জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে গুলশানের নিজ কার্যালয় থেকে আজ রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে যাবেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এরপর জামিন পেলে গুলশানে নিজ বাসভবন ‘ফিরোজায়’ ফিরে যাবেন তিনি। গতকাল শনিবার বিকেলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, চেয়ারপারসন (খালেদা) কাল আদালতে যাবেন। ওনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। উনি জাম
িন চাইবেন। তিনি খালেদা জিয়ার আদালতে যাওয়ার পথে নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। আর জামিন পেলে খালেদা জিয়া নিজ বাসভবনে ফিরবেন বলে তাঁর প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান গত রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন। আদালত থেকে খালেদা জিয়া আবার গুলশানে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে, নিজ বাসভবনে, নাকি নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে যাবেন, তা নিয়ে কয়েক দিন ধরে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে নানা গুঞ্জন ছিল। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কয়েক মাস ধরে আদালতে হাজির না হওয়ায় বিচারক গত ২৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এই মামলায় আজ শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। গতকাল সকালে বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, আদালত থেকে খালেদা জিয়া হয় গুলশানের কার্যালয়ে, নয়তো নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেতে চান। তিনি দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে নেতা-কর্মীদের উঠিয়ে দিয়ে তাঁদের মনোবল চাঙা করতে চান। অবশ্য গত রাতেই কার্যালয়ের তালা কেটে তিন মাস পর নেতা-কর্মীরা সেখানে প্রবেশ করেছেন। এ অবস্থায় তিনি কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘুরে বাসায় যাবেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো বাধার সৃষ্টি না করলে পরিস্থিতি বুঝে তারপর গুলশানের বাসভবনে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে খালেদা জিয়ার। তবে বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা খালেদা জিয়া আদালতে যাওয়ার পর তাঁর ফিরতি গন্তব্য নিয়ে নানা আশঙ্কায় আছেন বলে জানা গেছে। দলের নেতাদের কারও কারও মতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খালেদা জিয়াকে আদালত থেকে নয়াপল্টনে বা গুলশানের কার্যালয়ে ফিরতে না-ও দিতে পারে। স্বেচ্ছায় গুলশানের বাসায় না গেলে তাঁকে জোর করে সেখানে পৌঁছে দেওয়া হতে পারে। তাঁরা মনে করেন, এটি করা হলে চলমান আন্দোলন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নেতা-কর্মীদের মনোবল আরও ভেঙে যাবে। এর প্রভাব তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও পড়তে পারে। এ ছাড়া খালেদা জিয়াকে বাসায় তুলে দেওয়া হলে গুলশান কার্যালয়ে অবস্থানরত বিএনপির নেতা ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের কী হবে? তা নিয়েও বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা চিন্তিত। কারণ, এসব নেতা ও কর্মকর্তার নামে মামলা রয়েছে। খালেদা জিয়া কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পর তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় কি না, তা নিয়েও নেতারা শঙ্কায় আছেন বলে দলীয় সূত্রগুলো জানায়। গত ৩ জানুয়ারি রাত থেকে খালেদা জিয়া গুলশানে নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে আছেন। ৫ জানুয়ারির ‘একতরফা’ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিনে রাজধানী ঢাকায় সমাবেশ কর্মসূচিকে ঘিরে ওই রাত থেকে তাঁকে কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে তালা মেরে দেওয়া হয়। এরপর ১৯ জানুয়ারি থেকে অবরোধমুক্ত করা হলেও তিনি আর কার্যালয় থেকে বের হননি।
No comments:
Post a Comment