Tuesday, February 3, 2015

রেলে আবার নাশকতা:প্রথম অালো

হরতাল ও অবরোধে আবারও লক্ষ্যবস্তু করা হলো রেলযাত্রীদের। লাগাতার অবরোধ ও ৭২ ঘণ্টা হরতালের দ্বিতীয় দিন গতকাল সোমবার গাজীপুরে চলন্ত ট্রেনে পেট্রলবোমা হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। দগ্ধ ও আহত হয়েছেন পাঁচজন। নাশকতা চালানো হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনেও। শতাধিক প্যান্ডেল ক্লিপ খুলে ফেলায় লাইনচ্যুত হয় ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস ট্রেন। এতে আহত হন পাঁচজন। এর আগের দিনই ময়মনসিংহে আন্তনগর যমুনা এক্সপ্রেস ও ব্রাহ
্মণবাড়িয়ায় আন্তনগর সুবর্ণ এক্সপ্রেসে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে চলতি হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে নয় দফা ট্রেনে নাশকতা চালানো হলো। গতকাল রাজনৈতিক সহিংসতার জেরে মারা গেছেন আরও দুজন। তাঁদের মধ্যে সিরাজগঞ্জে মারা যান পুলিশের গুলিতে আহত জামায়াতে ইসলামীর নেতা ছাইদুর রহমান। প্রতিবাদে কাল বুধবার জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে দলটি। আর লক্ষ্মীপুরে পেট্রলবোমা হামলায় দগ্ধ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মারা গেছেন অটোরিকশার যাত্রী লিটন হোসেন। এ ছাড়া বগুড়া ও রাজশাহীতে চারটি ট্রাকে পেট্রলবোমা হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ব্যবসায়ীসহ দগ্ধ হয়েছেন ছয়জন। রাজশাহীতে আরও একটি যাত্রীবাহী বাস ও দুই ট্রাকে বোমা হামলা চালানো হয়। লক্ষ্মীপুরে মালবাহী পিকআপে পেট্রলবোমায় চালকসহ দগ্ধ হয়েছেন তিনজন। গাইবান্ধায় একটি বাসে আগুন ও দুটি ট্রাক ভাঙচুর, নওগাঁয় পাঁচটি ট্রাক এবং কক্সবাজারে দুটি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করা হয়েছে। মাইক্রোবাসে হামলায় আহত হন মা-মেয়ে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের টানা অবরোধ কর্মসূচির গতকাল ছিল ২৮তম দিন। এদিন ১৫টি জেলার অন্তত ২৪টি স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। গত রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২১টি গাড়িতে করা হয় পেট্রলবোমা হামলা ও অগ্নিসংযোগ। ভাঙচুর করা হয় অন্তত ২১টি। নাশকতার আশঙ্কা, সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগ, মামলা ও অন্যান্য ঘটনায় আটক করা হয় ১৮৪ জনকে। ৫ জানুয়ারির ‘একতরফা’ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে গত ৬ জানুয়ারি থেকে টানা অবরোধ চলছে ২০ দলের ডাকে। তবে এর দুই দিন আগেই সহিংসতার শুরু। সহিংসতায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪৬ জন। আগুন দেওয়া হয়েছে ৪১৬টি যানবাহনে এবং ভাঙচুর করা হয় আরও ৪৭০টি। গাজীপুরে ট্রেনে পেট্রলবোমা: গাজীপুরে গতকাল বিকেলে জামালপুর কমিউটার এক্সপ্রেস ট্রেনে পেট্রলবোমা ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে ট্রেনের অন্তত পাঁচজন যাত্রী গুরুতর আহত হন। শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনের দক্ষিণ পাশে আউট সিগন্যালের কাছে ট্রেনে এ হামলা চালানো হয়। ট্রেনটি ঢাকা থেকে জামালপুরে যাচ্ছিল। আহত ব্যক্তিরা হলেন ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার কাদিরপুর গ্রামের হোসেন মিয়া (৬০), ভালুকা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মচারী আফাজ উদ্দিন (৫০), শ্রীপুর পৌর শহরের ভাংনাহাটি গ্রামের চাল ব্যবসায়ী কাজিম উদ্দিন (৪৫), শান্তিবাগ এলাকার দিনমজুর মফিজ উদ্দিন (৬০) ও আবুল কাশেম (৪০)। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে কমিউটার এক্সপ্রেস ট্রেনটি জামালপুরে যাচ্ছিল। ট্রেনটি শ্রীপুর রেলস্টেশনে পৌঁছার আগে আউট সিগন্যালের কাছে ফরেস্ট অফিসের কাছে এলে পাশের জঙ্গল থেকে ইঞ্জিনে দুটি পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে কয়েক তরুণ। একটি বিস্ফোরিত হয়ে হোসেন ও কাজিম উদ্দিন তাৎক্ষণিকভাবে দগ্ধ হন। অপর তিনজন আহত হন আতঙ্কে লাফিয়ে পড়ার সময়। পরে ট্রেনটি স্টেশনে পৌঁছালে আহত ব্যক্তিদের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আহত দুজনের অবস্থা গুরুতর। এ ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। তবে দুটি পেট্রলবোমার একটির আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। চট্টগ্রামে ট্রেন লাইনচ্যুত: রেললাইনের প্যান্ডেল ক্লিপ খুলে নেওয়ায় গতকাল ভোররাত সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া এলাকায় ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন ও দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এ ঘটনায় ট্রেনচালক ইউসুফ ও তাঁর সহকারী কামালসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন। প্রথম দুজনকে রেলওয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে এ নাশকতার ঘটনার পর সাড়ে ১১ ঘণ্টা চট্টগ্রামের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। এ সময় বাতিল করা হয় ঢাকা ও চট্টগ্রামের ছয়টি ট্রেনের যাত্রা। দুর্ঘটনা তদন্তে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা ফিরোজ ইফতেখারকে প্রধান করে গঠন করা হয়েছে চার সদস্যের কমিটি। