Wednesday, April 15, 2015

বুয়েটে ক্লাস–পরীক্ষা হয়নি:প্রথম অালো

জামায়াতের নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির সমালোচনাকারী শিক্ষককে নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষক সমিতি ও ছাত্রলীগ। গতকাল সোমবার ওই শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেছে ছাত্রলীগ। আর শিক্ষককে লাঞ্ছিত করায় ‘উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রদের’ শাস্তির দাবিতে ক্লাস বর্জন ও কর্মবিরতি শুরু করেছেন শিক্ষকেরা। এতে বুয়েটে কোনো ক্লাস-পর
ীক্ষা হয়নি। গত শনিবার রাতে কামারুজ্জামানের ফাঁসির পর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে একে ‘অবিচার’ বলে মন্তব্য করেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম। পরদিন দুপুরে এ বিষয়ে কথা বলতে তাঁর কক্ষে যান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সেখানে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে ক্যাফেটেরিয়ার সামনে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাঁকে অপদস্থ ও লাঞ্ছিত করেন তাঁরা। এ বিষয়ে বুয়েট শিক্ষক সমিতি তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি সভা করে ওই মুহূর্ত থেকে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেয়। সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়, ফেসবুকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসংক্রান্ত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এই ‘ন্যক্কারজনক’ ঘটনা ঘটানো হয় বলে জানা যায়। কোনো পর্যায়েই কোনো ছাত্র একজন শিক্ষককে এভাবে অপমানিত ও পর্যুদস্ত করতে পারেন না। সিদ্ধান্তে তাৎক্ষণিক কর্মবিরতি শুরু ছাড়াও বলা হয়, তদন্তপূর্বক ১৮ এপ্রিলের মধ্যে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিলে পরদিন সাধারণ সভায় আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা ছাড়া কোনো বিকল্প থাকবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু একাডেমিক পরিবেশ তৈরি করার স্বার্থে এবং শিক্ষকদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় কর্তৃপক্ষকে ফৌজদারি মামলা করার জোর দাবি জানানো হয়। গতকাল ক্যাম্পাস ছিল প্রায় শিক্ষার্থীশূন্য। তবে অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। তবে একাধিক শিক্ষার্থী ও কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হরতাল থাকায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। হরতাল থাকলে বুয়েটে ক্লাস-পরীক্ষা এমনিতেই হয় না। আজ সরকারি ছুটি। বুধবার বোঝা যাবে আসলেই ক্লাস চলবে কি না। দুপুরে ‘হিন্দু ছাত্র সম্প্রদায়’ ও ‘সচেতন ছাত্র সমাজের’ ব্যানারে মানববন্ধন করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ব্যানারে শিক্ষকের মন্তব্যগুলো ছবি আকারে যুক্ত করে এগুলোকে ‘রাজাকারপ্রীতি’, ‘আদালত অবমাননা’ এবং ‘সাম্প্রদায়িক উসকানি’ বলে উল্লেখ করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের মুখে কালো কাপড় বাঁধা ছিল। মানববন্ধন থেকে দেওয়া একটি প্রচারপত্রে বলা হয়, বুয়েট শিক্ষকের আদালত অবমাননা এবং সাম্প্রদায়িক উসকানির পরিপ্রেক্ষিতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাঁকে উপাচার্যের কার্যালয়ে নিয়ে বিচার দাবি করেন। তখন জামায়াতপন্থী কিছু শিক্ষক বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁরা বুয়েট ১০ বছরের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। প্রচারপত্রে তাঁরা একজন শিক্ষকের এ ধরনের অবস্থানকে খুবই হতাশাজনক হিসেবে অভিহিত করে তাঁর দ্রুত অপসারণ দাবি করেন।

No comments:

Post a Comment