দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এই পরোয়ানার পর তিনি আদালতে হাজির হয়ে এখনো জামিন নেননি বলে দুদকের আইনজীবী জানিয়েছেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় মির্জা আব্বাস ‘ফেরারি আসামি’। ফলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তাঁর পক্ষে মেয়র প্রার্থী হওয়া সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে ধে
াঁয়াশা তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা উত্তরে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টুর প্রার্থিতা নিয়ে দলের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে। কোনো কারণে তাঁর প্রার্থিতা বাতিল হতে পারে, এমন আশঙ্কায় তাঁর ছেলে তাবিথ আউয়ালও মনোনয়ন দাখিল করেছেন। এই দুই আলোচিত প্রার্থীসহ কয়েকজন প্রার্থীর মামলা ও আর্থিক কিছু বিষয়ে সমস্যা থাকায় বাছাইয়ের পর বৈধ প্রার্থীর তালিকা দেখে দলীয় সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এ জন্য দলটি এখনো কোনো প্রার্থীকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দেয়নি। গতকাল মির্জা আব্বাসের পক্ষে তাঁর আইনজীবী আবদুস সালাম ও এ এস এম শাহজাহান মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য যোগ্যতা-অযোগ্যতায় বলা হয়েছে, আদালত কর্তৃক ফেরারি ঘোষিত কোনো ব্যক্তি নির্বাচন করতে পারবেন না। সাংবাদিকদের প্লট দেওয়া-সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের জন্য ২৪ মার্চ শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত। কিন্তু ওই দিন মির্জা আব্বাস আদালতে হাজির হননি। তাঁর অনুপস্থিতিতে অভিযোগ গঠনের পর মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এ ব্যাপারে পুলিশকে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ২৫ মার্চ তারিখ ধার্য করেন আদালত। মির্জা আব্বাসের আইনজীবী এ এস এম শাহজাহান অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে মামলা আছে, তাতে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা নেই। তিনি প্রথম আলোকে বলেছেন, আইনগত কোনো বাধা থাকলে আইনিভাবে তা মোকাবিলা করা হবে। প্রয়োজনে তাঁরা আদালতের আশ্রয় নেবেন। দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল প্রথম আলোকে বলেছেন, মির্জা আব্বাস ফেরারি আসামি। কেননা তিনি আদালতে হাজির হননি। আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর যতক্ষণ না তিনি আদালতে গিয়ে জামিন না নিচ্ছেন বা হাজির না হচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি ‘ফেরারি আসামি’ বা পলাতক আসামি। মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে চলতি বছর হরতাল ও অবরোধে নাশকতার ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়েছে। অবশ্য এই মামলাগুলোতে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নেই। দক্ষিণে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া বিএনপির অন্য প্রার্থী আবদুস সালাম, আসাদুজ্জামান রিপন, আবুল বাশার ও নাসিরুদ্দিন পিন্টুর মামলা-সংক্রান্ত সমস্যা নেই। পিন্টু বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি হলেও রায়ের বিরুদ্ধে আপিল রয়েছে। উচ্চ আদালত আপিল গ্রহণ করায় তাঁর সাজা স্থগিত হয়ে আছে।
No comments:
Post a Comment