Monday, March 9, 2015

অরক্ষিত ভূমি অফিস:কালের কন্ঠ

দেশের মানুষের জমিজমা, বাড়িঘরের দলিলপত্র যে অফিসে সংরক্ষিত থাকে, সেই ভূমি অফিসগুলো একেবারেই অরক্ষিত অবস্থায় আছে যুগ যুগ ধরে। আর এ সুযোগে চলমান অবরোধ-হরতালের মধ্যে দুর্বৃত্তরা নাশকতার টার্গেটে পরিণত করেছে ভূমি অফিস। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গার ১৫টি ভূমি অফিসে নাশকতা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি তহশিল অফিস পেট্রলবোমার আগুনে পুড়ে গেছে। রাষ্ট্র ও জনগণের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরির উদ্দেশ্যেই ভূমি অফিসগুলো পু
ড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর এই নাশকতার পেছনে একটি জালিয়াতচক্রের মদদ রয়েছে বলেও অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। জানা গেছে, দেশের সাত হাজার ভূমি অফিসে একজন নিরাপত্তারক্ষীও নেই; নিরাপত্তারক্ষীর পদই নেই। এ অবস্থায় ভূমি অফিসগুলোয় থাকা জনগণ ও সরকারের মহামূল্য দলিল-দস্তাবেজ হুমকির মুখে পড়েছে। বিভিন্ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই এখন রাত জেগে অফিস পাহারা দিচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। পোড়ানো হচ্ছে শেষ সম্বল : একাধিক ভূমি কর্মকর্তা জানান, ভূমি অফিসগুলো শুধু মাঠপর্যায়ে জমিজমা ব্যবস্থাপনার জন্য খাজনাই আদায় করে না, অফিসগুলোতে ভূমি মালিকানাসংক্রান্ত সব রেকর্ড ও কাগজপত্র সংরক্ষিত থাকে। তা ছাড়া তহশিল অফিসে ভূমি মালিকদের কাছ থেকে আদায়কৃত খাজনার কোটি কোটি টাকা জমা থাকে। তাই কোনো কারণে ভূমি অফিসে সংরক্ষিত দলিল-দস্তাবেজ পুড়ে কিংবা নষ্ট হয়ে গেলে সে এলাকায় সামাজিক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। জমির মালিকানা নিয়ে শুরু হয় জালিয়াতি। ফলে আদালতে জন্ম নেয় হাজার হাজার দেওয়ানি মোকদ্দমা। মামলায় সর্বস্বান্ত হয় সাধারণ মানুষ। বাংলাদেশ ভূমি অফিসার্স কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, 'মানুষের শেষ সম্বল হলো তার ভিটাবাড়ি কিংবা কৃষিজমি। সেসবের রেকর্ড, নামজারির দলিলপত্র কিংবা খাজনার খতিয়ানসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র তহশিলে সংরক্ষিত থাকে। অথচ সারা দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে গড়ে ওঠা তহশিল অফিসগুলো সবচেয়ে অবহেলার শিকার। অফিসগুলো পাহারার জন্য নেই কোনো নিরাপত্তারক্ষী। আদায়কৃত খাজনার কোটি কোটি টাকা রাখার জন্য নেই লোহার সিন্দুকও।' ৯৩ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত তহশিলদার হারাধন দত্ত বলেন, 'ব্রিটিশ আমলে আমি বিভিন্ন তহশিল অফিসে উমেদার হিসেবে অনেক দিন কাজ করি। তখন প্রতিটি ভূমি অফিসে খাকি হাফ প্যান্ট ও শার্ট পরা সশস্ত্র পাহারাদার নিয়োজিত ছিল। টাকা-পয়সা সংরক্ষণ করার জন্য থাকত লোহার বড় সিন্দুক। পাকিস্তান আমলে চাকরি নেওয়ার পরও একই নিয়ম চালু ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর রহস্যজনক কারণে তহশিল অফিস থেকে সশস্ত্র পাহারাদার ও সিন্দুক উধাও হয়ে যায়। ফলে তহশিল অফিসে চুরি-ডাকাতি ও নাশকতা বাড়তে থাকে।' জালিয়াতচক্র সক্রিয় : সারা দেশে একটার পর একটা ভূমি অফিসে নাশকতার নেপথ্য কারণ খুঁজতে গিয়ে একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিটি ভূমি অফিসের চারপাশে একটি শক্তিশালী জালিয়াতচক্র সক্রিয় থাকে। তারা বিভিন্ন জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে একজনের জমি অন্যজনের নামে নামজারি করার মতলবে থাকে। এ কাজ সহজ করার জন্য ভূমি অফিসে সংরক্ষিত মূল রেকর্ড, খতিয়ান, দলিল-দস্তাবেজ নষ্ট করতে পারলে তাদের জালিয়াতি সহজ হয়ে যায়। তাই রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে পুঁজি করে তারা তহশিল ও এসি ল্যান্ড অফিসে নাশকতায় মদদ দিচ্ছে। একাধিক ভূমি কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতাকে পুঁজি করে জালিয়াতচক্র ভূমি অফিসে নাশকতা ঘটাচ্ছে। ইতিমধ্যে যেসব ভূমি অফিসে হামলা চালানো হয়েছে, সেগুলোর অবস্থান ভূমি বিরোধপূর্ণ এলাকায়। ঢাকার সবচেয়ে ভূমি বিরোধপূর্ণ এলাকা কেরানীগঞ্জের শুভাড্ডা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে আগুন দিয়ে মূল্যবান কাগজপত্র পোড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আরো বিরোধপূর্ণ আশুলিয়া, সাভার, গাজীপুর সদর, শ্রীপুর প্রভৃতি এলাকার ভূমি অফিসগুলোতে নাশকতার অন্তরালে জালিয়াতচক্রের কারসাজি আছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট ভূমি কর্মকর্তারা। নিরাপদে নাশকতা করা যায় : দেশের অধিকাংশ ভূমি অফিসই অরক্ষিত, ভাঙাচোরা, নড়বড়ে। দরজা-জানালা জরাজীর্ণ। টিন আর মুলিবাঁশ দিয়ে বেশির ভাগ তহশিল অফিস বানানো হয়েছে। বেশির ভাগ তহশিল জমিদারি আমলের। এর পর অফিসগুলো একবারের জন্যও মেরামত করা হয়নি। পাকা অফিস নেই বললেই চলে। যে কারণে নাশকতাকারীরা খুব সহজেই অফিসগুলোতে অগ্নিসংযোগ কিংবা পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করতে পারছে। নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় কেউ বাধাও দিতে পারছে না। ভূমি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সৃষ্টি করার জন্য দেশের ভূমি অফিসগুলোকে টার্গেট করা হয়েছে। এ ছাড়া ভূমি অফিসগুলোর সঙ্গে তৃণমূল পর্যায়ের কোটি কোটি মানুষের স্বার্থ জড়িত। তাদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির অসৎ উদ্দেশ্যেই নাশকতার জন্য ভূমি অফিসকে বেছে নেওয়া হচ্ছে। ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ভূমি অফিসে ধনীদের যেমন দলিলপত্র রয়েছে, তেমনি গরিব মানুষের দলিলপত্রও রয়েছে। যারা সেখানে বোমা মারছে কিংবা আগুন লাগাচ্ছে তাদের জমির কাগজপত্রও সেখানে সংরক্ষিত আছে। তাই পুরো ব্যাপারটাই আত্মঘাতী হচ্ছে।' অবসরপ্রাপ্ত ভূমি কর্মকর্তা আবুল কামাল বলেন, 'সাধারণ মানুষ তার নিজের জমিজমার রেকর্ডপত্র, দলিল-দস্তাবেজ ধ্বংসের জন্য কাজ করবে কেন? এগুলো স্বার্থান্বেষীদেরই কাজ।' ভূমি অফিসগুলো ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন হলেও প্রকৃতপক্ষে তা নিয়ন্ত্রণ করেন জেলা প্রশাসক। অন্যদিকে এসি ল্যান্ড পদটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রিত। তাই সেখানে কারো একক নিয়ন্ত্রণ নেই। এ কারণেও ভূমি অফিসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে নিরাপত্তারক্ষীর পদ সৃষ্টি করে নিরাপত্তা দেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না বলে সূত্র জানিয়েছে। যেসব ভূমি অফিস পোড়ানো হয়েছে : মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর একসময় হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা ছিল। সেখানে অবস্থিত ভূমি অফিসটি ব্রিটিশ আমলের। গত শনিবার গভীর রাতে সেখানে আগুন লাগিয়ে দেয় নাশকতাকারীরা। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় মূল্যবান দলিলপত্র রক্ষা পেলেও তহশিল অফিসের দরজা-জানালা পুড়ে গেছে। শ্রীনগর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অপরাধীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এর আগে টাঙ্গাইল সদরের গালা ইউনিয়ন ভূমি অফিস, ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার উস্থি ইউনিয়ন ভূমি অফিস, নারায়ণগঞ্জের বন্দর ইউনিয়ন ভূমি অফিস, নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়ন ভূমি অফিস, রাজশাহী জেলার চারঘাট উপজেলার সারদা ইউনিয়ন ভূমি অফিস, ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার রাধানগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নাশকতায় অনেক মূল্যবান কাগজপত্র, রেকর্ড-পর্চা ও দলিল-দস্তাবেজ ধ্বংস হয়ে গেছে। একইভাবে আগুন লাগানো হয়েছে বগুড়ার শেরপুর এসি ল্যান্ড, চট্টগ্রামের মিরসরাই ও বোয়ালখালী এসি ল্যান্ড, নাটোর সদর এসি ল্যান্ড, ফরিদপুর সদর এসি ল্যান্ড, লক্ষ্মীপুর সদর এসি ল্যান্ড, রাজশাহীর বাঘা এসি ল্যান্ড, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ এসি ল্যান্ড অফিসে। এতে অমূল্য অনেক দলিল-দস্তাবেজ পুড়ে গেছে। ভূমি বিরোধপূর্ণ হিসেবে পরিচিত সাভারের আমিনবাজার এসি ল্যান্ড অফিস কয়েক দিন আগে ভাঙচুর ও লুটপাট করে দুর্বৃত্তরা। গভীর রাতে অফিসের তালা ভেঙে সেখানে রক্ষিত মূল্যবান নথিপত্র তছনছ করে। ধারণা করা হচ্ছে, জালিয়াতচক্র বড় ধরনের ভূমি জালিয়াতির উদ্দেশে কোনো নথিপত্র চুরি বা গায়েব করার জন্য সেখানে ঢুকেছিল। সেখানে কোনো ফাইল কিংবা নথিপত্র গায়েব হয়েছে কি না, সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে বলে কালের কণ্ঠকে জানান এসি ল্যান্ড ফারুক আহমেদ। সাত হাজার ভূমি অফিসে একজনও নিরাপত্তারক্ষী নেই : সরকারি অনেক অফিসেই নিরাপত্তারক্ষীর পদ থাকলেও অতীব গুরুত্বপূর্ণ ভূমি অফিসগুলোতে কোনো নিরাপত্তারক্ষী নেই। এ ধরনের কোনো পদই নেই ভূমি অফিসগুলোতে। এর সত্যতা স্বীকার করে জেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, সুলতানি, আফগান, মুঘল, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের পর স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টি হলেও ভূমি প্রশাসনে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। আগে জমিদারদের কাচারিবাড়িতে ভূমি অফিস চলত। সেখানে তাদের নিজস্ব পাইক-বরকন্দাজ দিয়ে নিরাপত্তা রক্ষা করা হতো। কিন্তু পরবর্তী সময়ে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ হলে ভূমি অফিসগুলো সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় এলেও সেখানে নিরাপত্তার জন্য কোনো লোক নিয়োগ করা হয়নি। কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভূমি অফিসের গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে জেলা প্রশাসন এবং বাংলাদেশ ভূমি অফিসার্স কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে ভূমি অফিসে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ দেওয়ার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। এতে কোনো কাজ হয়নি। ঢাকা জেলা প্রশাসক বলেন, 'আমি বিভিন্ন জেলার ডিসি থাকার সময়ও ভূমি মন্ত্রণালয়ে এ ধরনের আবেদন সংবলিত চিঠি পাঠিয়েছি; কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।' কর্মীরাই অফিস পাহারা দিচ্ছেন : একটার পর একটা ভূমি অফিসে আগুন এবং পেট্রলবোমা হামলার কারণে ভূমি অফিসসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী বা পুলিশ ফোর্স