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ট্রেনটিতে পাঁচটি বগি ছিল। দুর্ঘটনায় ইঞ্জিন ও একটি বগি নির্ধারিত লাইনের পাশে ঢাকামুখী লাইনের ওপর গিয়ে পড়ে। এতে দুটি লাইনই অচল হয়ে পড়লে সীতাকুণ্ড স্টেশনে ঢাকামুখী তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস ও মিরসরাইয়ের চিনকি আস্তানায় চট্টগ্রাম অভিমুখী তূর্ণা নিশীথা ও চট্টগ্রাম মেইল আটকা পড়ে। এ ছাড়া বাতিল করা হয় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী মহানগর প্রভাতী, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, গোধূলী ও চাঁদপুরগামী সাগরিকা এক্সপ্রেস এবং ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও মহানগর প্রভাতীর যাত্রা। চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মুরাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্যান্ডেল ক্লিপ খুলে ফেলায় ট্রেনটি ওই স্থানে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে রেললাইনটি সরে যায়। ইঞ্জিনটি ছিটকে পাশে অপর রেললাইনের ওপর পড়ে। লাইনচ্যুত হয় একটি বগি। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালনে অবহেলা করাতেই এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন তিনি। দুর্বৃত্তরা ১২০টিরও বেশি প্যান্ডেল ক্লিপ খুলে ফেলেছিল। সকাল সাড়ে আটটার দিকে চট্টগ্রাম থেকে একটি উদ্ধারকারী ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে। কিন্তু উদ্ধারকারী ট্রেনটি ইঞ্জিন ও বগি টেনে তুলতে পারেনি। পরে আরও একটি উদ্ধারকারী ট্রেন গিয়ে উদ্ধারকাজ চালায়। উদ্ধারকাজ শেষে বেলা তিনটার দিকে একটি লাইন সচল হলে ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু হয়। আরও দুজনের মৃত্যু: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বাঁখুয়ায় গত রোববার বিকেলে পুলিশের গুলিতে আহত জামায়াতে ইসলামীর নেতা ছাইদুর রহমান মারা গেছেন। ওই দিন দিবাগত রাত দেড়টায় তিনি সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ছাইদুর উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়ন জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক ও ঢেউটিন ব্যবসায়ী ছিলেন। ছাইদুর রহমানের পরিবার জানায়, রোববার জোহরের নামাজের পর এক অনুষ্ঠানে খাবার খাচ্ছিলেন ছাইদুর রহমান। এ সময় পুলিশ অনুষ্ঠানস্থল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। মাগরিবের নামাজের আগে এক সাংবাদিক মুঠোফোনে তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি জানান। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল হুদা দাবি করেন, পুলিশ হরতালকারীদের গ্রেপ্তারে রোববার গ্রামে অভিযান চালালে হরতালকারীরা পুলিশের ওপর আক্রমণ চালায়। এ সময় পুলিশ গুলি চালালে ছাইদুর পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় নাশকতা, গাড়ি ভাঙচুর, পুলিশের কাজে বাধাদানসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এদিকে লক্ষ্মীপুর সরকারি মহিলা কলেজ এলাকায় রোববার রাতে দুর্বৃত্তদের পেট্রলবোমা হামলায় গুরুতর আহত অটোরিকশার যাত্রী লিটন হোসেন ওরফে নয়ন মারা গেছেন। গতকাল ভোরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। লিটন হোসেনের বাড়ি নাটোরে। তিনি তিন মাস ধরে লক্ষ্মীপুর সদরের দক্ষিণ মজুপুর গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে থাকছিলেন। মজুচৌধুরীর হাট বালুমহালে কাজ করতেন তিনি। রাজধানীতে পাঁচটি বাসে আগুন : রাজধানীতে পাঁচটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল ভোরে গাবতলীর বাগবাড়িতে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এতে বাসটি পুড়ে যায়। