরা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের মতামত নেয়া হয়। তিনি জানান, বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর করতে সরকারের ভিশন বাস্তবায়নে আইসিটির কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে এই নীতিতে একটি দিকনির্দেশনা থাকবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইসিটি নীতির প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছেÑ সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং সরকারি ও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনসেবা নিশ্চিত করা এবং ২০২১ সাল ও ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির উন্নয়ন ল্যমাত্রা অর্জন করা। বৈঠকে গত ১৭ থেকে ২৪ আগস্টে তথ্যমন্ত্রীর মালয়েশিয়ায় সরকারি সফর সম্পর্কে অবহিত করা হয়। এ ছাড়া বৈঠকে তথ্যমন্ত্রীদের ইসলামী সম্মেলনের দশম অধিবেশনে যোগদান শেষে গত ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত তেহরান সফর সম্পর্কে অবহিত করা হয়।
No comments:
Post a Comment