না থাকায় বাধ্য হয়ে তাঁরা রাত জেগে ভূমি অফিস পাহারা দিচ্ছেন বলে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে। ভূমি বিরোধপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত কেরানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন তহসিল অফিসে এ ধরনের নিজস্ব পাহারার খবর পাওয়া গেছে। ঢাকা শহর, সাভার, গাজীপুর, রূপগঞ্জসহ দেশের আরো কিছু এলাকায় এভাবে পাহারা দিয়ে ভূমি অফিস রক্ষার চেষ্টা চলছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের এসি ল্যান্ড শহীদুল হক পাটোয়ারী কালের কণ্ঠকে বলেন, কয়েক দিন আগে শুভাঢ্যা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সন্ত্রাসীরা পেট্রল ঢেলে আগুন লাগানের চেষ্টা করে। ভাগ্যক্রমে অফিসের রক্ষিত মূল্যবান নথিপত্র রক্ষা পায়। এর পর থেকে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ও উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে সেখানে পাহারা বসানো হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীর পদ সৃষ্টি এবং নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত এভাবেই তাঁদের রাত জেগে পাহারার কাজ করতে হবে বলে তিনি জানান। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিরোধী দলের অবরোধ চলার সময় পর্যন্ত ভূমি অফিস রক্ষার জন্য তারা বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের চিন্তাভাবনা করছে। ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে, তাঁরা যেন চৌকিদার, দফাদার এবং স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে ভূমি অফিসের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব দেন। কোনো কোনো জেলায় সেভাবেই নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ের তহসিল অফিস কিংবা উপজেলা পর্যায়ের এসি ল্যান্ড অফিসে আগুন দেওয়ার অর্থ হলো তৃণমূল পর্যায়ে অবস্থানরত সাধারণ মানুষের সহায়-সম্বল ধ্বংস করে দেওয়া। এতে মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে। এ জন্য ঢাকা জেলার প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে আপৎকালীন সময়ে চৌকিদার, দফাদার ও স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে ভূমি অফিস রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে। এর সঙ্গে ভূমি কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের সহযোগিতার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ নেই : বর্তমান সময়ে ভূমি অফিসগুলো নাশকতায় আক্রান্ত হলেও এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি ভূমি অফিসে পুলিশ নিয়োগের জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত পর্যন্ত করা হয়নি। গতকাল রবিবার ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, ভূমি অফিসে আগুন দেওয়ার ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এ চিঠির কোনো কার্যকারিতা দেখা যাচ্ছে না। একাধিক জেলা প্রশাসন দপ্তর এবং পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, তারা এখনো পর্যন্ত ভূমি মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের চিঠি হাতে পায়নি। তৃণমূল পর্যায়ে ভূমি প্রশাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে ভূমি অফিসের নিরাপত্তা রক্ষা করা যাবে না। এর জন্য স্থায়ীভাবে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।      

No comments:

Post a Comment