Friday, August 22, 2014

মান্নান মাহবুব ও বদির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা:নয়াদিগন্ত

সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান, তালুকদার মাহবুবুর রহমান ও বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছে। জ্ঞাত আয়বহির্র্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এই সাবেক মন্ত্রী দু’জন ও এমপির বিরুদ্ধে গতকাল রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর আগে দুপুরে কমিশনের বৈঠকে তাদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেয়া হয়। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানান, জ্ঞাত আয়বহি
র্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খানের বিরুদ্ধে উপপরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী তালুকদার মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে উপপরিচালক মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান ও কক্সবাজারের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে উপপরিচালক মোহাম্মদ খায়রুল হুদা রমনা থানায় পৃথক তিনটি মামলা করেছেন। অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধির অভিযোগে দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচনী হলফনামাকে ভিত্তি করে গত ২২ জানুয়ারি গত সরকারের সাত মন্ত্রী-এমপির সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরুর প্রায় আটমাস পর তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হলো। দুদকের তদন্তভুক্ত বাকি চারজন হলেনÑ সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, ঢাকার সংসদ সদস্য আসলামুল হক, রাজশাহীর সংসদ সদস্য এনামুল হক ও সাতীরার সংসদ সদস্য এম এ জব্বার। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার আগে প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত হলফনামায় তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব বিবরণী উল্লেখ করেন। অনেকেই গত নির্বাচনে দাখিলকৃত হলফনামার চেয়ে এবারের হলফনামায় বেশি সম্পদ অর্জনের তথ্য উল্লেখ করেছেন। মতার অপব্যবহার করে এসব সম্পদ অর্জন করা হয়েছে এমন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসব সংবাদের ভিত্তিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সম্পদ অর্জনের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে ও বিপুল সম্পদ অর্জনকারী অর্ধশতাধিক প্রার্থীর একটি তালিকা করে দুদক। গত ২২ জানুয়ারি কমিশনের এক বৈঠকে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খান, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান, ঢাকার সংসদ সদস্য আসলামুল হক, কক্সবাজারের সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি, রাজশাহীর সংসদ সদস্য এনামুল হক, এম এ জব্বারের সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।  সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খান ২০০৮ সালে হলফনামায় উল্লেখ করেছিলেন, তার আয় ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা; নির্ভরশীলদের কোনো আয় নেই। কিন্তু পাঁচ বছর পর তিনি ও নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় সাড়ে তিন কোটি টাকা দেখিয়েছেন। পাঁচ বছর আগে তাঁর সম্পদের মূল্য প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকা ছিল। এখন তা দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা। সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমানের গত পাঁচ বছরে ব্যাংকে জমা টাকা বেড়েছে ৫৮৬ দশমিক ৭৫ গুণ, জমি বেড়েছে ২০ একর থেকে দুই হাজার ৮৬৫ একর অর্থাৎ ১৪৩ দশমিক ২৫ গুণ, বার্ষিক আয় বেড়েছে ৭৯ দশমিক ২৩ গুণ। আর তার স্ত্রীর নামে স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ বেড়েছে ৩ দশমিক ২২ গুণ। সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি ২০০৮ সালের নির্বাচনী ব্যয়ের জন্য স্ত্রী-ভাইবোন ও নিজের কর্মচারীর কাছ থেকে আট লাখ টাকা ধার করেন। কিন্তু পরের পাঁচ বছরে তার আয় বেড়েছে ৩৫১ গুণ। তার বার্ষিক আয় এখন ৭ কোটি ৩৯ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৮ টাকা। ব্যয় দুই কোটি ৮১ লাখ ২৯ হাজার ৯২৮ টাকা।  এসব বিষয় অনুসন্ধান করতে দুদকের পক্ষ থেকে তাদের কাছে সম্পদের বিবরণ চাওয়া হয়। তারা সম্পদের বিবরণ দাখিল করলেও দুদকের অনুসন্ধানে অসঙ্গতি ধরা পড়ে।

No comments:

Post a Comment