যৌক্তিক পরিণতিতে না পৌঁছা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। চলমান সংকটকে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, এর স্রষ্টা শেখ হাসিনা নিজেই। দেশের বিরাজমান সংকট সমাধানে সংলাপসহ তিন দফা প্রস্তাব দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, তারা (সরকার) সমঝোতার পথে ফিরে আসবে। আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান সংকট দ্রুত নিরসনের উদ্যোগ নেবে। কারণ সংকট সমাধা
নের চাবিকাঠি ক্ষমতাসীনদেরই হাতে। তিনি বলেন, জনগণের স্বাধীনতা এবং মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হলে আমাদের জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। সংকট নিরসনের মাধ্যমে সরকার সেই কাঙ্ক্ষিত জাতীয় ঐক্যের পথ খুলে দিতে পারে। তাহলেই আমরা সংকটমুক্ত হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে ৪৫তম স্বাধীনতা দিবস পালন করতে পারব। অবরোধের ৬৬তম দিনে শুক্রবার বিকালে গুলশানের নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়া বলেন, আলোচনার ভিত্তি হিসেবে আমরা সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তারা সঙ্গে সঙ্গে তা নাকচ করে দেয়। এই পরিস্থিতিতে সংকট নিরসন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং ভোটাধিকারসহ জনগণের সব অধিকার ফিরিয়ে আনতে আন্দোলন ছাড়া আর কোনো পথ আমাদের সামনে খোলা রাখা হয়নি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়েছি। চলমান আন্দোলনে দল-মত-পেশা-শ্রেণী নির্বিশেষে সব ব্যক্তি ও শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন। আন্দোলনের কারণে জনগণের কষ্ট হচ্ছে। সাময়িক এ কষ্ট সহ্য করার জন্য তিনি জনগণের প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, সংসদ চলছে। এই সরকার সংসদে সংবিধান সংশোধন করে সংকট সমাধানের পথ তৈরি করতে পারে। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘যারা এখনও নিষ্ক্রিয় আছেন তারা সক্রিয় হোন। চলমান আন্দোলনে পেট্রলবোমাসহ সহিংসতার জন্য সরকারকে দায়ী করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ও ২০ দল নিরপরাধ মানুষকে হত্যার মতো ভয়ংকর রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের সময় বলা হয়েছিল, সংধিানের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্যই এই নির্বাচন। তাদের কথা শুনে আন্দোলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল না বলেও তিনি স্বীকার করেন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, জীবনের এই প্রান্তে ক্ষমতা আমার কাছে বড় কিছু নয়। দেশবাসীর ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে আমি অতীতে কয়েকবার দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছি। প্রিয় সেই দেশবাসীর ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতেই আমরা লড়াই করছি। এই আন্দোলন কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো ব্যক্তির নয়। কোনো দলের বিরুদ্ধে কোনো দলের নয়। এ আন্দোলন আদর্শের। এ আন্দোলন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার। এ আন্দোলন গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সবার। আজকের এই আন্দোলন ক্ষমতা দখলের আন্দোলন নয়। এই আন্দোলন একটি গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ ও আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলার আন্দোলন। খালেদা জিয়া বলেন, গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে হত্যা ও সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই। কিন্তু সরকার তা বিশ্বাস করে না। আমরা লক্ষ্য করেছি, গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে চলমান আন্দোলন বানচাল করতে সরকার বিভিন্ন হিংসাত্মক পন্থার আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মনে করি যে, বিরাজমান সমস্যা সমাধানে- ক. গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে সারা দেশে যেসব নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। পুলিশি ও যৌথ বাহিনীর হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত হয়রানিমূলক সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। বিচারবহির্ভূত প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে হবে। খ. সভা-সমাবেশ-মিছিলসহ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর আরোপিত সব বিধিনিষেধ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। গ. সবার কাছে গ্রহণযোগ্য সরকারের অধীনে সবার অংশগ্রহণে অবিলম্বে অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দ্রুত সংলাপের আয়োজন করতে হবে। আমাদের বিশ্বাস, এই প্রক্রিয়াতেই আমরা সমস্যা সমাধানের পথে এগিয়ে যেতে পারব। আন্দোলনকে দ্রুত নিয়ে আসতে পারব শান্তিপূর্ণ সমঝোতার পথে। দাবি অনুযায়ী একটি নির্বাচন আয়োজন করলেই কেবল বিরাজমান সংকটের সুরাহা হবে বলে মনে করেন বিএনপির চেয়ারপারসন। তিনি বলেন, এ নিয়ে ক্ষমতাসীনরা