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে পোস্তগোলায় আরেকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে আধা ঘণ্টায় রাজধানীর গুলশান ও মিরপুরে তিনটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সাতটা ৩৪ মিনিটে গুলশানে একটি বাস, পৌনে আটটার দিকে মিরপুর বাংলা কলেজের সামনে আরেকটি বাস ও সাতটা ৫৩ মিনিটে মিরপুর ১১ নম্বরে আরেকটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। গতকাল রাত নয়টার দিকে বুয়েটের পেছনের ফটকে ককটেল বিস্ফোরণে শহীদুজ্জামান (৩০) নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা দুই পায়ে স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়েছেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ককটেল বিস্ফোরণের সময় মাইনউদ্দীন (২৪) নামে এক তরুণকে হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ। বিস্ফোরণে মাইনউদ্দীন ডান হাতে আঘাত পেয়েছেন। ঢাকার বাইরের আরও চিত্র: রাজশাহী নগরের নগরপাড়া ও ছোটবনগ্রাম এলাকায় গত রাতে দুটি ট্রাকে পেট্রলবোমা ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে দুই চালকসহ তিনজন দগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিরা হলেন পবা উপজেলার ট্রাকচালক সাইদুল ইসলাম ও তাঁর সহকারী শহিদুল ইসলাম এবং রাজশাহী নগরের ট্রাকচালক ফারুখ হোসেন। এর আগে রোববার রাত ১১টার দিকে কাটাখালী ও পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে ঢাকাগামী আরপি এলিগেন্স নামের যাত্রীবাহী একটি বাস এবং দুটি ট্রাকে পেট্রলবোমা হামলা চালানো হয়। হামলায় ট্রাক দুটি পুড়ে গেছে এবং আহত হয়েছেন বাসচালক আবুল হোসেন (৪০) ও একজন যাত্রী। ফেনী শহরের সেন্ট্রাল হাইস্কুলের সামনে গত রাত আটটার দিকে পৌরসভার মেয়রের ব্যক্তিগত গাড়িতে ককটেল হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে গাড়িচালক সাইফুল ইসলাম আহত হন। পৌরসভার মেয়র ও জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আলাউদ্দিন এ সময় গাড়িতে ছিলেন না। লক্ষ্মীপুর-ঢাকা মহাসড়কের জেলা কারাগার এলাকায় গত রাত আটটার দিকে মালবাহী পিকআপে দুর্বৃত্তদের পেট্রলবোমা হামলায় চালকসহ তিনজন দগ্ধ হয়েছেন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। আহত চালক মো. কামালের অবস্থা আশঙ্কাজনক। লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে গত রাত সাড়ে নয়টায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। বগুড়ায় রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের গোকুল ও নিশিন্দারা এলাকায় আলুবোঝাই দুটি ট্রাকে পেট্রলবোমা হামলা ও আগুনে দেওয়ার ঘটনায় দগ্ধ হয়েছেন তিনজন। তাঁরা হলেন ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম (৪৫), চালক সবুজ মিয়া (৪২) ও তাঁর সহকারী সুরুজ মিয়া (৩৫)। তিনজনকেই বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। গোকুলে রোববার রাতে ও নিশিন্দারায় এর আগের দিন রাতে হামলার ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ ষোলশহর এলাকায় বেবী সুপার মার্কেটের সামনে একটি টেম্পোতে ককটেল হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তারা আরও কয়েকটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে। এ ছাড়া হাটহাজারীর ফতেয়াবাদে একটি সবজিবাহী মিনি ট্রাকে অগ্নিসংযোগ ও কয়েকটি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট টার্মিনাল এলাকায় রোববার দিবাগত রাত দুইটার দিকে রাজমহল নামের একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। মৌলভীবাজারের জুড়ী-কুলাউড়া সড়কের ভূঁয়াইবাজার এলাকায় রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ডিজেলবাহী একটি পিকআপ ভ্যান ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। কক্সবাজারের চকরিয়ায় গতকাল বিকেলে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুটি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় কাচ ভেঙে উপজেলার মাইজকাকারা গ্রামের আলমগীরের স্ত্রী রোকেয়া বেগম (২৯) ও মেয়ে তাসকিনা (৪) আহত হন। গাইবান্ধায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পলাশবাড়ীতে রাতে গরু বহনকারী একটি ট্রাকে ককটেল হামলায় চালক ও তিনজন ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। আহত ব্যবসায়ীরা হলেন সিরাজগঞ্জের আবুল হোসেন, মোজাম্মেল হক ও বাছের আলী। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া-বেলকুচি সড়কে গতকাল তিনটি অটোরিকশা ভাঙচুর করেছে পিকেটাররা। একই দিন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাইতানতলা বাজার এলাকায় দুটি ট্রাক ভাঙচুর করা হয়। এর আগের রাতে গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কে রূপা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা ছোড়া হয়। নওগাঁ শহরের পুলিশ লাইনের সামনে গতকাল দুপুরে চারটি ও সুপারিপট্টিতে একটি পণ্যবোঝাই ট্রাক ভাঙচুর করেছে হরতাল-সমর্থকেরা। সিলেট শহরের চৌহাট্টা এলাকার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের (সদর হাসপাতাল) সামনে এবং বারুতখানা এলাকায় গত রাতে ছয়টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। চৌহাট্টায় ককটেলে দৈনিক সিলেটের ডাক পত্রিকার প্রধান আলোকচিত্রী আবদুল বাতিন ফয়সল আহত হন। {প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা}

No comments:

Post a Comment