Saturday, May 23, 2015

বাগদাদের পথে আইএস?:প্রথম অালো

ইরাকের রামাদি ও সিরিয়ার পালমিরা শহরের পর গতকাল শুক্রবার দেশ দুটির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত-ক্রসিং দখল করে নিয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। ইরাকের বৃহত্তম প্রদেশ আনবারের রাজধানী রামাদি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর। এটি রাজধানী বাগদাদ থেকে মাত্র ১১০ কিলোমিটার দূরে। আইএস যোদ্ধারা বাগদাদের দিকে ধাবিত হয়েছে বলে গতকাল বিভিন্ন খবরে বলা হয়েছে। খবর এএফপি, বিবিসি ও রয়টার্সের। বাগদাদ ও সির
িয়ার রাজধানী দামেস্ককে সংযুক্তকারী মহাসড়কে অবস্থিত আল-তানফ ক্রসিং দখলের মধ্য দিয়ে আইএস জঙ্গিরা তাদের নিয়ন্ত্রণ আরেকটু বাড়াল। সিরিয়ার অর্ধেকের বেশি এলাকা এরই মধ্যে করায়ত্ত করে ফেলেছে তারা। আল-তানফই ইরাকের সঙ্গে সর্বশেষ সীমান্ত-ক্রসিং, যেটি দামেস্ক সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল। বর্তমানে উত্তরে কুর্দি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা ক্ষুদ্র একটি এলাকা ছাড়া ইরাক-সিরিয়া সীমান্তের সবই আইএসের নিয়ন্ত্রণে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকারবিষয়ক সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, আইএস জঙ্গিরা অগ্রসর হওয়ায় সিরীয় বাহিনী আল-তানফ এলাকা থেকে সরে গেছে। বর্তমানে সিরিয়ার দেইর আল-জুর ও রাকা প্রদেশের পুরোটার পাশাপাশি হোমস, হাসাকা, আলেপ্পো ও হামা প্রদেশের বড় অংশই আইএসের নিয়ন্ত্রণে। আল-তানফ এলাকাটি পড়েছে হোমস প্রদেশে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, আল-তানফ দখলের মধ্য দিয়ে জঙ্গিরা পূর্ব ও মধ্য সিরিয়ার সঙ্গে ইরাকের আনবার প্রদেশে তাদের দখলে থাকা এলাকাগুলোর মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ গড়ে তুলতে সক্ষম হলো। আইএস জঙ্গিরা এখন আনবারের পূর্বদিকে অবস্থিত হাবানিয়া শহরের দিকে এগোচ্ছে। আইএসের হাত থেকে রামাদি পুনরুদ্ধারে এই শহরেই ঘাঁটি গেড়েছে ইরাকি বাহিনী ও তাদের মিত্ররা। ইউফ্রেটিস নদীর অববাহিকায় অবস্থিত হাবানিয়া দখল করতে পারলে আইএস কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ফালুজার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ গড়ে তুলতে পারবে। সেই সঙ্গে রাজধানী বাগদাদের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইরাকি উপপ্রধানমন্ত্রী সালেহ আল-মুতলাক সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই এখন আর ‘স্থানীয় বিষয়’ নয়। লড়াইয়ে অবিলম্বে ভূমিকা রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আইএসবিরোধী আন্তর্জাতিক জোট গত আট মাস ধরে ইরাক ও সিরিয়ায় বিমান হামলা চালিয়ে এলেও কার্যত তা অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এখন বলছে, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই একটি ‘কঠিন চ্যালেঞ্জ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও স্বীকার করেছেন, আইএসের সাম্প্রতিক সাফল্যগুলো আন্তর্জাতিক জোটের জন্য একটা ‘বিপত্তি’। তবে তিনি দাবি করছেন, যুক্তরাষ্ট্র আইএসবিরোধী লড়াইয়ে ‘হারছে না’। দি আটলান্টিক সাময়িকীতে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ওবামা বলেন, ‘এতে কোনো সন্দেহ নেই যে এটা একটা কৌশলগত বিপত্তি। যদিও দীর্ঘদিন ধরেই রামাদি ঝুঁকির মধ্যে ছিল।’ ওলাঁদের আহ্বান: সিরিয়ায় শান্তিচুক্তি প্রশ্নে নতুন করে আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ। তিনি বলেছেন, জঙ্গিদের হাতে পালমিরার পতন দেখিয়ে দিয়েছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দুর্বল হয়ে পড়েছেন। আল-সিস্তানির আহ্বান: ইরাকের সব এলাকাকে আইএসমুক্ত করতে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ শিয়া নেতা গ্র্যান্ড আয়াতুল্লাহ আলী আল-সিস্তানি। রামাদি শহর আইএসের দখলে যাওয়ার পর এই প্রথম তাঁর মন্তব্য এল।  

No comments:

Post a Comment