যদি কোনো আলোচনা করতে না চায় তাহলে সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব এককভাবে তাদের ওপরেই বর্তাবে। তথাকথিত হলেও এ সংসদের অধিবেশন চলছে। একতরফাভাবে যে বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী তারা পাস করেছে, এখন তারা তা একতরফাভাবে বাতিলও করে দিতে পারে। তাতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের পথ খুলবে। এ সংশোধনীর পর বর্তমান ক্ষমতাসীনরা পদত্যাগ করে নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করলেই দেশে সংকটের অবসান ঘটবে। তিনি বলেন, সংকট নিরসনের জন্য ১৯৯৬ সালে আমরা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন করে সংবিধান সংশোধনের পর পদত্যাগ করে আমাদের অঙ্গীকার পূরণ করেছিলাম। এখন শেখ হাসিনা যদি তার অঙ্গীকার পূরণ করেন তবেই দেশে শান্তি, স্বস্তি ও সমঝোতার পরিবেশ ফিরে আসবে। শুক্রবার বিকাল ৪টায় সংবাদ সম্মেলনের সময় নির্ধারিত থাকলেও তা শুরু হয় প্রায় পৌনে ৫টায়। এরপর থেকে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা লিখিত বক্তব্য দেন। লিখিত বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি। তবে সংবাদ সম্মেলন কক্ষ ত্যাগ করার সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই জনগণের সমর্থন রয়েছে, আমরা জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছি। গতকালের আগে খালেদা জিয়া ১৯ জানুয়ারি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন । সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই মহান স্বাধীনতার মাসে মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ উৎসর্গকারী বীর শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের অপরিমেয় ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত সেই দেশ আজ গভীর সংকটে। সাংবাদিকদের সামনে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। খালেদা জিয়া দাবি করেন, ৫ জানুয়ারির কারসাজির নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখার স্বার্থে এটি একটি নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। শেখ হাসিনা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে একটা সমঝোতা হলে সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের অঙ্গীকারও করেছিলেন। কিন্তু যথারীতি তিনি তার সেই অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছেন। আসলে প্রতিশ্র“তি রক্ষার কোনো দৃষ্টান্ত তাদের নেই। তবুও তাদের প্রতিশ্র“তির কারণে ৫ জানুয়ারি পর আন্দোলনের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার কথা বিশ্বাস করে আমাদের সেই সিদ্ধান্ত নেয়া যে সঠিক ছিল না তা আমরা অচিরেই বুঝতে পারি। কারণ, আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করার পর সারা দেশে যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়। দলীয় কার্যালয়ে তালা, পিপার স্প্রে নিক্ষেপ, গাজীপুরে সমাবেশে ১৪৪ ধারা জারি, আদালতে হাজিরার সময় গাড়িবহরে হামলার চিত্র তুলে ধরে খালেদা জিয়া বলেন, বিরোধী রাজনীতি ও ভিন্নমতকে এরা দমন করে দেশে কার্যত একদলীয় ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছে। সংবাদ মাধ্যমকে ভয় দেখিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে প্রচারযন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। মানুষের সব অধিকার তারা কেড়ে নিয়েছে। এর বিরুদ্ধে লড়াই না করলে আমাদের স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে। তাই আমরা আন্দোলনের ডাক দিয়েছি। জনগণের সেই গণতান্ত্রিক আন্দোলন এখন চলছে। শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ স্বাভাবিক করতে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। বরং একের পর এক উসকানিমূলক আচরণ করে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটানো হচ্ছে। কাজেই যৌক্তিক পরিণতিতে না পৌঁছা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, আন্দোলনে দেশবাসী ও নেতাকর্মীর কষ্ট ও ক্ষয়ক্ষতির কথা আমরা জানি ও বুঝি। এ সম্পর্কে সবাই সচেতন। শুধু ক্ষমতাসীনদের কোনো বোধোদয় নেই। জনগণের দুর্দশা লাঘবের চেয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকাই তাদের কাছে বড়। সাহসিকতার সঙ্গে সবাই অংশগ্রহণ করলে এ আন্দোলন অচিরেই সফল হবে ইনশাআল্লাহ। এই সাময়িক কষ্ট জাতির বৃহত্তর স্বার্থে স্বীকার করার জন্য তিনি সবার প্রতি অনুরোধ জানান। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও সারা দেশে যারা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন তাদের সাধুবাদ জানান। যারা নিহত, আহত ও গুম হয়েছেন বেদনাহত চিত্তে তাদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সমাবেদনা জানান। