Tuesday, March 31, 2015

নাছিরের চেয়ে মনজুরের আয় কম, সম্পদ বেশি:যুগান্তর

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আ জ ম নাছিরের বছরে আয় ৩ কোটি ৬২ লাখ ৩২ হাজার ৭৪৪ টাকা। তিনি ১১ কোটি ৯৯ লাখ ৫১ হাজার ১৫২ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিক। তার নামে ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৪ টাকার ঋণ রয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত এম মনজুর আলমের বছরে আয় ১ কোটি ৯২ লাখ ৭৫ হাজার ৯১৬ টাকা। তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মূল্য ৪০ কোটি ৮৬ লাখ ৪৯ হাজার ৫৫৯ টাকা। সাবেক এ মেয়রের
নামে ঋণ রয়েছে ১ কোটি ২২ লাখ টাকা। রোববার নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে জমা দেয়া হলফনামায় চট্টগ্রামের মেয়র পদ প্রার্থী দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বির এসব তথ্য পাওয়া গেছে। হলফনামা অনুযায়ী, মনজুর আলমের চেয়ে তার স্ত্রীর সম্পদ কম হলেও নাছিরের চেয়ে তার স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ বেশি। অন্যদিকে নাছিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মামলা হলেও এসব মামলায় তিনি খালাস পেয়েছেন। মনজুর আলমের বিরুদ্ধে বর্তমানে কোনো মামলা নেই। এম মনজুর আলম : হলফনামায় মনজুর আলমের আয়ের উৎস হিসেবে শিক্ষা খাত, চিকিৎসা, আইন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে ১ কোটি ১৪ লাখ ৮৯ হাজার ৫১৫ টাকা। মেয়র হিসেবে সম্মানী পেয়েছেন বছরে ৮ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। এছাড়া মূলধনী লাভ ১১ লাখ ৮৬ হাজার ও লিজ রেন্ট ১১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৪৪, বাড়ি-অ্যাপার্টমেন্ট ও দোকান ভাড়া বাবদ আয় ৩৫ লাখ ৭ হাজার ৬ টাকা। সব মিলিয়ে বছরে তার আয় দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৯২ লাখ ৭৫ হাজার ৯১৬ টাকা। মনজুর আলমের সম্পদের পরিমাণ ৪০ কোটি ৮৬ লাখ ৪৯ হাজার ৫৫৯ টাকা। এর মধ্যে স্থাবর সম্পদ হচ্ছে ৮ কোটি ৬০ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯ টাকার। যেখানে তার নিজের নামে রয়েছে ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৩৪ হাজার ৮১৮ টাকা ও স্ত্রীর নামে ১ কোটি ৮৪ লাখ ১২ হাজার ২৭১ টাকা। মনজুর আলমের অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ৩২ কোটি ২৬ লাখ ২ হাজার ৪৭০ টাকার। এর মধ্যে ৩০ কোটি ১৮ লাখ ৮৩ হাজার ১২৮ টাকার সম্পদ রয়েছে নিজ নামে ও ২ কোটি ৭ লাখ ১৯ হাজার ৩৪২ টাকার সম্পদ তার স্ত্রীর নামে। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে নগদ রয়েছে ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩ হাজার ৬৪৫ টাকা ও স্ত্রীর নামে ১৯ লাখ ৮০ হাজার ৬৪০ টাকা। ১৯৫৩ সালের ২ আগস্ট জন্ম নেয়া বিএনপি সমর্থিত চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের ব্যানারে মেয়র প্রার্থী এম মনজুর আলমের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে বিচারাধীন কোনো মামলা নেই। বিদ্যুৎ আইনের ৩৯ ধারায় একটি মামলা ছিল, যা প্রত্যাহার হয়ে গেছে। এ ছাড়া দুর্নীতি দমন আইনের ২০০৪-এর ধারায় করা মামলাটি থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আ জ ম নাছির উদ্দিন : আ জ ম নাছির উদ্দিন ১১ কোটি ৯৯ লাখ ৫১ হাজার ১৫২ টাকার সম্পদের মালিক। তার নামে ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৪ টাকার ঋণ রয়েছে। বছরে তার আয় ৩ কোটি ৬২ লাখ ৩২ হাজার ৭৪৪ টাকা। তার নামে তিনটি মামলা থাকলেও দুটি মামলা থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়। একটি মামলা থেকে দেয়া হয়েছে অব্যাহতি। বর্তমানে তার নামে কোতোয়ালি থানায় করা একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি জন্ম নেয়া আ জ ম নাছিরের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ পাস। তার বার্ষিক আয় ৩ কোটি ৬২ লাখ ৩২ হাজার ৭৪৪ টাকা। ব্যবসা থেকেই সবচেয়ে বেশি (৩ কোটি ২০ লাখ) আয় হয় তার। স্থাবর সম্পদের কোটায় সম্পদের কথা উল্লেখ থাকলেও তা টাকায় রূপান্তর করা হয়নি। ১১ কোটি ৯৯ লাখ ৫১ হাজার ১৫২ টাকার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে রয়েছে ১১ কোটি ৫০ লাখ ৭৯ হাজার ২৬০ টাকার সম্পদ এবং স্ত্রীর নামে রয়েছে ৪৮ লাখ ৭১ হাজার ৮৯২ টাকার সম্পদ। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নগদ টাকা রয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার ২৬৯ টাকা, এর মধ্যে নিজ নামে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৬৯০ টাকা ও স্ত্রীর নামে ৪৫ হাজার ৫৭৯ টাকা। এ ছাড়া ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৪ টাকার ব্যাংক ঋণের মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক লালদীঘি শাখায় ৮ কোটি ৪৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪৯৮ টাকা, এক্সিম ব্যাংক বহদ্দারহাট শাখায় ডিপিএসের বিপরীতে ১২ লাখ ৯১ হাজার ১৪৩ টাকা ও মেটলাইফ অ্যালিকো ইন্স্যুরেন্সের বিপরীতে ৭ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩ টাকা ঋণ রয়েছে তার। স্ত্রীদের টাকা-সম্পদ : মনজুর আলমের স্ত্রীর নামে নগদে রয়েছে ১৯ লাখ ৮০ হাজার ৬৪০ টাকা। সাবেক এ মেয়রের স্ত্রীর নামে রয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ ২৫ হাজার ৭০২ টাকার বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার। হলফনামা থেকে আরও জানা গেছে, স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নিজের নামে কোনো কৃষি জমি নেই মনজুর আলমের। কিন্তু তার স্ত্রীর নামে ৪ লাখ ৮৪ হাজার টাকার কৃষি জমি রয়েছে। সাবেক মেয়রের নামে অকৃষি জমি রয়েছে ৬ কোটি ৫৮ লাখ ১৬ হাজার ৫৪৩ টাকার, স্ত্রীর নামে রয়েছে ১ কোটি ৭৯ লাখ ২৮ হাজার ৭১ টাকার অকৃষি জমি এবং ১৮ লাখ ১৮ হাজার ২৭৫ টাকার অন্যান্য স্থাবর সম্পত্তি। আ জ ম নাছিরের স্ত্রীর হাতে নগদে আছে ৪৫ হাজার ৫৭৯ টাকা। ব্যাংকে জমা আছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৯৯৩ টাকা। স্ত্রীর নামে কোম্পানির শেয়ার আছে ৩৪ লাখ টাকার। নিজের নামে কোনো এফডিআর না থাকলেও স্ত্রীর নামে ১২ লাখ ৫৪ হাজার ৩২০ টাকার এফডিআর রয়েছে। ৪০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী রয়েছে স্ত্রীর নামে।  

No comments:

Post a Comment