Wednesday, April 1, 2015

চট্টগ্রামে বিধি লংঘন করে আলীগের নির্বাচনী বৈঠক:যুগান্তর

চট্টগ্রামে বিধি লংঘন করে নির্বাচনী বৈঠকে অংশ নিয়েছেন এক মন্ত্রী ও দুই প্রতিমন্ত্রী। দুই ঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার ওই বৈঠকে কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেয়ার ওপর বিধিনিষেধ থাকার পরও তারা নির্বাচনী বৈঠকে অংশ নেন। মঙ্গলবার নগরীর একটি হোটেলে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও
দলের সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিন উপস্থিত না থাকলেও এতে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর ও ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ছাড়াও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কামাল উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক এমএ সালাম, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, চট্টগ্রাম মহানগর পিপি ফখরুদ্দিন চৌধুরী, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি আইয়ুব খান উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকটি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিনকে বিজয়ী করতে কৌশল নির্ধারণে ‘গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক বৈঠক’ বলে জানিয়েছেন উপস্থিত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি ও আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতারা। ওই বৈঠকে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে মেয়র পদে সমর্থন প্রত্যাহার করে আ জ ম নাছিরকে সমর্থন দেন ১৪ দলের নেতারা। বৈঠকে যাওয়ার সময় হোটেলের প্রবেশপথে উপস্থিত সাংবাদিকদের ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ‘আমরা আসলে দলীয়ভাবে বসছি। মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতারা সবাই বসছি। সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচনের জন্য একটা স্ট্র্যাটেজি ঠিক করতে, যাতে আমরা আরও সামনের দিকে এগিয়ে জয় আনতে পারি সেজন্য বৈঠকে বসছি।’ বৈঠকে থেকে বেরিয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ‘ঘরোয়া পরিবেশে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। সাংগঠনিক কথাবার্তা বলতে গিয়ে সেখানে নির্বাচনের প্রসঙ্গ এসেছে। আমাদের সাবেক মেয়র, তিনি চারবার নির্বাচন করেছেন। নির্বাচন নিয়ে তার অভিজ্ঞতাটা শেয়ার করেছেন। ১৪ দলের নেতাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার হয়েছে।’ বৈঠক শেষে চলে যাওয়ার সময় সাবেক এমপি ইছহাক মিয়া বলেন, ‘আমি নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা করার জন্য আসিনি। আমি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে এখানে আসিনি। দলীয় পরিচয় নিয়ে এসেছি।’ দিদারুল আলম এমপি বলেন, ‘দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার জন্য মন্ত্রী (ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন) ডেকেছেন।’ বৈঠক থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সহ-সভাপতি নূরুল ইসলাম বিএসসি ও খোরশেদ আলম সুজনের কাছে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে সংসদ সদস্য এমএ লতিফ বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার সময় হোটেলের প্রবেশপথে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিনকে প্রধানমন্ত্রী সমর্থন দিয়েছেন। তাকে জিতিয়ে আনতে দলের সবাই মিলে আমরা ?মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাব। নেতাকর্মীরা যেন সবাই একই লক্ষ্য নিয়ে তাকে সহযোগিতা করে, সেই লক্ষ্য ঠিক করতে আমরা সবাই বৈঠকে বসছি। আমরা সবাই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করব।’ বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ইসহাক মিয়া, সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সভাপতি মঈনউদ্দিন খান বাদল এমপি, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম বিএসসি, এমএ লতিফ এমপি, দিদারুল আলম এমপি, সামশুল হক চৌধুরী এমপি, মাহফুজুর রহমান মিতা এমপি ও আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, খোরশেদ আলম সুজন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল আলম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম আমিন, সাবেক এমপি হাসিনা মান্নান, চেমন আরা তৈয়ব, ববিতা বড়ুয়া, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মুজিবুল হক, মিরসরাইয়ের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী, নগর আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক জহরলাল হাজারি, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন খালেদ সেলিম, জাসদসহ সভাপতি ইন্দুনন্দন দত্ত, সাম্যবাদী দলের অমূল্য বড়ুয়া, গণআজাদী লীগের নজরুল ইসলাম আশরাফী, ন্যাপের মিটুল দাশগুপ্ত প্রমুখ। প্রসঙ্গত আ জ ম নাছির উদ্দিন আওয়ামী লীগ সমর্থিত নাগরিক কমিটি থেকে এবার মেয়র পদে লড়ছেন। তফসিল অনুযায়ী ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।  

No comments:

Post a Comment