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের যেসব বন্ধুরাষ্ট্র এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং গণমাধ্যম ও সিভিল সমাজের সদস্যরা উদ্বেগ প্রকাশ করে সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বলেছেন তাদের ধন্যবাদ জানান খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গণতন্ত্র ও নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক মানুষ জীবন দিয়েছেন, অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। উন্নত কিংবা অনুন্নত কোনো দেশেই গণতন্ত্র ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই এবং সংগ্রামী মানুষের আত্মত্যাগ কখনও বৃথা যায়নি। বাংলাদেশেও তা বৃথা যাবে না। খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগের আন্দোলনের অতীত ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি বরাবরই সন্ত্রাস ও সহিংসতানির্ভর। অতীতে আন্দোলনের নামে তারা যে ভয়াবহ সন্ত্রাস চালিয়েছে তা সবারই জানা। মাসের পর মাস টানা হরতাল-অবরোধ-অসহযোগ কর্মসূচির নামে তারা নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনের সময়ে যাত্রীবাহী বাসে গানপাউডার দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে ১৮ জন এবং শেরাটন হোটেলের কাছে ১১ জন যাত্রীকে তারা জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল। তাদের সন্ত্রাসের কারণে এসএসসি পরীক্ষা ৩ মাস পর্যন্ত পেছাতে হয়েছে। পবিত্র রমজান মাসেও তারা হরতাল করেছে। স্বল্পমেয়াদি ষষ্ঠ সংসদের নিয়মরক্ষার নির্বাচন বর্জন করে সেই নির্বাচন ঠেকাতে তারা ‘গণকারফিউ’ জারি করে দেশব্যাপী হত্যা ও ধ্বংসের তাণ্ডব চালিয়েছিল। লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে লাশের ওপর নৃত্য করেছে। এসব পৈশাচিক তাণ্ডবের প্রকাশ্য নির্দেশ শেখ হাসিনা নিজে দিয়েছেন এবং এসবের বহু দালিলিক প্রমাণও রয়ে গেছে। তিনি বলেন, জনগণের নির্বাচিত মেয়রকে তারা বরখাস্ত করছে। কিন্তু আমাদের সময় তাদের দলীয় মেয়র সমুদ্র বন্দর অচল ও জনতার মঞ্চ করলেও তাদের বরখাস্ত করিনি। নেতাকর্মীদের গ্রেফতার-নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, রুহুল কবির রিজভীকে দিনের পর দিন রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। সালাহ উদ্দিন আহমেদকে গ্রেফতার করে গত ৩ দিনেও সরকার স্বীকার করেনি। এখন পর্যন্ত তার কোনো হদিস নেই। নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্নার ব্যাপারেও সরকার প্রথম অস্বীকার করে। পরে নাটক সাজিয়ে ২১ ঘণ্টা পর তাকে গ্রেফতার দেখায়। অবিলম্বে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানান। অন্যথায় এর পরিণতি শুভ হবে না। তিনি বলেন, আমাকে কত হীনপন্থায় হয়রানি ও হেনস্থা করা হয়েছে এবং হচ্ছে, আমি তার বিবরণ দিতে চাই না। দেশবাসী সব জানেন এবং দেখছেন। খালেদা জিয়া বলেন, এত কিছু করেও উদ্দেশ্য হাসিল না হওয়াতে আওয়ামী লীগ অন্তর্ঘাত ও নাশকতার পথ বেছে নিয়েছে। পূর্ণ নিরাপত্তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা আইনশৃংখলা রক্ষা বাহিনীর পাহারায় কিছু যানবাহন রাস্তায় নামায়। সেসব যানবাহনে পেট্রলবোমা মেরে নারী-শিশুসহ নিরপরাধ মানুষকে দগ্ধ করে শোচনীয় মৃত্যুর পথে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। আমরা এসব পৈশাচিক বর্বরতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আসছি। হীন সন্ত্রাসে জড়িতদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তিরও দাবি করে চলেছি। কিন্তু আমাদের আহ্বানে তারা কর্ণপাত করেনি। তারা তাদের ষড়যন্ত্রের নীলনকশা বাস্তবায়নে এগিয়ে গেছে এবং নিরপরাধ মানুষের শোচনীয় মৃত্যুকে তারা তাদের ঘৃণ্য রাজনীতির উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে চলেছে। নিরপরাধ মানুষের জীবনকে যারা রাজনীতির পণ্যে পরিণত করে তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। খালেদা জিয়া বলেন, রাজনৈতিক সংকট সমাধানের কোনো সদিচ্ছা এ সরকারের নেই। তারা সংকটকে দীর্ঘায়িত করতে চায়। সেই উদ্দেশ্যেই আন্দোলন চলাকালে তারা অন্তর্ঘাত ও নাশকতা চালিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে জঙ্গি তৎপরতা বলে দেশ-বিদেশে অপপ্রচার চালাচ্ছে। জনগণের ন্যায্য দাবি অগ্রাহ্য করার উদ্দেশ্যেই তারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে জঙ্গি তৎপরতা হিসেবে অপপ্রচার করছে। এর ফল কখনো ভালো হতে পারে না। এতে প্রকৃত জঙ্গিবাদীরাই সুবিধা পাবে, যা কারোরই কাম্য নয়। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান ও উপদেষ্টা আবদুল কাইয়ুম, প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মাহবুব আলম ডিউ ও মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান। কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি আখতারুজ্জামান : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনে কার্যালয়ে প্রবেশ করতে না পেরে ফিরে যান সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন। চেয়ারপারসনের নিরাপত্তা বাহিনীর (সিএসএফ) সদস্যরা তাকে কার্যালয়ে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রায় ১৫ মিনিট অপেক্ষার পর তিনি সেখান থেকে চলে যান।
No comments:
Post a Comment